ঝড় বৃষ্টিতে যশোরের চৌগাছায় উপজেলার কৃষকরা বেকায়দায় পড়েছে। ধান ঘরে তুলতে যেয়ে এক প্রকার নাকাল হচ্ছেন কৃষকরা। গত কয়েকদিনের হালকা, মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাতে কয়েকহাজার হেক্টর ধানের জমি তলিয়ে যাত্তয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা।
কৃষকেরা সোনালী স্বপ্ন বাস্তবায়নে দিন-রাত পরিশ্রম করেছেন । বৃষ্টির পানিতে ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছে হাজার হাজার কৃষকের সেই সোনালী স্বপ্ন।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে পৌরসভাসহ ১১ টি ইউনিয়নে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৭ হাজার ৮’শ ২০, হেক্টর জমিতে। যার সম্ভাব্য উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৬ হাজার ৯’শ ২০ মেট্রিকটন। কিন্তু ফলন ভালো হলেও বৈরি আবহাওয়ার কারণে উৎপাদন লক্ষমাত্রা কম হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষি অফিস।
কয়েকদিনের অতিবৃষ্টি, আর প্রবল বজ্রপাতে দিশেহারা উপজেলার কৃষকরা। এক দিকে করোনাভাইরাস অন্যদিকে বজ্রপাত আতঙ্কে ধান কাটার জন্য শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। মাঠের পাকা ধান কেটে বাড়ি আনতে তিনগুণ পরিশ্রমের পরও সোনালী ফসল ঘরে তুলতে দুর্ভোগ পোহাতে তাদের। চোখের সামনেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কষ্ট করে সৃজিত হাজার হাজার একর জমির ধান। ফলে কৃষকের বুকে জমছে চাপা আর্তনাদ। চোখে-মুখে ফসল হারানোর শঙ্কার ছাপ।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতের ঝড়-বৃষ্টিতে কিছু কিছু এলাকায় ধান গাছ নুয়ে পড়েছে, আবার কোথাও ভেসে গেছে কাটা ধান, ঝড়ের আঘাতে ঝরে গেছে ধান, কোথাও ভারী বৃষ্টিতে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে পাকা ধান।
বুধবার ধান ক্ষেতের কাটা-ভেজা ধানের শীষ জড়িয়ে ধরে কৃষকদের কাঁদতে দেখা যায় উপজেলার চাঁদপাড়া গ্রামর মাঠে । কথা হয়, চাষী, হোসেন কারিগর, আবু সালাম, রিজাউল, জাকির হোসেনসহ কয়েকজনের সাথে। তারা জানান, উৎপাদন খরচ বাদে বৃষ্টির কারনে এক বিঘা জমির ধান ঘরে তুলতে অতিরিক্ত৪/৫ হাজার টাকা খরচ হবে। মণপ্রতি ১ হাজার টাকার উপরে ধান বিক্রি করতে না পারলে কৃষকের লেকাসান হবে বলে জানান তারা। সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ন্যায্য মুল্যে ধান ক্রয়ের দাবীও করেন তারা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচ উদ্দীন বলেন, আমরা কৃষকদের আগে থেকেই আবহাওয়ার পূবাভাস জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। উপজেলার বেশির ভাগ কৃষকই পশু খাদ্যের জন্য পাকা ধানের শুকনো খড়সহ ধান সংগ্রহ করে থাকেন। বৈরি আবহাওয়ার কারনে এবছরে খড় বাদেই ধান কেটে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছি।
Leave a Reply