1′,
মেঘা এসে দেখলো, রাশেদ বেঘোরে ঘুমোচ্ছে তাই ডাকতে ইচ্ছে করলো না । একফালি রোদের পথ ধরে গন্তব্য স্থানের দিকে তাকিয়ে থাকলো । সোনায় সোনালি অালো পড়লে যে কিরণ বিদূরিত হয় তা দেখে সকল কার্য বিনষ্ট করে বাধ্য ছাত্রীর মতো প্রকৃতির দুই রুপের মোহনীয় অাবেশের দিকে তাকিয়ে থাকলো । যেখানে তার ভবিষ্যৎ, চাওয়া, পাওয়া, স্বপ্ন ,ভাবনা তারও অন্তরালে যদি কিছু থেকে থাকে তবে তাই ।
আবিষ্টতা মনে হচ্ছে অমানিশার অন্ধকারে হারিয়ে যাচ্ছে । আদেও নিজেকে খুঁজে পেত না যদি না আট বছরের মেয়েটা এসে না বলতো —
মা মনি তাড়াতাড়ী আমাকে তৈরি করে দাও । স্কুলের দেরি হয়ে যাচ্ছে ।
মেঘা রাশেদকে ডাকলো — এই শুনছো !
এত সকালে এমন ডাকাডাকি করছো কেনো ?
রাশেদ এই কথাটি শুধু ঝাঝালো কন্ঠেই বললো তা নয় । বলার সাথে সাথে বিছানা থেকে উঠে একেবারে দাঁড়িয়ে পড়েছে ।
রাশেদের অাচমকা অাচরণে ঘাবড়ে যায় মেঘা ।
এমন ব্যবহার আশা করেনি রাশেদের কাছ থেকে । মানুষটাকে মাঝে মাঝেই বড্ড অচেনা মনে হয় । কোনকিছুর জন্য তাকে দায়ী করা যায় না । সংসারের যাবতীয় সব কিছুতেই তার খেয়াল । মেয়ের কাপড়, খাতা কলম থেকে আরম্ভ করে আজ ঘরে কোনো বাজার আছে কি নেই সবকিছুতেই তার একনিষ্ঠ নজর । মেঘা আজ পর্যন্ত রাশেদের বিরুদ্ধে কারো কাছে কোন অভিযোগ করার মত শক্ত কারণ দাঁড় করাতে পারেনি । তারপরও নিজেকে দোষী ভাববার মত কোন কারণ খুঁজে পাইনা ।
(দুই)
রাশেদ ঘড়ির কাঁটার দিকে তাকিয়ে দেখে সকাল হয়েছে সেই কতটা সময় এখনো আমার ঘুম ভাঙেনি ! কি করে ভাঙবে ? জীবন্ত প্রতিমা কল্পনা বলয়ের ছোট ছোট ঘেরাটপে অাটকে ছিলো যে । স্বপ্নভরা মূহুর্তগুলো কতই না দামি কাকের সেই নুড়ি ফেলে জল উপরে নিয়ে আসার মতই । কিন্তুু শেষ মূহুর্তে সেই জল যদি পান না করতে পারে তাহলে কারো মেজাজ ঠিক থাকার কথা নয় । তাই বলে মেঘার সাথে এমন আচরণ করা কিছুতেই উচিত হয়নি ।
কি হয়েছে ডাকছো কেন?
রাশেদ এমন ভাব করে জানতে চাইলো যেনো কিছুই হয়নি।
মেঘা কথার উত্তর না দিয়ে সেখান থেকে চলে যায় । বাসায় অনেক কাজ । এই শহরে দু’দিন হলো তারা এসেছে । রাশেদের চাকরির বদলি সূত্রে । ক’দিন আগে রাশেদ একা এসেছিলো মেয়েকে ভর্তি করতে ।
আজকে মেয়ের স্কুলে যাবার প্রথম দিন । মেঘা স্কুলটা চেনেনা । সবকিছু বুঝতে জানতে কিছুদিন তো লাগবেই ।
রাশেদ অফিস থেকে বেশ কিছুদিনের ছুটি নিয়েছে । কাল রাতেই কথা হয়েছে সকালে মেয়েকে স্কুলে পৌঁছে দেবে । আজ সকালেই সব ভুলে বসে আছে । অন্য রকম একটা মানুষ । মেঘা রাশেদকে যত দেখে ততই নতুনভাবে অাবিষ্কার করে ।
রাশেদ উচুঁ গলায় বলল, কিছু বলবে না যখন ,তাহলে আর একটু ঘুমিয়ে নিই ।
মেয়ে এসে ডাকলো বাবা , ও বাবা ওঠো ।
কেন মা , কি হয়েছে ?
