জয় মন্ডল বিশেষ প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার উপকূলীয় নিম্নাঞ্চল বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্ন চাপ ও আমাবশ্যার জ্যোঁর প্রভাবে অবিরামাম বর্ষণে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত কয়েক দিনের টানা মাঝারী ও ভারী বৃষ্টি এবং বৃহস্পতি ও শুক্রবারের অব্যাহত বর্ষণের ফলে এ উপজেলায় স্বাভাবিকের চেয়ে৩/৪ ফুট পানি বৃদ্ধিতে বসত বাড়ি, রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে রয়েছে। বিশেষ করে অতিরিক্ত পানিতে বলেশ্বর নদীর বুকের মাঝেরচর ও তীরবর্তী অনেক গ্রাম ও হাঁট বাজার, আমনের বীজতলা, রোপা আমনের ক্ষেত,মাছের ঘের ও বাড়ির আঙ্গিনা শাক-সবজির ক্ষেতসহ চলাচলের ডুবে গেছে। তেমনি বিভিন্ন সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় সাধারণের চলাচলে ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে।এছাড়াও পৌর শহরের একাংশ থানাপাড়া,বকশির ঘটিচোরা,কাছিছিড়াসহ নিম্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছে এলাকাবাসী।
উপজেলার সবচেয়ে বেশী প্লাবিত এলাকা হলো নদ তীরবতর্ীখেতাচিড়া,কচুবাড়িয়া,হোগলপাতি,সাংরাইল,মাঝেরচর, বড়মাছুয়া, ভোলমারা,ছোটমাছুয়া।এছাড়াও ১১ইউনিয়নের মিরুখালী, বড়শৌলা, ছোট শৌলা, তেতুলবাড়িয়া,হারজী নলবুনিয়া, ওয়াহেদাবাদ, নাগ্রাভাঙ্গা ও বাদুরা।
উপজেলার সাপলেজা ইউনিয়নের বলেশ্বর নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নদ তীরবর্তী খেতাছিড়া গ্রামের বেরি বাধের বাইরের ২শ” পরিবার গত ৩/৪দিন ধরে অতিরিক্ত পানিতে বসত বাড়ি ডুবে পানিবন্ধী রয়েছে সহস্রাধীক জেলে পল্লীর মানুষ । ওই গ্রামের মসজিদের মুয়াজ্জিন মোসলেম কাজী (৬৫) জানান-রান্নার চুলায় ১/২ফুট পানিতে ডুবে থাকায় ৫সদস্যের পরিবার শুকনো খাবার খেয়ে দিন পার করেছি।তিনি আরও জানান গরু ছাগল নিয়ে পলিথিন দিয়ে বঁাধের ওপর রাখতে বাদ্য হই।স্থানীয় ইউপি সদস্য আফজাল বেপারীজানান -বেরি বাঁধের বাইরে ২শ’পরিবার তাদের বসত বাড়ি ডুবে থাকায় দারুন দূর্ভোগ পোহাচ্ছে স্বীকার করে বলেন গত আম্পানে বাবুরহাট হতে বলেশ্ব বাজার পর্যন্ত নদীতে বিলিন হওয়া বাঁঁধ সংস্কার না করায় জোয়ারের স্রোতের পানি লোকালয়ে ডুকে বহু পরিবার রাস্তা-ঘাট তলিয়ে গেছে। অতিরিক্ত পানিতে বেতমোর ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা। এখানকার বলেশ্বরের মাঝের চরের কৃষক আ.হালিম মোল্লা(৩৫) জানান-নদীতে জোয়ারের ৩/৪ফুট পানি বৃদ্ধিতে চরের প্রায় দেড়শ পরিবার ঝঁুকির মধ্যে রয়েছে।তিনি আরও জানান-ইতিমধ্যে জোয়ারের অতিরিক্ত পানি ক্ষতিগ্রস্ত বাধ দিয়ে ডুকে স্রোতে চলাচলের রাস্তা নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।
এদিকে অব্যাহত ভারী বর্ষন ও জোয়ারের পানি বৃদ্ধিতে মঠবাড়িয়া পৌরশহরের থানার আবাসিক কোয়ার্টার ২/৩ ফুট পানিতে ডুবে থাকায় থানার ওসির বাস ভবন সহ মহিলা পুলিশের ব্যারাকসহ ৪টি পরিবার গত চার দিন ধরে পরিবারের শিশুসহ সদস্যদের নিয়ে গত ৪দিন ধরে দূর্ভোগ পোহাচ্ছে\থানার অফিসার ইনচার্জ আ জ মাসুদ্দুজ্জামান জানান –প্রতিদিন মেঝেতে পানি ডুকে পড়ায় প্রতিদিন সেচ দিয়ে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বাসায় থাকতে হচ্ছে। ঘুদিঘাটার স্লুইসগেট আটকা থাকাকায় পানিতে গুদিঘাটা সরোজিনী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, অ্যাড, দীলিপ কুমার পাইকের বাড়ির রাস্তা পানি উপচে রাস্তা ভেঙ্গে গিয়ে রাস্তার বেহাল দশা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন জানান, গত ৩/৪ দিনের বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি এবং উত্তরাঞ্চল থেকে আসা পানিতে উপজেলার ৫০ শতাংশ (দেড় হাজার হেক্টর) আমন বীজতলা, আড়াই শত হেক্টর রোপা আমন ও শাক-সবজির ক্ষেত তলিয়ে গেছে। কিছু পাকা আউশ ধানও মাঠে আছে। ১ সপ্তাহের মধ্যে পানি নেমে গেলে কৃষির তেমন কোন ক্ষতি হবে না। পানি সম্পূর্ণ নেমে গেলে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমান নিরুপন করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।
Leave a Reply