সাগর পাড়ের দুঃখি মানুষের গল্প নিয়ে. . . . .
কলাপাড়ায় প্রাই় সব জায়গা জুড়ে রয়েছে সাগর প্রত্যেকটি এলাকা থেকে মাত্র ২-৩কিলোমিটার ব্যবধানেই সাগর, সাগরের শব্দে এখানকার মানুষের ঘুম ভাঙা সাগরের শব্দে এখানকার মানুষের কাজ করা। সাগর পাড়ের মানুষের আয়ের উৎস হলো একমাত্র মাছ কখনো জীবন দিতে হয় জেলেদের তবুও এ সংগ্রাম নিজের সংসার পরিজন আত্মীয়স্বজনকে ভালো রাখতে হলে একটু চ্যালেঞ্জ তো নিতেই হবে, নিজেকে ভালো রাখতে হয় নিজের সন্তান ছেলে-মেয়ে আত্মীয়-স্বজন সবাইকে যখন ভালো রাখার দায়িত্ব যখন কাঁধে আসে তখন মৃত্যু জেনে সাগর পাড়ি দিতেই হয় দুমুঠো ডাল ভাতের জন্য। এক বৃদ্ধার কাছে ৭১ সনের বন্যার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন। বৃদ্বার নাম সুফিয়া বেগম তিনি বলেন, কি বলবো বাবা তোমার সাথে আবার মনে করিয়ে দিলে আত্মীয় স্বজন হারানোর কথা, বলে হাউমাউ করে কেঁদে দিলেন। শোন বাবা তখন ত এত উন্নাত ব্যাবস্তা ছিলো না রেডিও টিভি কিছুই ছিলোনা এখনকার মত এত তারাতারির কারো সাথে যোগাযোগ করা যেতনা গ্রামের মানুষ বলাবলি করতো লাগলো পানি উঠবে বন্যা হবার সম্ভবনা আছে।
তখন ছিলো রোজার সময় মাগরিবের আজান দিয়েছে কেউ কেউ রোজা খুলে হালকা কিছু মুখে দিয়েছে কেউ আবার শুধু পানি খাচ্ছে, এমন সময় দেখি ঘরের পিড়ায় পানি উঠে গেছে। ২-৩-মিনিটে দেখি ঘরের দরজা জানলা তলিয়ে গেছে থালা বাসন অসবাপএ সব ভাসছে, ছোট ছোট ছেলে মেয়ে কারো কোলে ছিলো, কেউ শেষবারের মতো দেখতে ও পাড়িনী। ঘরের মাচায় উঠে বসে রইলাম আর চারদিকের চিৎকার শুনতে পাচ্ছিলাম আমার ছেলে কই বাবা কই মা কই ভাই কই বোন কই, আর আমার পরিবারের সবাইকে ডাকাডাকি করতে লাগলাম আর কাঁদতে রইলাম। অনেক সময় কেটে গেলে পানি আর বাড়তে লাগলো তখন সবাই প্রান বাঁচাতে ছুটতে লাগলো কেউ তালগাছ কেউ বড় গাছ যে যেখানে যেভাবে থাকতে পাড়ছে সে সেই ভাবেই রইলো। আমার তিনমাসের একটা ফুটফুটে বাচ্চা ছিলো আমি তাকে নিয়ে একটি গাছ ধরে রইলাম তখন পাশ থেকে আমার বৃদ্ধা বাবা ভাসতে ভাসতে যাচ্ছিল তখন তাকে ধরতে গেলে আমার হাত ফসকে আমার বাচ্চাটি ছুটে যায় কোথায় যে চলে গেলো বুঝতে পারলাম না, বাবাকে ধরে যখন কাছে আনলাম বাবা শুধু বললো তোর মা মনে হয় নেই বলেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলো হতভম্ব হয়ে গাছ ধরে জুলে রইলাম।
