বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:০৮ পূর্বাহ্ন

সাংবাদিকতা করেও জীবন শেষদিকে বিভিন্ন রোগে সময় পার করছে রতনের মত অসংখ্য সাংবাদিক।

হুমায়ূন আহমেদ ,স্টাফ রিপোর্টার।
  • আপডেট টাইম শুক্রবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

সাংবাদিকতা করেও জীবন শেষদিকে বিভিন্ন রোগে সময় পার করছে রতনের মত অসংখ্য সাংবাদিক।

 

হুমায়ূন আহমেদ ,স্টাফ রিপোর্টার।

উনাকে কি কেউ চিনেন? অনেকের খুব চেনা চেনা লাগছে হয়তো তাই না? তারপরেও পরিচয় করিয়ে দেই- উনি হলেন গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও তৎকালীন দেশের জনপ্রিয় কিছু পত্রিকা যেমন:- “দৈনিক আমার দেশ, দৈনিক আজকের কাগজ” পত্রিকায় উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। উনি প্রায় ছয় বছরের মত গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাবের সভাপতির হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। উনার কমিটিতে থাকাকালীন সাধারণ সম্পাদক ছিলেন “দৈনিক কালের কন্ঠ”পত্রিকার গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি জনাব মঞ্জুর রহমান(মঞ্জু) ও বর্তমান প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি “দৈনিক

মানবজমিন”পত্রিকার গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি জনাব মিনহাজ উদ্দিন। আমার পরিচিত এক বড় ভাইয়ের কাছ থেকে শোনা একটি ঘটনা বলি – উনার নেতৃত্বে ২০১০সালের দিকে স্থানীয় মামার বাজার একটি মেলার নামে অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধ করার জন্য বিভিন্নভাবে প্রশাসনের নিকট যোগাযোগ করেছিলেন এবং একটি স্মারকলিপি দিয়েছিলেন। তাদের কে আশ্বাস দিয়ে স্থানীয় মেলাটি বন্ধ করে দেয় স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন। পরিচিত এক বড় ভাইয়ের নিজ চোখে দেখা একটি ঘটনা শেয়ার করলাম, ২০০৯সালের দিকে এলাকার বিভিন্ন ঘটনা নিউজ আকারে পত্রিকায় তুলে ধরার জন্য গ্রাম থেকে শহরে অর্থ্যাৎ সিলেট শহরে গিয়ে কোন একটি কম্পিউটারের দোকানে টাইপিং করিয়ে পত্রিকা অফিসে ইমেইলের মাধ্যমে নিউজ প্রতিদিন নিউজ পাঠাতো। হয়তো আজ এগুলো কল্পনা মনে হবে৷ জাতীয় পত্রিকা “দৈনিক আমার দেশ, দৈনিক আজকের কাগজ” পত্রিকায় প্রতিদিন উনার পাঠানো প্রতিবেদন নিউজ আকারে পত্রিকায় প্রকাশ হতো। আমরা স্কুলে থাকাকালীন সময়ে ইয়ূথের কাজ করার সময়ে বিভিন্ন সহযোগিতার জন্য উনার নিকট যোগাযোগ করতাম। তখনকার সময়ে আমাদের সংগঠনের কাজের সফলতার নিউজ উনি পত্রিকায় তুলে ধরতেন খুব সুন্দরভাবে। জাতীয় পত্রিকার পাশাপাশি স্থানীয় দৈনিক যুগভেরি ও সিলেটের প্রান্ত” নামে একটি স্থানীয় সাপ্তাহিক পত্রিকায় তিনি কাজ করেছিলেন দীর্ঘদিন৷ বর্তমানে “সিলেটের প্রান্ত” পত্রিকাটি দৈনিক পত্রিকায় হিসেবে স্বীকৃত লাভ করেছে৷ উনি সাংবাদিকতা পেশা ছাড়াও এলাকায় ছিলেন একজন সফল স্টাম্প লেখক। কারো দলিল, কাগজপত্র, চুক্তিনামা লিখতে জাফলংয়ের গিয়ে উনার নিকট দারহস্ত হতো। উনার অগনিত আরও বিভিন্ন কাজের সফলতার প্রমান রয়েছে। বর্তমানে আধুনিক সমাজ উনাকে কেউ মেনে নয় নি।কারণ উনি স্মার্ট ফোন চালাতে জানেন না৷ এবং ভালোভাবে গুছিয়ে কথা বলতে পারেন না। সেই সাথে নেই কোন লিংক বা লবিং। যারা উনাকে এসব শিখাবেন, তারা পাস কাটিয়ে চলিয়ে গেছে। কেউ তাকে পাত্তা দেয়নি। পত্রিকায় নতুন জনবল নিয়োগ দিয়ে মাইনাস করা হয়েছে উনাকে। নিজস্ব বসতভূমি না থাকায় জাফলং বাজারের পূর্বদিকে ভাড়া বাসায় বহু বছর জীবনযাপন করেছিলেন। বর্তমানে বাস করার জন্য উনাকে সরকার ভূমি সহ একটি বাড়ি করে দিয়েছে৷ উনার স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে আলসার ও জরায়ূতে সমস্যায় ভূগছেন। পরিবারের মধ্যে উনার এক মেয়ে ও ছেলে। পরিবারে মেয়েটিকে বিয়ে দিয়ে দিছে। আর ছেলেটির বয়স মাত্র ১২ বছর। তাই পরিবারে একমাত্র কর্মজীবী ব্যক্তি হিসেবে নিজেই সংসার চালাতে হয়। মানুষের কাছে সাহায্য কামনা করে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছে অনেক দিন। হয়তো কিছু মানুষ অতীতে দিয়েছিলো আর বর্তমানে কেউ তাকে সাহায্য প্রদান করেন না। সংসারের অভাব ও চিকিৎসা খরচ জোগানোর জন্য প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে যাচ্ছে। উনার পিত্তে পাথর ও বিভিন্ন অসুখ থাকার পরও রোদে পুরে সারাদিন এবং শীতের রাতে স্থানীয় জাফলংয়ের মোহাম্মদপুর(অখন মার্কেটের পাশে) দীর্ঘদিন ধরে ছোট একটি জুতার দোকান দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। জুতা বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়ে চলে সংসার ও চিকিৎসার খরচ। মানুষটিকে হঠাৎ দেখে খুবই কষ্ট লাগলো। উনার নাম (শ্রী অমূল্য রতন ) একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র এভাবে দুরবস্থায় সংসার চলবে কেউ ভাবিনি। মফস্বরের সাংবাদিক পেশায়টি এরকমই। জীবনের শেষপ্রান্তে এসে কেউ খুঁজ নেয় না। পত্রিকায় পড়েছি সারা জীবন এই পেশা(সাংবাদিকতা) করেও জীবন শেষদিকে বিভিন্ন রোগে ধুকে ধুকে সময় পার করছে অমূল্য রতনের মত অসংখ্য সাংবাদিক।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © Matrijagat TV
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
matv2425802581