বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৫০ অপরাহ্ন

ভুয়া মানবাধিকার চেয়ারম্যান ডিজিটাল প্রতারক আতিকুর গ্রেফতার

-মোঃ নুর---- পটুয়াখালী।
  • আপডেট টাইম সোমবার, ১৪ জুন, ২০২১
মানবাধিকার চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রী পরিবারের লোক পরিচয়ে সারাদেশে প্রতারণা করতেন পটুয়াখালীর গলাচিপা থানার ছোটশিবা গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে আতিকুর রহমান সবুজ (ঘটক আতিক)। অপরাধ অনুসন্ধানের নামে নিজেকে সিনিয়র সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি ও ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিতেন। কথিত ডিজিটাল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন নামের সংগঠনের সরকারি বৈধতা না থাকলেও ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে গড়ে তুলেছে প্রতারক সিন্ডিকেট। অবশেষে অভিযোগের ভিত্তিতে ও প্রতারণার সত্যতা পেয়ে গত রোববার (১৩ জুন) ঢাকার মিরপুর র‌্যাব-৪ সদস্যরা রূপনগর থানাধীন ইষ্টার্ণ হাউজিং এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডিজিটাল প্রতারক খ্যাত আতিকুর রহমান সবজুকে গ্রেফতার করেছে। এসময় ১ টি ট্যাব, ১ টি মোবাইল, ১ টি ওয়াইফাই রাউটার, ২ টি আইডি কার্ড, ৫০ টি ভিজিটিং কার্ড ও ৫ টি হার্ড ফাইলসহ উদ্ধার করা হয়। পরে মিরপুর মডেল থানায় হস্তান্তর করে মামলা দায়ের শেষে গতকাল সোমবার আতিকুর রহমানকে কোর্ট হাজতে প্রেরণ করা হয়। সে গলাচিপা থানার অপহরণ মামলারও প্রধান পলাতক আসামি। গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে আইনগত সহায়তা দেওয়ার নামে নারী ধর্ষণ, প্রতারণা করে ডজনখানেক বিয়ের নামে ধর্ষণ ও ভুক্তভোগীদের ঢাকায় ডেকে ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে জিম্মি করে টাকা আদায় করার অভিযোগ রয়েছে। প্রতারক আতিকুর রহমানকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‌্যাব-৪ অধিনায়ক (সিও) মো. মোজাম্মেল হক বলেন, আতিকুর রহমান বড় ধরণের প্রতারক। মানবাধিকার চেয়ারম্যান পরিচয়ে প্রতারণা করতো। ভুক্তভোগীর অভিযোগ পেয়ে দীর্ঘ তদন্তে প্রতারণার সত্যতা পেয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রতারক সিন্ডিকেট ধরতে র‌্যাব সদস্যরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছেন বলেও জানান তিনি। মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে মিরপুর মডেল থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মনির হোসেন জানান, মানবাধিকার চেয়ারম্যান পরিচয় দিয়ে আতিকুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে মানুষের সাথে প্রতারণা করছিল। এ অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা থানার চিতলা এলাকার নুর ইসলামের ছেলে মামুন হোসেন বাদী হয়ে মিরপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলার বিবরণে জানা যায়, দামুড়হুদা থানার চিতলা এলাকার মামুন হোসেনের জমি সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের কথা বলে মিরপুর-১০ নম্বরের বুশরা ক্লিনিকের ৫ম তলায় ডেকে নিয়ে নগদ টাকা ও ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয় প্রতারক আতিকুর ও তার সহযোগিরা। পরে জমি লিখে নেওয়ার ভয় দেখিয়ে কয়েকদফায় নগদ টাকা নিয়েছে ওই প্রতারক সিন্ডিকেট। ফের টাকা দাবি করলে ভুক্তভোগী মামুন হোসেন অস্বীকৃতি জানালে মিথ্যা মামলা ফাঁসানোর ভয় দেখায় আতিকুর। এঘটনায় দামুড়হুদা থানায় জিডি করেন মামুন। র‌্যাব জানায়, আতিকুর রহমান সবুজ বিভিন্ন ক্ষমতাশীল ব্যক্তিদের পরিচয় দিয়ে তাদের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন সময় সাধারণ মানুষের কাছে ভুয়া পরিচয় দিয়ে দিয়ে দীর্ঘদিন বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ী অফিস খুলে চাকুরী দেওয়া, জমি উদ্ধার, ফ্ল্যাট উদ্ধার কাজের কথা বলে প্রতারণা করে সাধারণ মানুষের বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাৎ করে আসছে। সে আলিশান গাড়িতে, সব সময় তার মিটিং লেগেই আছে। বিভিন্ন নারীদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে সেগুলোর গোপন ভিভিও ধারণ করে তাদেরকে ফাঁদে ফেলত এবং সেই ভিডিও কাজে লাগিয়ে সে নারীদেরকে বিভিন্ন অপকর্মে কাজ করাতে বাধ্য করত। এ পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় ভূয়া পরিচয় দিয়ে মোট ৮ জন নারীকে বিয়ে করেছে বলে জানা যায়। তাদের সাথে কিছু দিন সম্পর্ক রাখার পর প্রতারণাপূর্বক টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যেত। গ্রেফতারকৃত আতিকুর রহমান এসবের সত্যতা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © Matrijagat TV
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
matv2425802581