অামার স্কুলের দেরি হয়ে যাচ্ছে তো ।
রাশেদ বিছানা ছেড়ে লাফিয়ে ওঠে ,উফ কি যে করিস না আগে ডাকবি তো ।
বাবা তুমি সব ভুলে বসে অাছো। মামনি তোমাকে কতবার করে ডাকলো ।
রাশেদ তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে মেয়েকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো । স্কুলের প্রধান ফটক বন্ধ হবার আগেই মেয়েকে । ক্লাসে দিতে পেরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল ।
তবে তার জন্য বেশ কষ্ট করতে হয়েছে । দেরি হয়ে যাবে তাই ঘুমন্ত ড্রাইভারকে না ডেকে একাই গাড়ি ড্রাইভ করে এসেছে । তারপর অাবার স্কুলের সামনে গাড়ি পার্ক করা যাবেনা । বেশ গরম পড়ছে । এতটুকু অাসতেই ঘাম ঝরছে । পকেট থেকে রুমাল বের করে মুছতে মুছতে অসর্তকভাবে রাস্তার মাঝখান দিয়ে হাঁটতে শুরু করে দিয়েছে
ঢাকা শহরের রাস্তাগুলোর যা অবস্থা ! স্কুল অারম্ভ অার ছুটির সময় মাইল ধরে যানজট লেগে থাকে । বাজে অবস্থা ! ছুটির সময় তো স্কুলের সামনে ধাক্কাধাক্কি লেগে যায় ।
হঠাৎ রাশেদ শুনতে পায় — Excuse me , side please .
রাশেদ সরি বলে সরে দাঁড়ালো । কিন্তু মেয়েটি তার সামনে এসে দাঁড়ালো প্রায়।
কন্ঠ স্বরটা তাকে একরকম থামিয়ে দিলো । কেমন যেন কানে এসে বাজলো । এ কার কন্ঠ !
এ যে তার খুব চেনা । রাশেদের কানে বার বার প্রতিধ্বনি হতে লাগলো । এতটায় স্থবির হয়ে পড়েছিলো যে তখন কোন কথায় বলতে পারিনি । রাশেদ নিজেকে ফিরে পেতে অনেকটা সময় হারিয়ে ফেলল ।পেছন থেকে কয়েকবার ডাক দিলো কিন্তু সে ফিরেও চাইলো না । মনে হলো তার জীবনে পেছন বলে কিছু নেই । সামনেই তার ভুবন ভরা কাজ । ভুলিয়ে দেবে অামার মতো একজন স্বার্থপর মানুষকে ।যে শুধু তার কাছ থেকে নিয়েই গেছে শুধু বিনিময়ে কিছুই দিতে পারিনি ।
ইচ্ছে হচ্ছে ছুটে গিয়ে সামনে দাঁড়ায় । কিন্তু নিজের ভদ্রটুকু বিকিয়ে দিতে পারলো না বলে ওখানে দাঁড়িয়েই অাবারো নিজের দূর্ভাগ্যকে দায়ী করল ।
চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে বলল—
কিছুই কি অামি দিইনি
হয়তো যা চেয়েছো তা পাওনি
বেলাশেষে ভাবছি অামি
কিছুই তুমি হারাওনি !!
3
রাশেদ বুঝতে পারে মেঘা অভিমান করে অাছে । তাই সামনে অাসছে না । – কই , খেতে দাও ।
সবতো টেবিলে সাজানো অাছে খেয়ে নাও ।
তুমি খাবে না ? এসো !
