পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার হাতেম আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ফাতেমা আক্তার ইতি হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন মেহেদি হাসান স্বপন (২২) ও সুমন জমাদ্দার (২০)। বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ রায় দিয়েছেন। আদালতে আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, অ্যাডভোকেট মো. আসাদ উদ্দিন ও মোহাম্মদ নওয়াব আলী। রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান। পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার ঝাটিবুনিয়া গ্রামের ফুলমিয়ার ৯ বছর বয়সী ফাতেমা আক্তার ইতিকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে নিহতের পিতা ফুল মিয়া ২০১৪ সালের ৬ অক্টোবর মামলা করেন। মামলায় আসামি সুমন জমাদ্দারকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। তদন্ত শেষে পুলিশ ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি দুই আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর বিচার শেষে ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি রায় দেয় পিরোজপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। রায়ে দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। ওই রায়ের পর আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স পাঠানো হয় পিরোজপুর আদালত থেকে। পাশাপাশি কারাবন্দি আসামিরা আবেদন করেন। উভয় আবেদনের ওপর হাইকোর্টে একসঙ্গে শুনানি হয়। শুনানিতে আসামি সুমন জমাদ্দারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির আদালতে বলেন, ‘ঘটনার সময় এই আসামি শিশু ছিলেন। তখন তার বয়স ছিল ১৬ বছর। তাই আইন অনুযায়ী তার মৃত্যুদণ্ড হতে পারে না। কিন্তু পিরোজপুর আদালত আসামিকে প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে বিবেচনা করে মৃত্যুদণ্ড দেন। যা বেআইনি হয়েছে। তবে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলা হয়, আসামিরা শিশুটিকে ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে হত্যা করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষ তা প্রমাণ করতে পারায় পিরোজপুর আদালত মৃত্যুদণ্ড দিয়ে যথার্থই রায় দিয়েছেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আসামিদের আবেদন মঞ্জুর করে তাদেরকে খালাসের নির্দেশ দেয়া হয়। এ রায়ে শিশুটির পরিবার হতাশ। রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী বলেন এভাবে যদি শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামিরা আদালতের মাধ্যমে খালাস পায় তাহলে এমন অপরাধ বাড়তেই থাকবে।
Leave a Reply