যশোরে ফের ত্রাণ সহায়তার দাবিতে বিক্ষোভ হযেছে। যশোর সদর উপজেলার শেখহাটি ইউনিয়নের কর্মহীন গরীব অসহায় মানুষ আজ শনিবার রাস্তায় নেমে আসেন।
শনিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে যশোর-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে এ বিক্ষোভ করেন তারা। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে সেনাসদস্যরা ত্রাণের আশ্বাস দিয়ে তাদের ঘরে ফেরান।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধির দাবি, প্রয়োজনের তুলনায় বরাদ্দ কম হওয়ায় মানুষ ঘরের বাইরে চলে আসছে। শেখহাটি ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ডের নদীপাড়ের বাসিন্দারা ত্রাণ সহায়তা না পেয়ে আজ বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় তারা রাস্তায় বসে ও শুয়ে পড়েন।
শাহানা নামে একজন বিক্ষোভকারী অভিযোগ করেন, এক মাস ধরে কর্মহীন হয়ে ঘরে রয়েছেন। সরকার থেকে ত্রাণের ঘোষণা দেওয়া হলেও তাদের ভাগ্যে কিছুই জোটেনি। স্থানীয় মেম্বারের কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়েও কোনো লাভ হয়নি। মেম্বার জানিয়েছেন, বরাদ্দ পেলে দেওয়া হবে। ফলে খিদের জ্বালা সইতে না পেরে আজ তারা রাজপথে নেমে এসেছেন। কিন্তু পুলিশ এসে তাদের প্রতি সহমর্মিতা না দেখিয়ে উল্টো লাঠিচার্জ করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
রাসেল হোসেন নামে একজন জানান, ‘রোজা রেখেছি। ঘরে খাবার নেই বলে রাস্তায় এসেছি, যাতে প্রশাসন বিষয়টি জানতে পারে। পুলিশকেও ফোন দিয়ে জানিয়েছি। কিন্তু পুলিশ এসে উল্টো আমাদের মারপিট করেছে।’
পুলিশ কি এভাবে মারার অধিকার রাখে?- প্রশ্ন করে ওই রোজাদার আক্ষেপ করে বলেন, ‘আল্লাহ এর বিচার করবেন।’
রাস্তায় নেমে আসা নার্গিস নামে এক নারী বলেন, আজ তারা অনেকে না খেয়ে রোজা রেখেছেন। ইফতার কী দিয়ে করবেন জানেন না।
‘আমরা তো বঙ্গবন্ধুর লোক। আমরা না খেয়ে থাকবো কেন?’- প্রশ্ন তোলেন ওই নারী।
এদিকে স্থানীয় মেম্বার সাজ্জাদুল হক রিপন বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডে আট হাজার ভোটার। এর বাইরে বিভিন্ন এলাকার লোক ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে। সবমিলিয়ে ২০ হাজার লোকের বসবাস। আমি বরাদ্দ পেয়েছি মাত্র ৭০ ব্যাগ ত্রাণ। বিভিন্ন জায়গা থেকেও সহায়তা এনে দেওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু তাও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। যে কারণে মানুষ ঘরের বাইরে চলে আসছে।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা বিক্ষোভ প্রশমণ করতে ব্যর্থ হলে দুপুর একটার দিকে খবর পেয়ে সেনাসদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে যান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। এসময় তিনি তালিকা করে ঘরে ঘরে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান বলেন, তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সবার ঘরেই খাবার পৌঁছে দেওয়া হবে।
Leave a Reply