একটু পরে খাবো । তুমি খেয়ে নাও ।
অাচ্ছা ঠিক অাছে , অামিও পরে খাবো ।
রাশেদ বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ে । কি যে হলো রাশেদের! সেই কন্ঠস্বরটা ভুলতে পারছে না । বারবার যেনো কানে বাজতে থাকে । একদিকে অানমনে তাকিয়ে মানুষটাকে মেলাবার চেষ্টা করে ।
মেঘা ভাবে মানুষটার কি পরিবর্তন!
নিজে দোষ করেছে । অাবার নিজেই মুখ গোমরা করে বসে অাছে । কোথায় একটা সরি বলবে তা না । কিন্তু এখনো যদি না খায় দেরি হয়ে যাবে মেয়েকে স্কুল থেকে অানতে হবে । হয়তো না খেয়েই বেরিয়ে পড়বে ।
তাই নিজেই এসে বলল—-
কি হলো খাবেনা ?
ওহ , হ্যা ! চলো , দেরি হয়ে যাচ্ছে ।
মেঘা মিছে কাজের ভান করে রান্নাঘরে সময় কাটায় ।
রাশেদ পেছন থেকে বউকে জড়িয়ে ধরে বলে, সরি
মেঘা অারো দ্বিগুন অভিমান করে ছাড়িয়ে দেবার বৃথা চেষ্টা করে বলে , ঠিক অাছে খেতে যাও ।
তুমিও চলো
অামার এখন ক্ষুধা নেই
রাশেদ এক ঝটকায় মেঘাকে ঘুরিয়ে পেছন থেকে সামনে নিয়ে বলল- এখন অার কি করলে রাগ মিটবে ।অাজ সকালে তো চা পাইনি , এখন হবে নাকি এক চুমুক ?হুম ?
রাশেদ কাপের দিকে মুখটা এগিয়ে নিয়ে অাসে । প্রকৃতির ক্ষরার তাপদাহে চা উতলাতে থাকলো । কিন্তু কেতলিটা নিথর পড়ে রইলো উনুনের হাতে নিজেকে ঝলসে নেবে বলে ।
সারাদিনের কর্মক্লান্তির পর যখন সমস্ত দেহ বিছানায় এলিয়ে দিয়ে রাশেদের বুকে মাথা রেখে ঘুমের সাগরে সাঁতার জানেনা বলে হাবুডুবু খায় ,রাশেদ তখন বিছানা ছেড়ে উঠে এসে বারান্দায় বসে । এই জায়গাটা রাশেদের খুব প্রিয়।
মাঝরাতে যখন পৃথিবী ঘুমের ভান করে । তখন জোসনা স্নান করতে করতে ভুলে যায় রাতের গভীরতা সে গভীরতা ভুলিয়ে দেয় তাকে সকালে উঠতে হবে ।তার স্ত্রী,সম্তান অাছে । তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে রোজ সকালে বেরিয়ে পড়তে হয় মাসে মাসে মোটা অংকের মাইনে পাবার জন্য । শুধুমাত্র ওরা সুখে থাকবে বলে । তা না হলে কি দরকার ছিলো এত কষ্ট করার । নিজের তো ঐ সাধারণ জীবন যাপন । সারামাস পরে মাইনে স্ত্রীর হাতে তুলে দেয় । এতো পরিশ্রম করার পরও মনে হয় নিজের জন্য কিছু নেই কোন দরকার নেই ।
তাহলে নিঃশব্দ রজনীতে সবার অগোচরে পাখির পাদদ্বয়ে যে হ্নদয় নিংড়ানো সম্পদ নিয়ম করে জমা করতে পাঠায় ,যা অাজ পাহাড় সমান হয়ে দাড়িঁয়েছে তা কার জন্য রাশেদই শুধু জানে । অার জানে বলেই কর্তব্যে অবহেলা করেনি ।
রাশেদ ভাবে অামি অামার স্ত্রীকে সুখে রেখেছি। কিন্তু মেঘা জানে তার স্বামী শুধু তাকে কর্তব্য অার ঐশ্বর্যের মডেল বানিয়ে রেখেছে ।
