রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৩৪ পূর্বাহ্ন

মহিপুরের নিজামপুর ২ কি‌লো‌মিটার বেড়িবাঁধ ক্ষ‌তিগ্রস্ত।

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম শনিবার, ৬ জুন, ২০২০

ফের ভাঙন শুরু হয়েছে পটুয়াখালীর মহিপুর নিজামপুর গ্রামের রক্ষা বাঁধটি। ঘূর্নিঝড় আম্ফানের তান্ডবে মহিপুর ইউনিয়নের নিজামপুর গ্রামের বন্যানিয়ন্ত্রন বাঁধটি ক্ষত-বিক্ষত হয়ে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

অমাবস্যা-পূর্ণিমার কিংবা জোয়ারে আন্ধারমনিক নদীর খরস্রোত উত্তাল ঢেউ আছড়ে পরছে বাঁধের উপর। এতে প্রতিনিয়ত ভাঙছে এ বাঁধটি। প্রায় দু’কিলোমিটার জুড়ে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে পাঁচটি গ্রামের হাজার হাজার কৃষক পুনরায় পানিবন্দিসহ আর্থিক ক্ষতির শংকায় রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ঘূর্নিঝড় সিডরে নিজামপুর গ্রামের পাউবো’র ৪৭/১ পোল্ডারের বেরিবাঁধের বিভিন্ন অংশে ভাঙ্গন দেখা দেয়। এর পর ২০০৮ ঘূর্নিঝড় নার্গিস, ২০০৯ আইলা, ২০১৩ মহাসেন, ২০১৫ কোমেন, ২০১৬ রোয়ানু, ২০১৭ মোরা, ২০১৯ ফণী ও বুলবুল এর তান্ডবে নিজামপুর বাঁধটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

বেশ কয়েকবার সংস্কারসহ তিনবার পূন:নির্মান হলেও সাগর মোহনা আন্ধারমানিক নদীর অস্বাভাবিক উচ্চতার জোয়ারে পানি ভাঙন কবলিত অংশ দিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করে। দফায় দফায় প্লাবিত হয় ওই ইউনিয়নের পুরান মহিপুর, ইউসুফপুর, নিজামপুর, কোমরপুর ও সুধিরপুর গ্রামের অন্ততঃ তিন হাজার একর জমি। দীর্ঘ ১২ বছরে কাঙ্খিত ফসল পায়নি কৃষকরা।

এছাড়া বন্ধ হয়ে যায় বাঁধ সংশ্লিষ্ট একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে নদী ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্মাণ করে দেয় রিং বেরিবাঁধ। সর্বশেষ ঘূর্নিঝড় আম্ফানের তান্ডবে এ বাঁধটি ফের বিভিন্ন স্থান ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

এ বাঁধের উপর দাঁড়িয়ে কৃষক আলতাফ শরীফ দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেন, আন্ধারমানিক নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের তান্ডবে ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীর পানির চাপ বাড়লে এ বাঁধটি যে কোন মুহুর্তে ছুটে যেতে পারে। তখন যাওয়ার আর কোন জায়গা থাকবেনা বলে তিনি জানিয়েছেন।

নিজামপুর গ্রামের বাসিন্দা প্রভাষক জয়নুল আবেদীন বলেন, সিডরের পর থেকে পাঁচ গ্রামের মানুষ দশ বছর যাবৎ জমিতে কোন চাষ করতে পারিনি। এর পর পানি উন্নয়ন বোর্ড জনগনের দূর্ভোগ লাগবে এখানের রিং বেরিবাঁধ করে দেয়। কিন্তু সুপারসাইক্লোন আম্ফানের তান্ডবে এ বাঁধটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দুই বছর ধরে চাষ শুরু করছি। এখন আবার নতুন করে আতঙ্কে ভুগছি।

মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আঃছালাম আকন জানান, এ এলাকার বেশিরভাগ মানুষই মৎসজীবী। আবার কেউ কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এই ইউনিয়নের নিজামপুর ও সুধীরপুর গ্রাম সাগরের মোহনায় সংলগ্ন। শুধু অমাবস্যা-পূর্ণিমাই নয়, জোয়ার ভাটার সাথে যুদ্ধ করে বেচে থাকতে হয় তাদের। পূর্বের বেবিবাঁধ নেই।

এখানে সারে আটশ মিটার রিং বেরিবাঁধ হয়েছে। তাও আবার আম্ফানে ক্ষত বিক্ষত করে ফেলছে। এর আগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দ্বারে দ্বারে গিয়ে আমি অনেক বার ঘুরেছি। অবহেলিত এ জনপদের নিজামপুর গ্রামের তিন কিলোমিটার বেরিবাঁধ নতুন ভাবে করার জন্য তিনি প্রধান মন্ত্রীর কাছে দাবি জানান।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়া জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মো.ওয়ালিউজ্জামান বলেন, ঘূর্নিঝড় আম্ফানে রিং বেরিবাঁধটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সরজমিনে পরিদর্শন করেছি। যে বরাদ্ধ দেয়া হয় তাদিয়ে কোন রকমের কাজ করা সম্ভব। এ সাগর মোহনায় ব্লকসহ পুনাঙ্গ বেরিবাঁধ করা দরকার। এর জন্য প্রকল্প তৈরি করে মন্ত্রনালয় পাঠানো হয়েছে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © Matrijagat TV
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
matv2425802581