দুইদিন পড় শুধু লাশের গন্ধ চারদিকে পাহাড় হয়ে রইলো ডোবায় খালে বিলে শুধু লাশ আর লাশ। যারা বেঁচে ছিলো তারাও অসহয় হয়ে পড়ছে খাবার নেই ঘর নেই আগুন নেই খুদার জ্বালায় সবাই কাতরাচ্ছে, এখন ও রাতে সপ্ন দেখি ওই দিনগুলো বাঁচাও বাঁচাও। এরপর, দেখলাম সিডর রেডিও শুনলাম ৭ নাম্বার সিগনাল পানি উঠবে সবাই ব্যাস্ত কেউ সাইক্লোন সেন্টারে যাচ্ছে কেউ মাটির কেল্লায় আমরা ও রওনা দিলাম হঠাৎ দেখি হবদা রাস্তা থেকে পানি ঘরিয়ে উঠছে, বাতাস বৃষ্টি বাতাসে গাছ ভেঙে রাস্তায় পড়ে আছে অনেক কষ্ট করে সাইক্লোন সেন্টারে পৌঁছাতে পাড়লাম। বিশেষ করে আবহাওয়া খারাপ হলে বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ হয়ে যায় তখন লাইট চার্জ মোবাইল চার্জ রেডিও টিভি সব বন্ধ হয়ে যায় তখন আবার ও ভোগান্তি পোহাতে হয়। সেখান থেকে কিছু দুর এসে এক জেলের সাথে কথা বললাম,, জাতীয় সরেজমিন পএিকার রিপোর্টারদের সাথে একজন জেলের সাথে কথা হয় দীর্ঘ সময়, জেলের নাম জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমার নাম ছওার ফরাজী আমার বাসা এই সাগর পাড়েই আমার বয়স প্রাই ৭৫ বছরের কাছাকাছি দীর্ঘ ৫০ বছরের মত আমি সাগরে সাথে আছি আমার বাসা ওই বালুর ধুপে একটা ভেরাবিহিন ভাঙ্গা ঘরে বসবাস করে আসছি আমার দুই ছেলে এক মেয়ে ছেলে দুটো একজন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আর একজন কলেজে লেখাপড়া করাচ্ছি। তিনি আর বলেন আমি চাইনা আমার ছেলে জেলে হোক, আমার সপ্ন আমি তাকে অফিসার বানাবো, কারন আমি জানি ওই সাগরের নিষ্ঠুরতা এই পঞ্চাশ বছরে আমি অনেক লাশ তুলেছি এই সাগর থেকে অনেক কে ভাসতে দেখেছি দিনের পড় দিন, আমি চাইনা আমার ছেলেকে হারাতে, তাই নিজের যৌবনের অনেক সময় পাড় করেছি সাগরের বুকে এদের ভবিষ্যতের জন্য আজ যখন সরকার এত সুযোগ সুবিধা দিয়েছেন লেখাপড়া করার কেন আমি আমার সন্তানদের বঞ্চিত করবো এই লেখাপড়া থেকে। ১১৪ পটুয়াখালী ৪ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মহিব্বুর রহমান বলেন,, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমাদের অকুল আবেদন বাংলাদেশের সব চেয়ে ঝুঁকিপূন উপকূলে আমাদের বসবাস আমাদের উপকূলে অনেক উন্নয়ন ধরকার ৮০ পার্সেন রাস্তা এখনো কাঁচা এগুলো পাকার দাবী জানাচ্ছি, অনেক সাইক্লোন সেন্টার ধরকার সেগুলো খুব জরুরি বাস্তবায়নের আশা করছি, বিভিন্ন জনসচেতন মূলক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জনসচেতনতার গতি বাড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি, এই উপকূলের মানুষের জন্য তার মন কাঁদে এটা আমরা মনে প্রানে বিশ্বাস করি। ১১৪ পটুয়াখালী ৪ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মহিব্বুর রহমান বলেন,, আমি ছোট থেকে এই সাগর মানুষদের কাছে পড়ে আছি আমি জানি তাদের দুঃখ দুর্দশা অনেকে মাছ শিকার করতে যেয়ে আর ফিরে আসে না, তার জন্য দুঃখ জন্য অনেক চেষ্টা করি তাদের খুজতে কাউকে পাই কেউ হয়ত বা হারিয়ে যায় অজানায়, আজ যখন সুযোগ পেয়েছি তখন অসহয় মানুষদের জন্য কিছু করবো ইনশাআল্লাহ।
Leave a Reply