বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় সর্দি, জ্বর, কাশি, ও শ্বাসকষ্টে মাসুদ রানা (৪৫) নামের এক ব্যাবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে।
এঘটনার পর আশেপাশের অন্তত ১৫ বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে উপজেলার ময়দানহাট্টা ইউনিয়নের দাড়িদহ গ্রামের ভাড়া বাড়িতে তার মৃত্যু হয়।স্ত্রী মাজেদা বেগম হাসপাতালে ফোন করে প্রতিবেশীদের ডেকে সহযোগিতা পাননি বলে জানা গেছে। ফলে বিনা চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়েছে। মাসুদ রানা বগুড়া জেলার কাহালু উপজেলার মুরইল দক্ষিণপাড়ার কোরবান আলীর ছেলে। তিনি গাজীপুরের কাশিম বাজারে ক্ষুদ্র ব্যাবসা করতেন।
তার স্ত্রী মাজেদা বেগম বেসরকারি সংস্থা টিএমএসএস শিবগঞ্জের ময়দানহাট্টা ইউনিয়নের দাড়িদহ শাখার অফিস সহকারি।তিনি একমাত্র কন্যা তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী মাসুমা তাবাসসুম মুন (৮) কে নিয়ে দাড়িদহ গ্রামের জিল্লুর রহমানের বাড়িতে ভাড়া থাকেন।
মাজেদা বেগম জানান, তার স্বামী মাসুদ রানা ২৪-০৩-২০২০ইং তারিখ মঙ্গলবার সুস্থ অবস্থায় বাড়িতে ফেরেন। পরদিন থেকে সর্দি,জ্বর, ও কাশি শুরু হয়। স্থানীয় চিকিৎসকের নিকট থেকে ঔষধ এনে তাকে খাওয়ানো হয়েছে। ২৭-০৩-২০২০ইং শুক্রবার রাতে তার শ্বাসকষ্ট বেশি হয়। এসময় তিনি প্রতিবেশীদের ডাকলে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে কেউ তাকে সহযোগিতা করার জন্য এগিয়ে আসেনি।টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ ও রফাতউল্লা কমিউনিটি হাসপাতাল এবং বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে এম্বুলেন্সের জন্য বারবার ফোন করে সাড়া পাননি। এ অবস্থায় রাত ১১টার দিকে মাসুদ রানা বিনা চিকিৎসায় মারা যান। এরপর থেকে প্রতিবেশীরা তাকে এড়িয়ে চলছেন।
স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে ফোন করে তাকে জানানো হয়েছে মৃত মাসুদের নাক থেকে সোয়াব সংগ্রহ করা হবে।২৮-০৩-২০২০ ইং শনিবার বিকাল ৩ টার পড়ে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। কীভাবে ও কোথায় মরদেহ দাফন করা হবে তা তিনি জানেন না। মা-মেয়ে ঘরে মরদেহ রেখে অপেক্ষা করছেন।বগুড়ার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা.মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি ঢাকায় আইইডিসিআর পরিচালক মীরজাদী সেব্রীনা ফ্লোরার সঙ্গে কথা হয়েছে। মৃত মাসুদ সর্দি, জ্বর, কাশি,উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ছিলেন। সর্দি থাকায় জানানো হয়েছে মৃত ব্যাক্তি করোনা ভাইরাসে মারা যাননি। তার নাক থেকে সোয়াব সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠাতে বলা হয়। এছাড়া পিপিই পরিহিতদের মাধ্যমে মরদেহ দাফনের অনুমতি দেয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর কবির জানান, কিছুক্ষণ আগে মৃত ব্যাক্তির শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
মৃত মাসুদের বাড়ি কাহালু উপজেলায় হলেও মরদেহ সেখানে নেওয়া সম্ভব নয়।তাই পিপিই পরিহিতরা দাড়িদহ গ্রামের গোরস্থানে দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।এছাড়া ঢাকা থেকে রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত আশেপাশের অন্তত ১৫ বাড়ি লকডাউন থাকবে।
Leave a Reply