বেনাপোল স্থলবন্দরে রকিব উদ্দীন নকি মোল্লা নামে এক শ্রমিক সর্দারের বিরুদ্ধে সাধারণ শ্রমিকদের এক কোটিরও বেশি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। বন্দর শ্রমিক নেতারা বলছেন, আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরত দিতে ২৫ দিন সময় নিয়েছে অভিযুক্ত শ্রমিক সর্দার। যদি সময় মত টাকা পরিশোধ না করে তাহলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে অভিযুক্ত শ্রমিক সর্দার নকি মোল্লা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন এটা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। ভুক্তভোগী বন্দর শ্রমিকরা জানায়, ভারত থেকে যে পণ্য আমদানি হয় তা বন্দর থেকে খালাসের কাজ করে থাকে শ্রমিকরা। বর্তমান বন্দরে পণ্য খালাসে কাজ করছে প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক। এসব শ্রমিকদের নিয়ে দুটি ইউনিয়ন গঠন হয়েছে। এর একটি সংগঠন ৯২৫, যার সভাপতি রাজু আহম্মেদ এবং সেক্রেটারি উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ওহিদুজ্জামান। অপরটি ৮৯১ এর সভাপতি কলি মোল্লা আর সেক্রেটারি জাহাঙ্গীর আলম জানে। শ্রমিকদের অভিযোগ, ৮৯১ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কলি মোল্লার ছোট ভাই বেনাপোল পৌরসভার বড়আচড়া ওয়ার্ড আ. লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রমিক সর্দার নকি মোল্লা। সাধারণ শ্রমিকদের পণ্য খালাসের পারিশ্রমিকের একটি অংশ সঞ্চয়ী হিসাবে জমা থাকতো নকি মোল্লার কাছে। হিসাবে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় এক কোটি ৩২ লাখ টাকার মত। মাঝে শ্রমিকরা কয়েক বার এ টাকা চাইলে বিভিন্ন অজুহাতে এতদিন ঘোরাচ্ছিল। বর্তমানে করোনার কারণে কাজ হারিয়ে সাধারণ শ্রমিকরা বেকার হয়ে অর্থ সংকটে পড়ে। এ সময় তারা পাওনা টাকা নিতে ইউনিয়নে বিচার দেয়। কিন্তু নকি মোল্লা আবারো টালবাহানা করলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে ইউনিয়নে শালিসের মাধ্যমে ২৫ দিনের মধ্যে টাকা পরিশোধ করবে সময় চেয়ে নেয় নকি মোল্লা। বেনাপোল স্থল বন্দরের ৮৯১ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কলি মোল্লা ঘটনার সত্যতা শিকার করে বুধবার (০৬মে ) বিকেলে জানান, শ্রমিক সর্দার নকির কাছে প্রায় বছর তিনেক ধরে সাধারণ শ্রমিকদের পাওনা হয়েছে ১ কোটিরও বেশি টাকা। এসব টাকা শ্রমিকরা তার কাছে সঞ্চয় রেখেছিল। নিজেদের মধ্যে শালিস হয়েছে। ২৫ দিনের মধ্যে পাওনা টাকা পরিশোধ করবে সময় চেয়ে নিয়েছে। আশা করছি তিনি সময় মত পরিশোধ করবেন। অভিযুক্ত শ্রমিক সর্দার নকি মোল্লা মুঠো ফোনে জানান, শ্রমিকদের কোন টাকা তিনি আত্মসাৎ করেনি। বন্দর থেকে তাকে সরানোর জন্য একটি পক্ষের ষড়যন্ত্র। তাকে দিয়ে জোর করে টাকা পরিশোধ করবে এই মর্মে একটি কাগজে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি। এদিকে সাধারণ শ্রমিকরা জানান, প্রভাবশালী শ্রমিক নেতাদের মাধ্যমে তারা সব সময় শোষণ ও বঞ্চনের শিকার হয়ে আসছে। প্রতিবাদ করলে কাজ হারাতে হয়। শ্রমিক নেতাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হলেও যাদের রক্তে ঘাম ঝরিয়ে অর্থ আয় তাদের কোন পরিবর্তন হয় না। সব সময় দুঃখ দুর্দশার মধ্যে তাদের দিন পার করতে হয়।
তাদের দাবি, এর আগেও প্রায় দুই কোটির মত টাকা আত্মসাৎ করে আর এক শ্রমিক নেতা। এ নিয়ে মামলা ও আইন আদালত হলেও প্রমাণের অভাবে অর্থ ফেরত পায়নি শ্রমিকেরা।
Leave a Reply