বাউফল উপজেলা প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় ৯ ইউনিয়ন পরিষদের স্থগিত হওয়া নির্বাচন আজ ২১ জুন ২০২১ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়েছে। নানা নাটকীয়তার সাথে শেষ হলো বাউফলের ইউপি নির্বাচন। সকালে ভোট শুরুর ১ ঘণ্টা পর কেন্দ্রে গুলি ও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়নে। আজ সোমবার সকাল আনুমানিক ৯ টার দিকে কেশবপুর ২নং ওয়ার্ডের হাইস্কুল কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটেছে। জানা গেছে, সকাল পৌনে ৯টার দিকে নৌকা প্রতিকের পক্ষে কর্মীরা কেন্দ্র দখলের সময় চশমা প্রতিকের এজেন্টসহ কয়েক কর্মী-সমর্থক বাধা দেন। এ সময় নৌকার কর্মী ও সমর্থকরা তাদের ধাড়ালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে জখম করে। ঘটনার সময় তিন রাউন্ড গুলি ও কয়েকটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এই সংঘাতের কারণে কিছু সময় ওই কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত ছিল। তবে পরে পুনরায় ভোট গ্রহণ করা হলেও চশমা প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মহিউদ্দিন লাভলুর কোন এজেন্ট ঢুকতে দেয়া হয়নি কেন্দ্রে। এ ঘটনায় চশমা মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী মহিউদ্দিন লাভলু’র ১০ কর্মী ও সমর্থক আহত হন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত ছাত্রলীগ নেতা আতাউর রাব্বি (২৭) ও রাশমোন দাস(৪০) সহ আরেক কর্মী আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার রিয়াজুল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নের বীরপাশা ও গাবতলী সরকারি প্রাইমারি স্কুল কেন্দ্রে নৌকার পক্ষে ভোটারদের কাছ থেকে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে সিল দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও সিফাই বাড়ি মাদ্রাশা কেন্দ্রে মেম্বার প্রার্থীদের সংঘর্ষের কারণে ১ ঘন্টা ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকার খবর পাওয়া গেছে। ভোট কারচুপির অভিযোগে এই ইউনিয়নের চশমা প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমান হিরন ও অটোরিকশা প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী সফিকুল ইসলাম মিঠু ভোট বর্জন করেছেন। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নে নিজ নিজ কার্যালয়ে তাঁরা এই ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। উপজেলার বগা ইউনিয়নের ঘোড়া প্রতিকের প্রার্থী ভোট কার্চুপির অভিযোগে ১১ টার দিকে ভোট বর্জনের প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেয় নিজের ফেইজবুক একাউন্টে। এছাড়াও এই ইউপির রাজনগর প্রাইমারী স্কুল কেন্দ্রে মেম্বার প্রার্থীদের ভিতরে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। উপজেলার কালিশুরি ও কালাইয়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে সাবেক চেয়ারম্যান জামাল শিকদার ও মনির মোল্লা বিনা প্রতিদ্বন্দীতায় নির্বাচিত হলেও মেম্বার নির্বাচন নিয়ে হয়েছে নানা নাটকীয়তা। আজ সোমবার সকাল ১১ টার দিকে কালিশুরি ইউপির ৩ নং ওয়ার্ডের পোনাহুড়া সিনিয়র মাদ্রাশা কেন্দ্র থেকে ৩ মেম্বার প্রার্থীর এজেন্ট নামিয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে আরেক ইউপি মেম্বার প্রার্থী আপেল প্রতিকের হানিফ ফকিরের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে কালাইয়া ইউনিয়নে ১ ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য প্রার্থী ছিলেন ফুটবল প্রতিকে সোয়েব ইকবাল মামুন ও ঘুড়ি প্রতিকের ফোরকান মিয়া। জানা গেছে, ভোট গণনায় প্রথমে ফুটবল প্রতিকের মামুন বিজয়ী হলে ভোট গণনায় ভুল হয়েছে দাবী করেন ঘুরি প্রতিকের প্রার্থী ফোরকান মিয়া। একপর্যায়ে কালাইয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট পুণঃগণনার ব্যবস্থা করলে ঘুরি প্রতিকের প্রার্থী ফোরকান মিয়া বিজয়ী হন। কিন্তু অনেক ভোটার মনে করেন প্রথম গণনা সঠিক ছিলো। এ সকল অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে সংযোগ পাওয়া যায়নি।
Leave a Reply