বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার চরাঞ্চলে এবার ভালো আবহাওয়া থাকায় পাটের চাষ ভালো হয়েছে। উপজেলায় এবার চাষীরা প্রায় ৭ হাজার ১৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ করছেন। চাষীরা বলছেন, গত বছর পাটের দাম ভালো পাওয়ায় চাষীরা মৌসুম শুরু হতেই আবার পাট চাষে ঝুঁকে পরেছেন। উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে বগুড়া জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাটের আবাদ হয়ে থাকে সারিয়াকান্দির চরাঞ্চলে। গত বছর এ উপজেলায় পাট চাষ হয়েছিলো প্রায় ৭ হাজার হেক্টর জমি। এবার বেশি চাষ হয়েছে আরও ১৫ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ১৫ হেক্টর জমিতে জাত পাট, ৫ হেক্টর জমিতে ভারতীয় মেস্তা পাট, বাদ বাকি জমিতে তোষা পাটের আবাদ করা হয়েছে। স্থানীয় পাট চাষীদের সূত্রে জানা গেছে সারিয়াকান্দি উপজেলার অধিকাংশ এলাকা বাঙালি ও যমুনা নদীর বিশাল এলাকায় চরাভূমি রয়েছে। এসব চরের জমিতে গম ও মরিচের আবাদ ভালো হয়ে থাকে। গম ও মরিচের ফসল ঘরে তোলার পর চাষীরা এসব জমিতে পাট চাষে ঝুঁকে পরেন। চৈত্র মাসের শেষ দিকে জমিতে পাটের বীজ বপন করেন চাষীরা। তবে এবার খরার কারণে পাট চাষের বিলম্ব হলেও অনেক চাষী জমিতে সেট দিয়ে হলেও সময় মতো পাটের বীজ বপন করেছিলেন। তবে উপজেলার বিল এলাকা অর্থাৎ ফুলবাড়ী, নারচী, কামালপুর ও ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের পাট চাষীরা বোরো ধান কর্তন করার পর অনেক চাষী পাটের আবাদ করেছেন। ধান কর্তন করার পর জমিতে ঠিকমতো মাটি ভেজা থাকায় পাট বীজ বপনের জন্য আলাদা করে সেচ দিতে হয়নি। কাজলা ইউনিয়নের ময়ুরের চরের কৃষক বুলু মিয়া বলেন, গত বছর আমি পাট চাষ করেছিলাম ৩ বিঘা জমিতে। পাটের দাম খুবই ভালো ছিলো। ৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সারে ৫ হাজার পাট মণ দরে বিক্রি করেছি। এবার আরও এক বিঘা বেশি জমিতে পাট চাষ করেছি।সদর ইউনিয়নের বাটি চরের কৃষক মানিক মিয়া বলেন, চলতি মৌসুম পাটের আবাদের জন্য এখন পর্যন্ত অনুকূল আবহাওয়া বিরাজ করছে। তবে বন্যার পানি দেরিতে আসলে পাটের আবাদের বাম্পার ফলন আশা করছি আমরা। উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আব্দুল হালিম বলেন, প্রতি হেক্টর জমিতে ৬০ থেকে ৭০ মণ করে পাট উৎপাদন হয়ে থাকে। উৎপাদনে প্রতি বিঘায় খরচ হয় ৬ হাজার টাকার মতো। আমরা এবার প্রায় ২ হাজার ৩০০ চাষীকে প্রণোদনামূলক বিনা মূল্যে পাট বীজ দিয়েছি। এবার আবহাওয়া ও দাম ভালো থাকায় চাষীরা অধিক লাভবান হবে বলে আশা করছি। পাটের আবাদ ও পঁচানোর পর আশ যাতে ভালো হয় সে জন্য আমরা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে পরামর্শ দিয়ে আসছি।
Leave a Reply