স্বামীর খ্যাতি অর্থ বৈভব সব অামার। অামার সন্তানদের । মেঘা এটাও জানে স্বামীর হ্নদয়ের বাতীঘরে কাকে সাজায় সে । কল্পনায় জমা করা সমস্ত অালো থেকে একটু একটু করে ধার নিয়ে সমস্ত অালো অাঁধারকে মাড়িয়ে অাবার তা পূরণ করা রাখে ।
4
এরপর থেকে মেয়েকে স্কুলে নিয়ে যাবার জন্য অার কাউকে ডেকে দিতে হয়নি । নিজেই সকাল সকাল উঠে মেয়েকে তৈরি করে স্কুলে নিয়ে যায় । অার প্রাণপন খুঁজতে থাকে হারিয়ে যাওয়া মানুষকে ।
রাশেদ ভেবেই নেয় তাকে অার এখানে খুজেঁ পাওয়া যাবেনা । বড্ড অদৃশ্যা সে । তাকে খুঁজে পেতে হলে সেই হারানো সময়ের কাছে মর্জি জানাতে হবে । । অামি যে একনিষ্ট পাপী । অামি তো তার দ্বার গোড়ায় পৌঁছাতেই পারবো না ।
শাস্তি কী অামি পাইনি ? অামি ও পেয়েছি ।অামার সেই ভুলের মাশুল অামার প্রতিটা রাতের সাক্ষী ।
অামার যে রাত ছিল জোছনায় প্লাবিত । অাজ তাতে অন্ধকারের বান ডেকেছে । খুঁজতে লুন্ঠিত হাতে কাউকে এগিয়ে অাসতে হয় ।
অফিসে কাজের চাপ তাই সকাল সকাল বেরিয়ে পড়তে হয় । মেয়েকে অানা নেওয়ার কাজটা মেঘাকেই করতে হয় ।
5
বেশ কয়েক মাস পরে মেঘা রাশেদকে বলল, কাল কি তোমার একটু সময় হবে ?
কাল! কেন বলত?
অামাদের সাথে একজায়গায় যেতে পারবে ?
ওহ ,তাই ! তো এভাবে বলছ কেন?
নাহ ,তুমি যেভাবে ব্যস্ত হয়ে পড়েছ।
হ্যা, অামি তো ব্যস্তই ।
হ্যা , ব্যস্ত। কিন্তু তা বোঝার মত ক্ষমতা মানুষের থাকা প্রয়োজন ।
সবাই প্রায় চলে এসেছে । কেক কাটবে , শুধু মেঘার জন্য অপেক্ষা । ঋষিতা ফোন করে জেনে নেয় — কোথায় অাছো তোমরা?
খুব ঘটা করা জন্মদিন পালন করা পছন্দ নয় ঋষিতা র । ছেলেমেয়ের অাবদার স্কুলের বন্ধু বান্ধবকে বলতেই হবে ,তাই এই সামান্য অায়োজন ।
এই কয়েক মাসের মধ্যে মেঘা অার ঋষিতার দারুণ সম্পর্ক তৈরী হয়েছে ।
ডোরবেল বাজতেই ঋষিতার স্বামী দরজা খুলে দেয়।
ড্রইংরুমের সোফায় বসে থাকে রাশেদ । মেঘা ভিতরের ঘরে ঋষিতার কাছে চলে যায় ।
তোমার অাসতে এত দেরি হল যে ? অামরা সবাই তোমার জন্য ই অপেক্ষা করছি ।
অার বলোনা , ওদের সাথে অার পারিনা ।
মেঘা কিছুক্ষণ ঋষিতার দিকে তাকিয়ে থেকে বলে –
তোমাকে অাজ খুব সুন্দর লাগছে । মেয়েকে ছেড়ে অাজ মাকেই কারো নজর না লেগে যায়
অার বলনা এত ব্যস্ত তার মধ্যে নিজেকে নিয়ে ভাববার সময় কোথায় ।
তোমাকে ভাবতে হবেনা । স্বয়ং কারিগর ভেবেই তোমাকে সব দান করেছে
অার গুল মেরোনা মেঘা । তুমিই বা কম কি সে বল শুনি ।
