বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে বিমুং মার্মা (৫০) নামের উপজাতির এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার (২৫ আগষ্ট) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড কিউ মার্মার আকাশমনি বাগান সংলগ্ন পাহাড়ের ঢালু থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তার পিতা মৃত নাতু মার্মা। তার বাড়ী বাইশারী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড আথুইমং পাড়া এলাকায় বলে জানা যায়। তার এক মেয়ে, দুই ছেলে রয়েছে।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন জানান, লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বান্দরবান সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, উক্ত ঘটনায় নিহত বিমুং মার্মার বড় ছেলে উছিংথোয়াই মার্মা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা উল্লেখ করে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। ময়না তদন্ত রিপোর্ট হাতে আসার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে ঘটনার বিষয়ে এলাকায় খোজ নিয়ে জানা যায়, গত রবিবার (২৩ আগষ্ট) সকালে আথুইমং পাড়ার বাসিন্দা মংছিং মার্মার ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল করে লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ত্রি-ডেবা মুরং পাড়ায় শুকর ক্রয় করতে যায় নিহত বিমুং মার্মা।
এ বিষয়ে মংছিং মার্মার সাথে মুঠোফোনে কথা বলে জানা যায়, রবিবার বিমুং মার্মাকে বাইশারী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড জেলা পরিষদ রাবার বাগানে নামিয়ে দিয়ে ফের এলাকায় ফিরে আসি। পরে ওই দিন শুকর ক্রয় শেষে মুঠোফোনে ফের এলাকায় ফিরে আসার বিষয়টি জানায়। কিন্তু এরপর থেকে তার ব্যবহৃত মুঠোফোন বন্ধ পেয়ে গত মঙ্গলবার এলাকার ৫০/৬০ জন লোক সহ জেলা পরিষদ রাবার বাগান এলাকায় তাকে খোজার জন্য বের হই। খুজতে খুজতে রাবার বাগানের স্টাফ ঘরে শুকর রাখার বস্তা দেখতে পেয়ে ওই এলাকায় আরো খোজাখুজি করি। খোঁজার একপর্যায়ে পার্শবর্তী মিউ মার্মার আকাশমনি বাগানের পশ্চিম দিকে পাহাড়ের ঢালে উপুড় অবস্থায় বিমুং মার্মার লাশ দেখতে পেয়ে বাইশারী তদন্ত কেন্দ্রে খবর পাঠাই। খবর পেয়ে বাইশারী তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই ফারুকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিমুং মার্মার লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে বিমুং মার্মার লাশ মিললেও ক্রয়কৃত শুকরটি পাওয়া যায়নি বলে জানায় স্থানীয় লোকজন।
নিহত বিমুং মার্মার ছেলে উছিংথোয়াই মুঠোফোনে জানান, তার পিতাকে পরিকল্পিত ভাবে খুন করা হয়েছে। তিনি এ হত্যাকান্ডের সুষ্ট বিচার দাবী জানিয়েছেন। তিনি আরো জানান, তার পিতা একজন কৃষক এবং দীর্ঘদিন ধরে যক্ষা রোগে আক্রান্ত। কৃষি কাজ করতে অক্ষম হয়ে পরে আথুইমং পাড়ায় একটি ছোট্ট দোকান দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল। এখন পিতা নেই সংসারের হাল ধরবে কে? প্রশ্ন তার।
Leave a Reply