মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২৯ অপরাহ্ন

বগুড়ায় মোটর মালিক গ্রুপের দু’পক্ষের সংঘর্ষ পুলিশ সাংবাদিকসহ আহত ১০

মুহাম্মদ মতিন, স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট টাইম মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
মুহাম্মদ মতিন, স্টাফ রিপোর্টার বগুড়া জেলা মোটর মালিক গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পুলিশ সাংবাদিকসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও শর্টগানের গুলি ছুড়েছে। মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারী) বেলা সাড়ে ১১ টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী বগুড়ার চারমাথা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল চত্বরে এই সংর্ঘষের ঘটনা ঘটে। জানা গেছে বগুড়া জেলা মোটর মালিক গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। বিরোধ নিষ্পত্তির পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছেন। অতিরিক্তি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইতিমধ্যে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেছেন। কিন্তু মোটর মালিক গ্রুপের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও যুবলীগ নেতা আমিনুল ইসলাম নির্বাচনের বিরোধিতা করে মোটর মালিক গ্রুপের অফিস ও মালামাল তার হেফাজতে চারমাথা বাসটার্মিনাল এলাকায় রাখে। মঙ্গলবার সকাল থেকে মোটর মালিক গ্রুপের সাবেক আহ্বায়ক ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহনের নেতৃত্বে চারমাথায় এলাকায় গিয়ে আমিনুলের নিয়ন্ত্রণে থাকা মোটর মালিক গ্রুপের অফিস দখলের ঘোষণা দিয়ে প্রস্তুতি নিতে থাকেন। এ খবর পেয়ে যুবলীগ নেতা আমিনুলের লোকজন চারমাথা এলাকায় সমবেত হয়। তারা যেকোন মূল্যে মোহন গ্রুপকে প্রতিহত করার জন্য মাইকে ঘোষণা দেয় এবং পরিবহন শ্রমিকদের প্রত্যেক হাতে লাঠি নিয়ে অবস্থান নিতে বলেন। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়সাল মাহমুদ ও সদর থানার ওসি হুমায়ুন কবীরের নেতৃত্বে পুলিশ চারমাথায় অবস্থান নেয়। পুলিশ আমিনুলকে সমঝোতায় প্রস্তাব দিলে আমিনুল পুলিশকে জানিয়ে দেয় তারা শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে অপর পক্ষকে প্রতিহত করবে। আমিনুল গ্রুপের লোকজন পুলিশের সামনেই লাঠি মিছিল শুরু করে। এ সময় মোহন গ্রুপের দেড় দুই হাজার নেতাকর্মী সান্তাহার সড়ক দিয়ে এলজিইডির সামনে অবস্থান নেয়। পুলিশ মাঝামাঝি অবস্থান নিয়ে থাকাকালে মোহন গ্রুপের দেড় দুই হাজার লোকজন লাঠিশোটা নিয়ে পুলিশের ব্যারিকেট ভেঙে আমিনুল গ্রুপের লোকজনকে ধাওয়া করে। ধাওয়ায় তারা পালিয়ে গেলে মোহন গ্রুপের লোকজন টার্মিনাল এলাকা দখলে নিয়ে শুরু করে ব্যাপক ভাঙচুর। তারা এলোপাতাড়ি যানবাহন ভাঙচুর ছাড়াও আমিনুলে নিয়ন্ত্রণে থাকা মোটর মালিক গ্রুপের অফিস ও তার ব্যক্তিগত অফিস ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। প্রায় আধাঘণ্টা ব্যাপী চলে একতরফা তান্ডব। এ সময় ভাঙচুরের ছবি তুলতে গেলে জিটিভির ক্যামেরাপার্সন রাজু আহম্মেদকে বেধড়ক মারধর করা হয়। তাছাড়াও পুলিশের জেলা বিশেষ শাখার কনস্টেবল রমজান আলীকে ছুরিকাঘাত করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে গেলে পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ শুরু করে। পুলিশ রাবার বুলেট ও শর্টগানের গুলি ছুড়ে মোহন গ্রুপের লোকজনকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এ সময় পুলিশ ৯ জনকে গ্রেফতার করে। সংঘর্ষের কারণে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী মহাসড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। সংঘর্ষ থেমে যাওয়ার পর আমিনুল গ্রুপ চারমাথা এলাকায় অবস্থান নেয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়। সংঘর্ষের পর চারমাথা এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ ফয়সাল মাহমুদ বলেন পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © Matrijagat TV
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
matv2425802581