বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৪৭ পূর্বাহ্ন

ঢাকা থেকে পায়ে হেঁটে গোবিন্দগঞ্জে পৌঁছে কৃতিত্ব দেখালো গোবিন্দগঞ্জের কৃতি সন্তান নিত্যরঞ্জন বর্মন।

স্টাফ রিপোটারঃ
  • আপডেট টাইম রবিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০

“যত হাঁটবেন, তত তরুণ”- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবং দেশের মানুষকে পায়ে হাঁটার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কৃতিসন্তান নিত্যরঞ্জন বর্মন রাজধানী ঢাকা থেকে পায়ে হেটে ২৫০ কিলোমিটার পথ পাড়িয়ে দিয়ে শনিবার গোবিন্দগঞ্জে এসে পৌঁছেন। তিনি বিকেল ৪টায় গোবিন্দগঞ্জে এসে পৌঁছিলে তাঁকে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। গোবিন্দগঞ্জের রাখালবুরুজ সমিতি, এপেক্স ক্লাব ও বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ নিত্যরঞ্জন বর্মন এবং তাঁর সহযোগী সুজন কুমার বর্মনের হাতে ফুলের তোড়া উপহার দিয়ে স্বাগত জানান।

গাইবান্ধা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আহাদুজ্জান সরকার মাজুল এর সঞ্চালনায় গোবিন্দগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মিলনায়তনে এ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবর্ধনা সভায় বক্তব্য রাখেন, গোবিন্দগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তণ শিক্ষক কাজী গোলাম কাদের, নকুল কুমার রায়, বর্তমান শিক্ষক মোকাররম হোসেন রানা,গোবিন্দগঞ্জ সরকারি কলেজের শিক্ষক দীপক কর, রাখালবুরুজ ইউনিয়ন সমিতির সভাপতি আব্দুল গণি সরকার, পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ ও ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এসএসসি ৮৮ ব্যাচের প্রতিনিধি রিমন কুমার তালুকদার,এপেক্স ক্লাবের সাবেক সভাপতি শাহারুল ইসলাম,উপজেলা খেলোয়ার কল্যান সমিতির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান আঙ্গুরসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

৯ ডিসেম্বর বুধবার ভোর ৫টায় তিনি ধানমণ্ডির জিগাতলা থেকে যাত্রা শুরু করেছেন। চার দিনে তিনি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে পৌঁছবেন বলে যাত্রা শুরু করেন। যাত্রার উদ্দেশ্য জানাতে গিয়ে নিত্য রঞ্জন বর্মণ বলেন, ‘আমরা সামাজিক, অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের কথা বলছি, নিজেদের স্বাস্থ্যের কতটুকু উন্নয়ন হয়েছে তা কিন্তু আমরা বলতে পারছি না। আমরা স্বাস্থ্যগত কোনো সমস্যা হলেই হাসপাতালের সামনে লাইন দিচ্ছি, কিন্তু শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে আমরা নজর দিচ্ছি না।

আগামী প্রজন্মকে স্বাস্থ্য সচেতন করতেই আমার এই যাত্রা। বিশ্বের অন্যান্য দেশের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘জাপানে সাধারণ মানুষের জন্য প্রতিবছর ২৭৫ থেকে ৩২০টি নানা ধরনের ম্যারাথনের আয়োজন করা হয়। এই আয়োজনগুলো সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা নিয়ে আসে। কিন্তু আমরা আগামী প্রজন্মের জন্য কী করছি, তা এখনই ভাবতে হবে। শুধু ডায়াবেটিস হলেই দু-এক কিলোমিটার হাঁটা নয়, সুস্থ শরীর ও মনের জন্য সবার ক্ষেত্রেই হাঁটার কোনো বিকল্প নেই। জানা যায়, নিত্য রঞ্জন বর্মণ প্রথম দিনে ৯০ কিলোমিটার হেঁটে টাঙ্গাইলে পৌঁছেন।

এরপর দ্বিতীয় দিন ৫০ কিলোমিটার, তৃতীয় দিন ৪৫ কিলোমিটার হেঁটে বগুড়া এবং চতুর্থ দিন ৫০ কিলোমিটার হেঁটে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে পৌঁছবেন। সঙ্গে তাঁর একজন সহকারীও ২৫০ কিলোমিটার পথ হাঁটবেন পরিকল্পনা করে একজন সহকারী কে সঙ্গে নিয়ে পথে যাত্রা শুরু করেন। ৪৮ বছর বয়সী নিত্য রঞ্জন বর্মণ পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তিনি ছাত্রজীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সুইমিং ওয়াটার পোলো টিমের ক্যাপ্টেন ছিলেন। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ম্যারাথনে তিনি ৪২.১৯৫ কিলোমিটার ফিনিশার। তিনি সর্বোচ্চ ৬৫ কিলোমিটার ম্যারাথন শেষ করেছেন। যদিও ২০০৭ সালে তিনি গোবিন্দগঞ্জ থেকে ঢাকা পর্যন্ত ২৫০ কিলোমিটার পথ হেঁটে এসেছিলেন। নিত্য রঞ্জন বর্মণ একজন ইয়োগা থেরাপিস্ট। তিনি জানান, ১৯৯৬ সালে তাঁর সিরিয়াস ব্যাক পেইন ছিল। তিনি বাঁ পায়ে জোর পেতেন না। তখন থেকেই তিনি ইয়োগা ও ম্যারাথন শুরু করেন। এর পর থেকে তিনি সুস্থ জীবন যাপন করছেন। আগামী প্রজন্মের মধ্যেও নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © Matrijagat TV
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
matv2425802581