রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪১ অপরাহ্ন

বজ্রপাত কমলেও বছরে মৃত্যু দেড় শ মানুষের

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
  • আপডেট টাইম শনিবার, ৫ জুন, ২০২১
দেশে বজ্রপাতের সংখ্যা কমছে। বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যুর সংখ্যাও কিছুটা কমেছে। তবে উদ্বেগজনক পরিস্থিতির অবসান হয়নি। কারণ, দেশে এখনো বছরে প্রায় দেড় শ মানুষের মৃত্যু হয় বজ্রপাতে। আর মারা যাওয়াদের প্রায় ৭০ শতাংশ কৃষক। ফিনল্যান্ডের বজ্রপাতবিষয়ক গবেষণা সংস্থা ভাইসালার হিসাবে, বাংলাদেশে ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর ৪০ লাখ বা তার বেশিসংখ্যক বজ্রপাত মেঘ থেকে ভূমিতে নেমে আসে। ২০১৯ সালে তা প্রায় ১০ লাখ কমে যায়। সর্বশেষ গত বছর সংখ্যাটি দাঁড়িয়েছে ২৫ লাখের কিছু কম। ভাইসালার হিসাবে, বজ্রপাতে গত বছর ১৪৪ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যা আগের দুই বছরের চেয়ে কিছুটা কম। বজ্রপাতের ক্ষেত্রে একটি অস্বাভাবিক বছর ছিল ২০১৬ সাল। ওই বছর প্রায় ৪৩ লাখ বজ্রপাত হয়। মারা যান প্রায় ২৬৩ জন মানুষ। এসব তথ্য পাওয়া গেছে অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের একটি দলের কাছ থেকে। এ দলের দলনেতা ও কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আশরাফ দেওয়ান দৈনিক মাতৃজগত কে বলেন, বাংলাদেশে বজ্রপাত বেড়ে গিয়ে মৃত্যু বাড়ছে বলে যে ধারণা প্রচলিত আছে, তা সঠিক নয়। দেশে এপ্রিল থেকে মে মাস পর্যন্ত সময়ে এবং হাওর এলাকায় বেশি বজ্রপাত হয়। তিনি বলেন, সময় ও এলাকাকে বিবেচনায় নিয়ে বজ্রপাত ব্যবস্থাপনায় বিশেষ কর্মসূচি নিতে হবে। ভাইসালার সাত বছরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশে বজ্রপাতে মৃত্যুর ৭০ শতাংশ ঘটনা ঘটে কৃষিকাজ করার সময়। এ ছাড়া বাড়ি ফেরার পথে সাড়ে ১৪ শতাংশ এবং গোসল করা ও মাছ ধরার সময় ১৩ শতাংশ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, শহরে বজ্রপাত প্রতিরোধে বেশির ভাগ ভবনে প্রতিরোধক দণ্ড রয়েছে। ফলে শহরে মানুষের মৃত্যু কম। কিন্তু গ্রামে, বিশেষ করে ফসলের মাঠে সেই ব্যবস্থা নেই। এ কারণে সেখানে মৃত্যু বেশি হয়। কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের গবেষণায় দেখা যায়, দেশে সারা বছরে যত বজ্রপাত হয় তার অর্ধেকেরও বেশি হয় মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে। আর এককভাবে মে মাসে হয় মোট বজ্রপাতের ২৬ শতাংশ। দেশে বর্ষা আসার আগের এই সময় কৃষকেরা মাঠে ব্যস্ত থাকেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের হাওর এলাকায় বেশির ভাগ ফসলি জমিতে বড় কোনো গাছ নেই। বজ্রপাতের ধর্ম হচ্ছে তা মাটিতে আঘাত হানার আগে সবচেয়ে উঁচু যে জায়গাটি পায় সেখানে গিয়ে পড়ে। বৃক্ষহীন হাওর এলাকায় কৃষকের শরীরই মাটির চেয়ে উঁচু থাকে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আতিকুল হক দৈনিক মাতৃজগত কে বলেন, ‘আমরা হাওর এলাকায় বজ্রপাত প্রতিরোধক দণ্ড স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করি, এতে মৃত্যু কমবে।’ অবশ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে এর আগে বজ্রপাত প্রতিরোধে সারা দেশে প্রায় ১৩ লাখ তালগাছ রোপণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। সেই তালগাছগুলোর কয়টি টিকে আছে, সেগুলো কী ভূমিকা রেখেছে জানতে চাইলে মহাপরিচালক আতিকুল হক বলেন, বিষয়টির কোনো পর্যালোচনা করা হয়নি। করতে হবে। তিনি বলেন, বেশির ভাগ গাছ রাস্তার দুই পাশে রোপণ করা হয়েছিল। বজ্রপাতে মৃত্যু বেশি হয় খোলা মাঠে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © Matrijagat TV
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
matv2425802581