রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ১২:২৮ অপরাহ্ন

১১ পারার হাফেজ, ছোট্ট আব্দুল্লাহকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন ? মাতৃজগত টিভি

মোহাম্মদ ইয়াকিন
  • আপডেট টাইম সোমবার, ৬ জানুয়ারী, ২০২০
হাসান মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ। বয়স দশ। ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা থানার জামিয়া আরাবিয়া মিফতাহুল উলুম (কেন্দ্রীয় পৌর গোরস্তান মাদরাসা) এর হিফজ বিভাগের ছাত্র। ১১ পারা হেফজ করেছে আব্দুল্লাহ। বাবার নাম মুস্তাফিজুর রহমান। জামিয়া আরাবিয়া মিফতাহুল উলুম মাদরাসার শিক্ষাসচিব। শিশু হাফেজ আব্দুল্লাহ বর্তমানে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে প্রভূর নামে জিকির করছে।

হাসান মুহাম্মদ আব্দুল্লাহর বাবা আমাদের জানিয়েছেন, বাসার ছাদের উপরে ১১ হাজার ভল্টের মিটারের কারেন্টের তারে তার হাত লেগে যায়। সর্ট খেয়ে পড়ে যায় সাইটে। তারপর সেখান থেকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। হাসানের বাবা মুস্তাফিজ জানান, কারেন্টের আগুণে ওর শরীরের ২৪ পার্সেন্ট পুড়ে গেছে। আজ ১৬ দিন যাবত হাসান রাজধানীর ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিউটের এইচজিইউ এর ১ নম্বর বেডে দগ্ধাবস্থায় কাতরাচ্ছে হাসান। প্রতিদিন ওর পেছনে প্রায় ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। বার্ন ইউনিটে থাকা অন্যান্য রোগীদের মাঝে হাসানের অবস্থা সবচেয়ে বেশি আশঙ্কজনক।

দগ্ধ হাসানের চিকিৎসারত ডাক্তার জানিয়েছেন, বর্তমান অবস্থা থেকে পূর্ণাঙ্গ সুস্থ হতে হাসানের আরো পাঁচ থেকে ছয় মাস সময় লাগবে। হাসানের বাবা মাওলানা মুস্তাফিজুর রহমান একজন মধ্যবিত্ত পরিবারের লোক। কিছুদিন আগে পবিত্র উমরাহ পালন করে এসেছেন। উমরা থেকে দেশে আসার পর তার আপন বড় ভাই অসুস্থ হলে তার পেছনেও প্রায় সোয়ালক্ষ টাকা খরচ করেন তিনি। এরপরও বাঁচাতে পারেননি বড় ভাইকে। বড় ভাইর শোক কেটে উঠতে না উঠতেই কলিজার টুকরা সন্তানের ঘটে গেলো এ করুণ দূর্ঘটনা। ওর পেছনেও ইতিমধ্যে অনেক টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। এসবের পুরোটাই ঋণ করে চালাচ্ছেন তিনি।পূর্ণ চিকিৎসা চালিয়ে যেতে আরো অনেক টাকার দরকার। এসব টাকার ব্যবস্থা কোত্থেকে হবে এর কিছুই বলতে পারছেন না মধ্যম আয়ের কওমি মাদরাসার এ শিক্ষক। তিনি জানান, হাসানের দূর্ঘটনার সময় শাশুড়ি (হাসানের নানি) থেকে দু’বারে ৫০ হাজার টাকা নিয়েছেন। সেসব খরচ হয়ে গিয়েছে অনেক আগেই। এর পরেও অনেক টাকা ঋণ করেছেন তিনি।

অত্যন্ত সরল সোজা এ মাওলানার সাথে কথা বলে বুঝা গেলো, তিনি খুবই আত্মমর্যাশীল মানুষ। কখনো কারো বাড়িতে গিয়ে দু’বেলা খাওয়ার রেকর্ড নেই তার। এলাকায় খুবই সম্মানি একজন মাওলানা সাহেব তিনি। কারো থেকে কখনো কিছু চেয়ে নেয়ার মানুষ তিনি নন। সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন বারবার। সবাই যেনো আমার শিশু সন্তানের জন্য মালিকের কাছে দোয়া করেন। হাসান মুহাম্মদ আব্দুল্লাহর সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, হাসান যখন থেকে কোল ছেড়েছে, তখন থেকে সতর খোলেনি কোনোদিন।বার্ন ইউটিটের বেডে এসেও মহিলা ডাক্তার চিকিৎসার স্বার্থে ওর সতর খুলতে গেলে খুব চিৎকার শুরু করেছিলো ও। তারপর পুরুষ ডাক্তার এসে ওর চিকিৎসা শুরু করে। এমন লাজুক একটি ফুটফুটে শিশু হাসান। যে জীবনের কঠিন সময়ে এসেও ভুলে যায়নি সতর ঢেকে রাখার কথা। আহ, কত দরদ তার লাজুকতার প্রতি। এমন ভীষণ লাজুক ও কুরআনের এগারো পাড়া হাফেজের জীবন আজ সঙ্কটাপন্ন।

তার চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনে বাবা সক্ষম না হলেও কারো কাছে অক্ষমতা প্রকাশ করতে নারাজ তিনি। সব মিলিয়ে মাদরাসা শিক্ষক এ বাবার হাফেজ সন্তানের জোড়ালো চিকিৎসা করা দরকার। ব্যয়ভার বহনে প্রয়োজন সমাজের বিত্তবানদের অংশগ্রহণ। তাহলে একের বোঝা দূর হয়ে যাবে। বেঁচে যাবে শিশু সন্তান হাসান মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ। বিত্তবানরা দানের হাত প্রসারিত করলে সুচিকিৎসা শেষে কুরআনের বাগানে ফিরে যাওয়া সম্ভব হবে তারপক্ষে। হাসান মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আবার ফিরে আসুক কুরআনের ঘরে। তেলাওয়াত করুক সুমধুর সুরে। হৃদয় জুড়াক উস্তাদ, আত্মীয় ও প্রতিবেশিদের। এ শিশু হাফেজের চিকিৎসায় এগিয়ে আসলে বেঁচে যেতে পারে একটি তরতাজা হাস্যমুখ। বাঁচতে পারে একটি কুরআনের পাখি। প্রিয় হাসান, তুমি বেঁচে ফিরে আসো কুরআনের বাগানে। নিষ্পাপ পাখিদের মাহফিলে।

যোগাযোগ করতে- হাফেজ মাওলানা আশরাফ বিন মুখতার, হাসান মুহাম্মদ আব্দুল্লাহর মামা। বিকাশ (পার্সোনাল) ০১৭১৯৯৪৯৮৭৭।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © Matrijagat TV
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
matv2425802581