সাতক্ষীরায় যৌতুকের দাবিতে গৃহবধকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এলাকাবাসি সুত্রে প্রকাশ ৩০ এপ্রিল বৃহষ্পতিবার রাত ১০টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপাজেলার ভোমরা দাসপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা নিহতের স্বামীকে আটক করেছে।
মৃত্যু গৃহবধুর নাম মেহেনাজ পারভিন (১৯)। সে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ভোমরা দাসপাড়া গ্রামের রিপন হোসেনের স্ত্রী ও দেবহাটা উপজেলার দক্ষিণ পারুলিয়া গ্রামের মুকুল হোসেনের মেয়ে।
সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার দক্ষিণ পারুলিয়া গ্রামের সুমন হোসেন জানান, তিন মাস আগে তার বোন মেহেনাজের সঙ্গে সাতক্ষীরা সদরের ভোমরা ইউনিয়নের দাসপাড়া গ্রামের শ্রমিক রিপনের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় নগদ টাকা ও সোনার গহনা সহ এক লাখ টাকার যৌতুক দেওয়া হয়। রিপন তার বাবা মায়ের সঙ্গে আগে লক্ষীদাঁড়ি গ্রামে থাকতো। সম্প্রতি তারা ভোমরা দাসপাড়ায় ঘরসহ জমি কিনে বসবাস করে আসছে। একই পরিবারে বসবাস করে আসছিলো রিপনের বোন রুপা ও তার স্বামী হযরত আলী। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে মেহেনাজকে নির্যাতন করতো স্বামী রিপন, তার বোন রুপা বেগম, বোনের স্বামী হযরত আলি, শ্বশুর রবিউল ইসলাম ও শ্বাশুড়ি খাদিজা বেগম।
রুপ
মেহেনাজ এর ভাই আরো জানায় বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যায় মাকে রিপন ফোন করে জানায় যে মেয়েকে নিয়ে না গেলে তাকে মেরে ফেলা হবে। রাত ৯টার দিকে বোনকে অবারো নির্যাতনের একপর্যায়ে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। এ সময় বোনের শ্বশুর মোবাইল ফোনে ছোট মাকে খবর দিয়ে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে যেতে বলে। রাত ১০টার দিকে তারা সদর হাসপাতালে যাওয়ার আগেই বোন মারা গেছে মর্মে খবর পান। ১১টার দিকে বোনের লাশ লক্ষীদাড়িতে এনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে বলে প্রচার দিয়ে লাশ মাটি দেওয়ার চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন এসে রিপন ও তার পরিবারের সদস্যদের আটক করে রাখে।
রিপনের চাচা বাবলুর সহযোগিতায় ঘরের জানালা ভেঙে রিপনের পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে যায়।
মৃতের নাক, কান ও মুখ দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ার চিহ্ন পাওয়া গেছে।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে ঘাতক স্বামী রিপন ভোমরা বন্দরে খুচরো পেঁয়াজ বিক্রি করতো। করোনার প্রভাবে, অভাবের তাড়নায় স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে প্রায় ঝগড়া লেগেই থাকতো। এ কারণে মেহেনাজকে মারপিট করা হতো। বৃহষ্পতিবার মেহেনাজকে নির্যাতনের একপর্যায়ে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে তারা জেনেছেন।
তবে আটককৃত রিপন হোসেনের কাছে জানতে চাইলে সে সাংবাদিকদের জানায়, তার স্ত্রীর শ্বাসকষ্ট হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় মারা গেছে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে তদন্ত পর্যবেক্ষণে ছিলেন এবং তাদের স্বামীকে আটক করেছে।
Leave a Reply