শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:০৮ অপরাহ্ন

রিফাত হত্যা মামলা: মিন্নিসহ ৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড আদেশ? মাতৃজগত টিভি

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম বুধবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০

আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় নিহতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ৬ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। বাকি ৪ জনকে খালাস দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। বুধবার দুপুর ২টার দিকে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান।

মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, মো. রাকিবুল হাসান ওরফে রিফাত ফরাজী (২৩), আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আকন (২১), মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত (১৯), রেজোয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় (২২), মো. হাসান (১৯) ও আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি (১৯)। এছাড়া বেকসুর খালাসপ্রাপ্তরা হলেন, মো. মুসা (২২), রাফিউল ইসলাম রাব্বি (২০), মো. সাগর (১৯) ও কামরুল হাসান সায়মুন (২১)।

এ রায়কে সামনে রেখে সকাল থেকেই বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রতিটি ফটক ও বাউন্ডারি ঢেলে সাজানো হয়েছে পুলিশের কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্য দিয়ে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাতের ওপর হামলা হয়। পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। ঐ বছর ১ সেপ্টেম্বর ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্তবয়স্ক দুইভাগে বিভক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। মোট ৭৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে এ মামলায়। আলোচিত এ হত্যা মামলার রায়ের দিকে নজর থাকবে আজ গোটা দেশবাসীর।

যেভাবে ঘটে হত্যাকাণ্ড

রিফাত শরীফকে কোথায়, কখন কীভাবে হত্যা করা হয়েছিল তার একাধিক ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হয় বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ ভিডিও ফুটেজে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের চিত্র দেখা গেছে। কত জন কীভাবে হত্যার মিশন শুরু করে সেটিও মোটামুটি বোঝা যাচ্ছে ফুটেজ থেকে।

পুলিশের তদন্ত, প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা ও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজ থেকে জানা যায়, গত বছরের ২৬ জুন সকালে রিফাত শরীফ সাদা রঙের মোটরবাইকে করে বরগুনা সরকারি কলেজের গেটের সামনে আসেন। এরপর তিনি কলেজের ভেতরে প্রবেশ করেন। ভেতরে প্রবেশের কিছু সময় পর ঘটনাস্থলে আসে রিফাত ফরাজী। আরো দুই থেকে তিন মিনিট পর ঘাতকদের এক জন রিফাত ফরাজীর দুই-তিন সঙ্গী কলেজে ঢোকে।

একপর্যায়ে দেখা যায়, রিফাত শরীফ ও তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি কলেজ থেকে বের হন। এর একটু পর রিফাত ফরাজীর নেতৃত্বে আট থেকে ১০ জন রিফাত শরীফকে ধরে ফেলে। কিল, ঘুষি দিতে দিতে তারা তাকে ফটকের সামনের সড়ক থেকে পূর্ব দিকে নিয়ে যায়। সেখানেই প্রথম দেখা যায় নয়ন বন্ড ও অন্যদের।

ভিডিওতে দেখা যায়, রিফাত ফরাজী ও তার অপর এক সহযোগী দৌড়ে কাছাকাছি কোথাও লুকিয়ে রাখা দুটি রামদা নিয়ে আসে। এর একটি রামদা নয়নের হাতে দেয় রিফাত ফরাজী। এরপর তারা দুই জন মিলে এলোপাতাড়ি কোপাতে শুরু করে রিফাত শরীফকে। আর তাদের দায়ের কোপ থেকে স্বামীকে বাঁচাতে প্রাণপণ চেষ্টা করেন স্ত্রী মিন্নি। তবে পরে পুলিশের তদন্তে বলা হয়েছে, মিন্নিও এই হত্যাকাণ্ডের এক জন পরিকল্পনাকারী। তাই পরে তাকেও আসামি করা হয়েছে। মিন্নি নয়নের সঙ্গে তার বিয়ের বিষয়টি গোপন করেই রিফাত শরীফকে বিয়ে করেছিলেন।

ভিডিওতে দেখা যায়, রিফাত শরীফকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করার পর রিফাত ফরাজী ও নয়ন বন্ড রামদা হাতে সবার সামনে দিয়ে সঙ্গীদের নিয়ে ঘটনাস্থলের পশ্চিম দিকে চলে যাচ্ছে। তখন রিফাত শরীফের রক্তে ভেসে যাচ্ছে তার কাপড়চোপড়। সেখান থেকে তাকে কে বা কারা রিকশায় তুলে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে ঐদিন বিকাল ৩টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যালে মারা যান রিফাত শরীফ।

পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ড ছিল একদম পরিকল্পিত। কেউ কিছু আঁচ করার আগেই ঘাতকরা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছিল। কীভাবে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে রিফাত শরীফের ওপর হামলা করা হবে সে ব্যাপারে তাদের মধ্যে একটি বৈঠকও হয়েছিল। তবে নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ায় তাকে বাদ দিয়ে বাকি আসামিদের বিচার শুরু হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © Matrijagat TV
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
matv2425802581