মহাকবি মাইকেল মধুসুদন স্মৃতি বিজড়িত ত্রিমোহিনী বাজার সংলগ্ন কপোতাক্ষ নদের উপর দিয়ে দেড় যুগ আগের তৈরি প্রায় ৩০০ ফুট লম্বা বাঁশের সাঁকোটি কেশবপুরসহ ৫ উপজেলাবাসীর কাছে এখন মরণফাঁদে পরিনত হয়েছে।
জরাজীর্ণ এই সাঁকোটি যে কোন সময় ভেঙ্গে প্রাণহানীর ঘটনা ঘটতে পারে বলে এলঅকাবাসীর আশংকা। লেখাপড়া, ব্যবসায়ী, চাকুরীসহ যে কোন প্রয়োজনীয় কাজের জন্য কেশবপুর, কলারোয়া, মনিরামপুর, তালা, পাটকেলঘাটা উপজেলার বিভিন্ন পেশা-শ্রেণীর মুনুষ ত্রিমোহিনী বাজার সংলগ্ন কপোতাক্ষ নদ পারাপার হতে হয়। এক সময় নৌকা করে পথচারীদের এই নদী পারাপর করতে হত। নদী পারাপারে জনসাধারণের সীমাহীন দূর্ভোগের কথা চিন্তা করে ২০০১ সালে স্থানীয় লেয়াকত আলী জমিদারের উদ্দ্যোগে মৃত আমির সরদারসহ ২০-২৫ জন মিলে পথচারীদের দুর্ভোগ লাঘবে ঐ নদের উপর প্রায় ৪ লক্ষ টাকা ব্যয় করে প্রায় ৩০০ ফুট লম্বা একটি সাঁকো নির্মাণ করেন। নির্মিত সাঁকোটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন বিএনপি মনোনিত এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিব। এ সময় তিনি সাঁকোর জন্য ৫০ হাজার টাকা অনুদান দেন এবং নদের উপর জনস্বার্থে একটি ব্রীজ নির্মাণ করার প্রতিশ্রুতি দেন।
এরপর দীর্ঘ ১৮ বছরে সরকারের পালাবদল হলে ও কপোতাক্ষ নদের দু-পাড়ের মানুষের কাছে ব্রীজের স্বপ্ন এখন স্বপ্নই রয়ে গেছে। তাই বেঁচে থাকার তাগিদে প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে পারাপার করতে হয় সাধারণ মানুষদের। স্বাধীনতার ৪৯ বছর পার হলেও কপোতাক্ষ নদের উপর সেতু নির্মাণের জন্য কোন জনপ্রতিনিধি উদ্যোগ না নেওয়ায় জনসাধারণের মাঝে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ। গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুটি নির্মিত হলে কেশবপুর, তালা, কলারোয়া উপজেলার লোকজনের জীবনযাত্রার মান পাল্টে যাবে। ঝুকিপূর্ণ এই সাাঁকোর উপর দিয়ে ওপারের স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও সাধারণ মুনুষকে কেশবপুরের বিভিন্ন শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র, ব্যাংকসহ অসংখ্য বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে আসতে হয়। সরোজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কপোতাক্ষ নদের উপর সেতু না থাকায় মানুষ তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য নিয়ে বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে কারোর কাঁদে বেগুনের খাচি, কারোর মাথায় সবজি, কারোর কাদে ধান, পাট নিয়ে ঝুকিপূর্ন অবস্থার মধ্য দিয়ে পারাপার হচ্ছে। কপোতাক্ষ পাড়ের ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম রবি, আর এস দিবাশিষ, আবু জাফর, আবু বক্কর, আব্দুল হান্নান, শরিফুল ইসলাম রাজ্জাক মাষ্টার, জবান আলীসহ উপস্থিত আরো অনেকে তাদের প্রতিদিনের কষ্টের কথা জানান এবং তারা বলেন সেতু না থাকায় যানবাহনের অভাবে কাদে ও মাথায় করে সবজি, ধান, পাট নিয়ে ত্রিমোহিনী ও কেশবপুর বাজারে যেতে বাধ্য হন। তাছাড়া বর্ষা মৗসুমে ১-২ কিলোমিটার কাচা রাস্তা অতিক্রম করে বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে ঝুকি নিয়ে পার হতে হয়। দেয়াড়া গ্রামের স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবর আলী সরদার মন্টুসহ কপোতাক্ষ নদের দু-পাড়ের ভুক্তভোগী মানুষের একটাই দাবি, যদি কপোতাক্ষের উপর দিয়ে সেতু নির্মাণ হলে কেশবপুর, তালা, কলারোয়ার বিভিন্ন পেশার মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হবে স্থানীয়রা জানান, জনস্বার্থে প্রতিবছর ব্যক্তিগত তহবিল থেকে এই বাঁশের সাঁকোটি সংস্কার করা হয়ে থাকে।
মধুকবির স্বপ্নের কপোতাক্ষ নদের উপর একটি সেতু নির্মিত হলে পাঁচটি উপজেলার মানুষের জীবনযাত্রার মান পাল্টে যাবে। তারা দ্রুত কপোতক্ষর নদের উপর একটি সেতু নির্মাণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষণ করেছেন। এমনকি ব্রিজটি তৈরি করার জন্য তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অনেক দপ্তরে আবেদনও করেছেন করেছেন বলে জানিয়েছেন।
Leave a Reply