প্রতিদিন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া রেগীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এই মৃত্যু রাজশাহীবাসীকে রিতিমতো আতঙ্ক করে তুলেছে। অপরদিকে গত ১১ জুন হতে রাজশাহীতে শুরু হওয়া সর্বাত্ন লকডাউন শুরুতে কিছু বিধি নিষেধ মানতে দেখা গেলেও ক্রমেই স্বাভাবিক হয়ে আসছে লকাডউনের চিত্র । রাস্তায় অধিক হারে রিকশা, অটোরিকশা, ব্যক্তিগত কার, মাইক্রো, মোটরসাইকেলসহ পায়ে হাঁটা মানুষের সংখ্যা রাস্তায় বেশী দেখা যাচ্ছে। এছাড়াও কিছু কিছু দোকানপাট খুলতে দেখা গেছে। অপর দিকে পুলিশের ভূমিকা আগের মতো লকাডাউনের কঠোরতা মানাতে তেমন দেখা যাচ্ছে না। এর ফলে রাজশাহীতে করোনার পরিণতি আরো ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রামেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার শামীম ইয়াজদানী গত সোমবার (২১ জুন) সকালে সাংবাদিকদের প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে রাজশাহী ভয়াবহ পরিণতির দিকে যাচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গত সোমাবার সকাল পর্যন্ত রামেক হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি ছিলো ৪০২ জন । তার আগের দিন ছিলো ৩৭৭ জন। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে ৫৬ জন। গত এক সপ্তাহে ১৬ জুন হতে ২২ জুন সকাল পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে রাজশাহীর বাসিন্দা বেশী। করোনায় মারা যাওয়া ৮১ জনের মধ্যে রাজশাহীর ৪৭ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ২০ জন, নাটোরের ৭ জন, নওগাঁর ৬ জন এবং কুষ্টিয়ার ১ জন। এছাড়াও চলতি মাসের ১ জুন হতে ২২ জুন পর্যন্ত টানা ২২ দিনে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ২২৯ জন। গত ১ সপ্তাহে করোনা রোগী ভর্তি হয়েছে ৩৫১ জন, সুস্থ হয়ে বাড়ী ফিরে গেছেন ২২৫ জন। অপরদিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ল্যাবে এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পিসিআর ল্যাবে ৩০৫২ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। নুমানায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ১০৪৫ জন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত ২৪ ঘন্টায় আরো ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই ১৩ জনের মধ্যে ১২ জনই রাজশাহীর বাসিন্দা বলে জানা গেছে। রামেক হাসপাতালেরর পরিচালক বিগ্রেডিয়ার শামীম ইয়াজদানী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সোমবার সকাল থেকে আজ মঙ্গলবার সকালে ছটা পর্যন্ত এর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। মৃত ১৩ জনের মধ্যে রাজশাহীর ১২জন ও নাটোরের একজন রয়েছেন। তাদের মধ্যে করোনা পজেটিভ ৫ জন ও আটজন উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মৃত করোনা পজেটিভ ৫ জনই রাজশাহীর বাসিন্দা। এদিকে হাসপাতালের দেওয়া করোনা চিত্রে দেখা যায়, মৃত ১৩ জনের মধ্যে ৬ জন মারা গেছেন আইসিউতে। আর ৭ জন মারা গেছেন করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসারত অবস্থায়। অপরদিকে সোমবার (২১ জুন) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ল্যাবে ১৮৮ জনের এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পিসিআর ল্যাবে ২৭৪ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে রামেক হাসপাতাল ল্যাবে ৫০ ও রামেক ল্যাবে ১০২ জনের নুমানায় করোনা শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষার অনুপাতে রাজশাহীতে সবচেয়ে বেশি ৩৩ দশমিক ৫১ শতাংশ নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে। একই দিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ২৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ নমুনায় করোনা ধরা পড়েছে। পরীক্ষার অনুপাতে রাজশাহীতে সবচেয়ে বেশি ৩৩ দশমিক ৫১ শতাংশ নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে। একই দিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ২৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ নমুনায় করোনা ধরা পড়েছে।
Leave a Reply