মেঘা বলল, চল ঋষিতা অামার হাজব্যন্টের সাথে তোমাকে পরিচয় করিয়ে দিই।
6
অাজ ছুটির দিন তারপরও রাশেদের কি এমন কাজ থাকতে পারে । জরুরী ফোন পেয়ে বাইরে চলে গেলো । অামি এসে তোমাকে নিয়ে যাবো বলে বেরিয়েছে তা প্রায় ২/৩ ঘন্টা হয়ে গেল ফেরবার নাম নেই ।
মেঘা রাশেদকে মাঝে মাঝে চিনতে পারেনা । ও তো এমন নয় তারপরও কেনো মাঝে মাঝে অন্য মানুষের মত অাচরণ করে ।
একে একে সবাই বিদায় নিয়েছে । মেঘার অস্বত্তি লাগছে । যদিও ঋষিতা বার বার বলছে থাকার জন্য কিন্তু এভাবে থাকা যায় নাকি ।
কেন থাকা যায় না যাবে । তুমি থাকলে অামারও ভালো লাগবে । তোমার হাজব্যন্ডকে বলে দাও । অাজ অামাদের বাসায় থাকছো ।
কিন্তু মেঘা কথা বলবে কি করে ফোন তো বাসায় ফেলে এসেছে । ঋষিতা দেবার অাগেই ওর বড় বোন তার মোবাইল এগিয়ে দিল কথা বলার জন্য
7
সেদিন রাশেদ ঋষিতার সামনে এসে দাঁড়াতে পারিনি। এত চেনা একজন মানুষের সাথে কিভাবে সদ্য চেনার ভান করতে পারো । ভুলে গেছো অামাকে । ভুলে যাওয়াটায় স্বাভাবিক । তার চেয়ে ঘৃনা কর ঘৃনার বিষে অামাকে নীল করে দাও । সেখানে ফুটবেনা কোন সুগন্ধী ফুল জাগবেনা কোন ভালোবাসা ।
এতদিন তবু ছিল ঝরে পড়া অস্তিত্বের মালা গেঁথে ।।যদিও কাঙ্খিত তবু বিলুপ্ত প্রায় । রং বদল হলেও কোন রং হারিয়ে যায়না । বিলুপ্ত সুখ প্রত্যাশার না হোক ।অপরাধ নিষ্কৃতি বোধ কখনো চাওয়া হয়নি বলে কি মুক্তি মেলেনি ।
এতদিন জেনেছি রং বদল হলেও হারিয়ে যায় না । কিন্তু অাজ কি হল। ইতিহাস বিকৃতির যন্ত্রনা ঝরে পড়া অস্তিত্বের চেয়েও বেদনা বিধুঁর ।
ঋষিতার বড় বোন রাশেদকে ফোনে জানালো ,ওর স্মৃতি বিনষ্ট হয়েছে
কিভাবে ?
ও যখন শেষ বারের মত তোমার কাছে যাচ্ছিলো তাোমার মতামত জানতে
হ্যা , ঋষিতা চেয়েছিলো অামাদের বিয়েটা গোপনে হয়ে যাক । অার অামি চেয়েছিলাম দেশের বাইরে থেকে ফিরে অাসার পর ।
সেদিন তোমার কাছ থেকে ফিরে অাসার পথে ওর এক্সিডেন্ট হয় ।
কিন্ত ফিরে এসে অামি অাপনাদের অনেক খুঁজেছি
পাবে কি করে অামরা অার ওখানে ছিলাম না ।বাবার বদলি হয়েছিলো ।
এখন বুঝতে পারছি কেনো অামার চিঠির কোন উত্তর অামি পায়নি । কিন্তু অাপু ও শুধু অামাকেই ভুলে গেলো ।
না, ও নিজেকেও ভুলে গেছে
রাশেদ দীর্ঘ জমাট বাঁধা শ্বাসটুকু অাকাশের বুকে ঢেলে দিয়ে বলল — অামিও যদি সবকিছু ভুলে থাকতে পারতাম তাহলে নিষ্কৃতি পেত অনিচ্ছাকৃত ভুল ।
অাহতরা নিষ্কৃতি পেলো ,বেদনাগুলো ছড়িয়ে পড়লো ভুবনে । অাশাগুলো পথ খুঁজে পেল উদ্দিপনার।
হারিয়ে খুঁজি // মৌসুমী জামান বাপী
Leave a Reply