ভারত থেকে পালিয়ে এসে টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আশ্রয় নেওয়া ৪ জনের রোহিঙ্গা পরিবারকে ক্যাম্প ইনচার্জের মাধ্যমে হোম কোয়ারেন্টাইনে নিয়েছে আর্ন্তজাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)।
২৩ মার্চ বিকাল ৩টার দিকে টেকনাফের লেদা এলএমএস ২৪নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ‘এ’ বøকের ১৫৬নং কক্ষের বাসিন্দা মোস্তাক আহমদের পুত্র ভারত থেকে পালিয়ে আসা মোঃ সাদেক (২৫), সাদেকের স্ত্রী হোসনে আরা (২৩), ৩ বছরের শিশু পারভেজ ও ১০ মাসের সাজেদাকে আইওএমর প্রোটেকশন টিম উদ্ধার করে কুতুপালং তাদের নিজস্ব হোম কোয়ারেন্টাইনে নিয়ে যায়।
এরা রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে কৌশলে বের হয়ে পালিয়ে ভারতে চলে গিয়েছিল। সেখানে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় আবার সেখান থেকে পালিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে খুলনা হয়ে সড়ক পথে টেকনাফে ফিরে আসে।
লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চেয়ারম্যান মোঃ আলম জানান, গত ২২ মার্চ রাত ৮টার দিকে ভারত থেকে পালিয়ে আসা মোঃ সাদেক (২৫), সাদেকের স্ত্রী হোসনে আরা (২৩), ৩ বছরের শিশু পারভেজ ও ১০ মাসের সাজেদা গোপনে এসে লেদা রোহিঙ্গা বস্তিতে বাপের বাড়িতে আশ্রয় নেন। ২৩ মার্চ সকালে বিষয়টি রোহিঙ্গা নেতৃবৃন্দের কানে এলে ক্যাম্প প্রশাসন, আইন-শৃংখলা বাহিনী ও আইওএম কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়।
বিষয়টি জানাজানি হলে দুপুর ১২ টার দিকে পার্শ্ববর্তী রোহিঙ্গারা ক্যাম্প ইনচার্জ আব্দুল হান্নানকে অবগত করলে তাদের কে হেফাজতে নিয়ে আসা হয়। তারা যৌথভাবে ভারত ফেরত এই রোহিঙ্গা পরিবারকে দ্রুত হোম কোয়ারেন্টাইনে প্রেরণ করেন। ক্যাম্প ইনচার্জ (সিআইসি) আব্দুল হান্নান সংবাদের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘৪ সদস্যের এক রোহিঙ্গা পরিবারকে ইউএনএইচসিআর এর মাধ্যমে বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প (নং-৭) আইওএম হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইনের জন্য প্রেরন করা হয়েছে’।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সাইফ বলেন, ‘রোহিঙ্গা পরিবারের উক্ত ৪ সদস্যকে আইএমও হাসপাতালের মাধ্যমে হোম কোয়ারেন্টাইনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গাদের অবৈধ যাতায়ত টেকনাফকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। বিদেশ ফেরতদের কোয়ারান্টাইন নিশ্চিত করতে গিয়ে অনেককে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। ধারণা করা হচ্ছে এরা রোহিঙ্গা। তাই উদ্বেগ বাড়ছে এখানে। বৃহস্পতিবার ১৯ মার্চ আইন-শৃংখলা বাহিনীর একটি দলসহ বাহারছড়া ইউনিয়নের মারিশবনিয়ার সৌদি ফেরত মৌলভী মোহাম্মদ শফির পুত্র সালামত উল্লাহর বাড়ি গমন করে হোম কোয়ারান্টাইন না মানায় ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
১৮৬০ সালের ফৌজদারী দন্ডবিধির ২৭০ ধারায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে এ দন্ডাদেশ প্রদান ও দুবাই ফেরত বাহারছড়া মাথাভাঙ্গার কবির আহমদের পুত্র আবু তাহের ও সুলতান আহমদের পুত্র আব্দুল হামিদকে সতর্ক করা হয়েছে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ হতে বাঁচতে বিদেশ ফেরতদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকার প্রশাসনিক নির্দেশ থাকলেও অনেকে নির্দেশনাকে অমান্য করে তথ্য গোপন করে বাড়ী ঘরে থাকার চেষ্টা করছে। তবে প্রশাসন সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। বিদেশ ফেরত কোন ব্যক্তি কোয়ারান্টাইনে না থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা রয়েছে।
Leave a Reply