রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় সিলেকশন পদ্ধতি রাখা যৌক্তিক হবেনাঃ
মারুফ আহমেদ
রাজশাহী
এবছর এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে এযাবৎকালের সর্বোচ্চ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিগত ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি অনুযায়ী মাত্র ৪৫ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবে। এজন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলছেন, এবছর সিলেকশন পদ্ধতি রাখা ঠিক হবেনা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছেন,অধিকর্তাদের (ডিন) সাথে বসে এবিষয়ে একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, যাতে শিক্ষার্থীদেরও উপকার হয় পাশাপাশি সুষ্ঠুভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া যায়।
এবিষয়ে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সালেহ মোঃ নাসিম বলেন,’আমরা জানি যে, এবছর এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৮৯১৬৯ জন শিক্ষার্থী। যা এযাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ জিপিএ ৫ প্রাপ্ত হওয়ার রেকর্ড। এমতাবস্থায়, আমাদের বিশ্বিবদ্যালয়ের নিয়ম অনুসারে মাত্র ৪৫ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। যা মোট জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর চার ভাগের এক ভাগেরও কম। এর মধ্যকার অনেকেই আবার একাধিক ইউনিটে আবেদন করবে। যার জন্য প্রকৃত ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৫ হাজারেরও কম হবে।’
তিনি আরো বলেন,’প্রতিবছর অনেক শিক্ষার্থী বিশ্বিবদ্যালয়গুলোতে ভর্তির সুযোগ পায়,যাদের এসএসসি ও এইচএসসির কোনোটাতেই জিপিএ-৫ ছিলোনা বা একটাই ছিলো অন্যটাতে ছিলোনা। সিলেকশন পদ্ধতির থাকলে, এবার অনেক জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীই ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ পাবেনা, সেখানে জিপিএ-৫ না পাওয়া শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার কোনো প্রশ্নই আসবেনা। এমতাবস্থায় সিলেকশন পদ্ধতি রাখা যৌক্তিক হবে বলে, আমার মনে হয় না। ‘
দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ মুহিবুল্লাহ খান বলেন,’বর্তমান সময়ে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে সিলেকশন পদ্ধতিতে কিছু সংখ্যক ছাত্রদের ভর্তি পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়। এই পদ্ধতিটা দুই বছর পূর্বে স্বাভাবিক মনে হলেও বর্তমানে এসে অস্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। এবার, করোনার কারণে শুধুমাত্র তিনটা সাবজেক্টের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে, যার কারণে অনেক শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। এই রেজাল্টের প্রেক্ষীতে সিলেকশন হলে, অনেক পরিশ্রমী ও মেধাবী শিক্ষার্থী ঝরে যাবে। সুতরাং বর্তমান রেজাল্ট পরিস্থিতি বিবেচনা করে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের উচিৎ সিলেকশন পদ্ধতি অন্তত এবারের মতো বাতিল করে দেয়া।’
এবিষয়ে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকিব বলেন,’এবারে সিলেকশন পদ্ধতি রাখলে শুধুমাত্র জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীরাই ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবে। এমনকি অনেক জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। কারণ অধিক পরিমাণ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। আমি মনে করি, শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করা ঠিক হবেনা। যার জিপিএ-৫ পেয়েছে এবং যারা জিপিএ-৫ পায়নি,সবাইকেই ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত।’
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ সুলতান-উল-ইসলাম বলেন,’বিভিন্ন অনুষদের অধিকর্তারা (ডিন) হলেন ভর্তি পরীক্ষার মূল দায়িত্বশীল। অধিকর্তাদের সাথে বসে এবিষয়ে একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, যাতে শিক্ষার্থীদের ও উপকারও হয় পাশাপাশি আমরাও সুষ্ঠুভাবে ভর্তি পরীক্ষাটা নিতে পারি।’
Leave a Reply