যশোরের চৌগাছায় সদ্যজাত সন্তানকে হত্যার অভিযোগে ঘাতক মা রেশমা খাতুন (২০) কে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার পুড়াপাড়া-ক্লাবপাড়া গ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে চৌগাছা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
স্থানীয় ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত চার থেকে পাঁচ মাস আগে উপজেলার পুড়াপাড়া-ক্লাবপাড়া গ্রামের নাজমুল হোসেনের সাথে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার হরিপুর গ্রামের রেশমা খাতুন (২০) এর বিয়ে হয়। বুধবার রাতে রেশমার প্রসবযন্ত্রণা উঠলে শ্বশুরবাড়ির বাথরুমে যায় এবং বাথরুমেই তার সন্তানের প্রসব হয়। এ সময় সে ঐ সন্তানকে হত্যা করে কাপড়ে জড়িয়ে বাথরুমের হাউজে ফেলে দেয়। ঐ সময় কান্নার শব্দ শুনতে পান রেশমার নানি শ্বাশুড়ি। পরে বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি রেশমার কাছে জানতে চায় পরিবারের সদস্যরা। রেশমা বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু নাছোড় বান্দা অভিভাবকরা রেশমাকে তার পেটের কথিত টিউমারটি কোথায় গেল জানতে চায়লে রেশমা সন্তান প্রসব ও তাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। তখন বাড়ির লোকজন বাথরুমের মধ্য থেকে মৃত সন্তানের অস্তিত্ব খুঁজে পায়। স্থানীয় জন প্রতিনিধির মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে চৌগাছা থানা পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে রেশমাকে আটক করে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এবং নবজাতকের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।
হাসপাতালের সনদ নেয়ার পর শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে চৌগাছা থানা পুলিশ রেশমার বিরুদ্ধে সন্তান হত্যার অভিযোগে মামলা করে। যার নম্বর ২২ দুপুরে হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রেশমাকে আদালতে পাঠানো হয়। চৌগাছা থানার ওসি রিফাত খান রাজীব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ ওই নবজাতকের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। পুলিশের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রেশমা জানিয়েছেন, তিনি ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করার সময়ে দুই ব্যক্তির সাথে তার দৈহিক সম্পর্ক হয়। সন্তানটির প্রকৃত বাবা কে তা তিনি নিশ্চিত নন।
বিয়ের সময় প্রেগন্যান্সির বিষয়টি লুকিয়ে তার পেটে একটি টিউমার রয়েছে বলে ছেলে পক্ষকে বলা হয়। তিনি বলেন এ ঘটনায় রেশমার বিরুদ্ধে সন্তান হত্যার দায়ে পুলিশ বাদি হয়ে মামলা করেছে। এবং ওই মামলায় রেশমাকে গ্রেফতার দেখিয়ে শুক্রবার দুপুরে আদালতে পাঠিয়েছে বলে জানা যায়।
Leave a Reply