নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার আওতাধীন কালাপানিয়া ইউনিয়নস্থ কালাপানিয়া দিঘির কোনা মাছ ঘাটটির খাস আদায়ের দায়িত্ব পান মোহাম্মদ বাচ্চু নামের এক লোক।সন্দ্বীপ উপজেলা হাট-বাজার,ফেরীঘাট ও গোধীঘাট/মাছঘাট সমূহের কমিটির মাধ্যমে এই ঘাট ইজারা দেওয়া হয়।
১৪২৭ বাংলা সনের জন্য হাট-বাজার,ফেরীঘাট ও গোধীঘাট সমুহের খাস আদায় কমিটি গঠন ও দায়িত্ব প্রদান প্রসঙ্গে এক বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়।উক্ত বিশেষ সভায় সদস্যগনের সর্বসম্মতিক্রমে ১৪২৭ বাংলা সনের জন্য খাস আদায় হিসাবে ইজারা প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।উপস্থিত সবার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মোহাম্মদ বাচ্চু নামে কালাপানিয়া ইউনিয়নস্থ দিঘির কোনা মাছ ঘাট ইজারা দেওয়া হয়।মোহাম্মদ বাচ্চু, পিতাঃশামছুল হক,সাং-বাউরিয়া ৫নং ওয়ার্ড।
উক্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন কমিটির সভাপতি সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী অফিসার,সদস্য-সচিব সহকারী কমিশনার(ভূমি)।সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আবুল খায়ের নাদিম,চেয়ারম্যান,মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদ,উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা,আলিমুর রাজি টিটু,চেয়ারম্যান,কালাপানিয়া ইউনিয়ন পরিষদ,আজাদ,প্রধান শিক্ষক,কালাপানিয়া চৌধুরী বিদ্যা নিকেতন,মোহাম্মদ জাকারিয়া,ইউপি সদস্য কালাপানিয়া ৫নং ওয়ার্ড,বেগম খেলনা,ইউপি সদস্য, সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড ৪,৫,৬,ইউনিয়ন ভূমি সরকারি কর্মকর্তা,হরিশপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস। আরো উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ বাচ্চু সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিগন।
বর্তমান ঘাটের ইজারাদার মোহাম্মদ বাচ্চু সাংবাদিকদের জানান আমার নামে মাছ ধরে ইজারা হয় ফেব্রুয়ারী মাসের ২তারিখ থেকে।আমি মাছ ঘাটে এসে ৩/৪জনকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিলাম।মোহাম্মদ শফিক মাছ ঘাটের কেরানি হিসাবে ছিলেন।প্রতিদিন আমি নিজেও ঘাটে যেতাম কিন্তু হিসাব শফিকের কাছেই ছিলো।গত ৫ই অগাস্ট আমি ক্যাশ বুঝে নেওয়ার জন্য গেলে আমার কেরানি শফিক জানাই আমার থেকে সব টাকা নিয়ে গেছে এখানকার সন্ত্রাসীরা।কবির,রবি,সফিক এসে টাকা নিয়ে গেছে।আরমানের কথায় টাকা নিয়ে গেছে বলে জানান কেরানি সফিক।সব সময় আমি খাস আদায় নেওয়ার পরে তারা এসে নিয়ে যায়।অথচ ঘাট ইজারাদার বাচ্চু বলছেন সফিক নিজেই উদের লোক।
ঘাট ইজারাদার বাচ্চু আরো জানায়,আমাকে বিভিন্ন রকমের হুমকি দিয়ে আসছিলো সব সময়।উরা কারা জানতে চাইলে বাচ্চু বলেন এরা মূলত কালাপানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলিমুর রাজী টিটু ও তার ভাই কালাপানিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আরমানের লোক।বিভিন্ন সময় আরমান-টিটু বিভিন্ন ভাবে আমাকে হুমকি দিয়ে আসছে।
এমনকি আমি সরেজমিনে দেখানোর জন্য একজন সাংবাদিক নিয়ে গেলে কালাপানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলিমুর রাজী টিটু তাকেও মারার হুমকি দেয়।পরে আমি সাংবাদিক কে মাথা ঘামাতে নিষেধ করে দিছি যাতে ঘাটের বিষয়ে মাথা না ঘামায়।আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ জানিয়েছি বাকীটা উনারা দেখবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে মাছ ঘাট ইজারাদার মোহাম্মদ বাচ্চু বলেন মাছ ঘাটে এখন জেলে মাছ কিছুই আসে না,জেলেদের বাধ্য করা হচ্ছে অন্য দিক দিয়ে মাছ নিয়ে যাওয়ার জন্য তাও একটু সামনেই।এইভাবে আমার ইজারা নেওয়া ঘাটে মাছ না এসে যদি অন্য দিকে যায় তাহলে আমার ঘাট ইজারা নিয়ে লাভ কি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় মোহাম্মদ বাচ্চুর কথার সত্যতা পাওয়া যায়।জেলেদের কে বাধ্য করে অন্য জায়গায় মাছ ঘাট স্থাপন করছে কালাপানিয়া ঘাটের সন্ত্রাসীরা।যেখানে অলরেডি সরকারি ইজারাকৃত একটি মাছ ঘাট আছে তার একটু সামনে আরেকটা ব্যক্তিগত মাছ ঘাট বানানো কতটুকু যুক্তিযুক্ত সেই বিষয়ে আমরা কথা বলি সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে।
এই বিষয়ে কালাপানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলিমুর রাজী টিটুর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান,ঘাটের খাস আদায় ছিনতাই এর বিষয়ে আমি কিছু জানিনা,বাচ্চু আমাকে কিছু জানায়নি।আর সাংবাদিক মারার কথাটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।সাংবাদিকের সাথে আমার অথবা ঘাটের কি সম্পর্ক।আবার আমার সাথে ঘাটের সম্পর্কও নেই।এখন কোনদিক দিয়ে মাছ বেচাকেনা হয় আমি জানিনা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার(ভূমি) এই দুইজনের কাছে জানতে চাইলে তারা জানায় মোহাম্মদ বাচ্চু অভিযোগ দিয়ে গেছেন আমরা অভিযোগের ভিত্তিতে আমাদের পদক্ষেপ নিবো।কালাপানিয়া মাছ ঘাটে যা হচ্ছে এতে করে সরকারের রাজস্ব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।বিগত দিনেও বিনা ইজারায় কালাপানিয়া ইউনিয়নস্থ দিঘির কোনা মাছ ঘাট থেকে সরকার কোন প্রকার খাস আদায় পায় নাই।জোর করে খাস আদায় নিতো এলাকার কিছু বখাটে।আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।
Leave a Reply