যশোরের চৌগাছা পৌরশহর এলাকায় ঘুরে অর্ধশত কর্মবিমুখ গরীব-দুস্থ পরিবারকে খুঁজে চাল, ডাল, আলু ও সাবান দিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুল ইসলাম।
মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন স্থানে তিনি ভ্যান-রিক্সাচালক ও নিম্ন আয়ের ব্যবসায়ীদের হাতে এ অনুদান তুলে দেন। সুবিধাভোগীরা জানান, তিনি সরকারি পিকআপ যোগে এসে প্রত্যেককে ১০ কেজি চাল, ২ কেজি আলু, হাফ কেজি মসুর ডাল ও একটি করে লাইফবয় সাবান প্রদান করেন।
এ সময় তিনি তাদেরকে বুঝিয়ে বলেন, আগামী কয়দিন বাড়িতেই থাকবেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে দিনআনা দিনখাওয়া এসব ব্যক্তিরা পেটের জ্বালায় জীবন বাজি রেখে দু পয়সা রোজগারের আশায় এক প্রকার বাধ্য হয়েই বাড়ীর বাহিরে যাচ্ছেন। কিন্তু শহর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তাদের কোন উপার্জন নেই। হঠাৎ করেই ইউএনওর কাছ থেকে এভাবে চাল, ডাল অনুদান পেয়ে তারা ব্যাপক খুশি হয়েছেন। এ সময় শ্রমজীবী এ সকল মানুষ বলেন আগামী কয়েকদিন সরকারি নির্দেশনা মেনে বাড়িতেই থাকবেন। চাল-ডাল পাওয়া ভ্যানচালক মিন্টু বলেন, পরিবার-পরিজন নিয়ে দারুণ কষ্টে দিন যাচ্ছিল। ইউএনও সাহেব খাবার গুলো দেওয়ায় দু-বেলা দুমুঠো ভাতের ব্যবস্থা হয়েছে। তাই জীবনের ঝুঁকিনিয়ে কয়েক দিন বাজারে বের হওয়া লাগবে না।
তিনি বলেন ভাই এগুলো পেয়ে অনেক উপকার হয়েছে। কয়দিন ভ্যানে তো ভাড়াই হচ্ছে না। যা দিয়েছেন তা কদিন খেয়ে বাঁচতে পারবো। শহরের স্বর্ণপট্টি মোড় ভ্যানে শসা বিক্রেতা শহরের বিশ্বাস পাড়ার আব্দুল আলীমও পেয়েছেন এ অনুদানের প্যাকেট। আলীম বলেন ইউএনও সাহেব গাড়িতে করে এসে এটা আমাকে দিয়েছেন। আর বলেছেন যে শসাগুলো আছে ওগুলো বেচে বাড়িতে চলে যাবেন। আগামী সাতটা দিন বাড়িতেই থাকবেন। এগুলো দিয়ে একয়দিন একটু কষ্ট করে চলবেন। তিনি বলেন আমরা দিনআনা দিন খাওয়া মানুষ পেটের দায়েই বাজারে আসি। পেটের ব্যবস্থা হয়েছে এ জন্য কদিন বাড়িতেই থাকবো। ফুটপথে ফল বিক্রি করেন তার পিতা আব্দুল আজিজ। তাকেও এ অনুদান দেওয়া হয়েছে। তিনি অনুদান পেয়েই দোকান গুছিয়ে বাড়িতে চলে গেছেন। শহরের পোষ্টঅফিস মোড়ে কাঠালপাতা বিক্রেতা বৃদ্ধ বলেন বাবা পেটের দায়েই তো এই বিপদের মধ্যেও বাজারে এসেছি। পেটের ব্যবস্থা হওয়ায় কটা দিন বাড়িতেই থাকবো। এভাবে শহরের অর্ধশত গরীব পরিবারকে তিনি এ খাদ্যদ্রব্য বিতরণ করেন। এ সময় তার সাথে ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নারায়ণ চন্দ্র পাল ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইশতিয়াক আহমেদ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, আজ কিছু ভ্যানচালক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের খাবার দেয়া হয়েছে। অন্যদেরও তালিকা করা হয়েছে। আমি নিজে সরকারি অনুদান খাদ্য বিতরণ কাজ মনিটরিং করছি। কর্মহীন হয়ে পড়া এসব দিনমজুরদের সবাইকেই খাদ্য দেয়া হবে ইনশাআল্লাহ। আমাদের খাদ্যদ্রব্যের কোন সংকট নেই।
Leave a Reply