মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:০২ পূর্বাহ্ন

নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বাঐসোনা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য’র বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, চাদাবাজীসহ বিভিন্ন অভিযোগ : প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা! ? Matrijagat TV

 এম শিমুল খান, গোপালগঞ্জ :
  • আপডেট টাইম রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার নড়াগাতি থানার বাঐসোনা ইউনিয়ন পরিষদের (দক্ষিন যোগানিয়া গ্রাম) ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রকিত শেখের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, চাদাবাজী, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ জানিয়েছে এলাকাবাসী। তার বিরুদ্ধে থানায় মামলাসহ প্রধানমন্ত্রী বরাবর আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহনের আবেদন জানিয়েছে ভুক্তভোগিরা। মাত্র কয়েক বছর আগেও রকিত শেখ যুক্ত ছিলেন বিএপির রাজনীতির সাথে, ছিলেন বাঐসোনা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের বিএনপির সাধারন সম্পাদক। ২০০৮ সালে সুচতুর রকিত শেখ দলবদল করে আওয়ামীলীগে যোগদান করেন। এরপর সক্ষতা গড়ে তোলেন এলাকার এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, সংশ্লিষ্ঠ ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তিনি এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে চলেছেন। অপরদিকে তার মদদে ভাই কাবুল শেখ ব্্রাক এনজিও থেকে লোন এনে সেই টাকা দিয়ে এলাকায় সুদের কারবার চালিয়ে যাচ্ছেন। এলাকাবাসী জানান, তাদের ভয়ে অনেকেই মুখ খুলতে সাহস পান না। অনেকেই বর্তমানে এলাকা ছাড়া হয়েছেন তাদের অত্যাচারে। এলাকার কেউ তাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে তাদের উপর নেমে আসে রকিত বাহিনীর অত্যাচার ও নির্মম নির্যাতন। হাত-পা ভেঙ্গে দেওয়াসহ ভিটে বাড়ী থেকে উচ্ছেদের ঘটনাও ঘটেছে ওই এলাকায়। সুদের টাকার ভয়ে অনেকে পৈত্রিক বাড়ী ছেড়ে এখন নিরুদ্দেশ রয়েছেন। অষ্ট্রিয়া প্রবাসী, অষ্টিয়া আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি শেখ শামসুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, রকিত মেম্বার ও তার ২ভাই এবং সন্ত্রাসী বাহিনী তার কাছে ১০ লক্ষ টাকা চাদা দাবী করেছে, চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তারা বিভিন্ন ভাবে আমাকে অত্যাচার করছে, তারা আমার বাড়ীতে ঢুকে ডাকাতি করেছে, আমার বাড়ি ভাংচুর করেছে, আমাকে মারধোর করেছে। আমি এলাকায় একটি মসজিদ নির্মান করেছি তারা মসজিদ থেকে আমার নামটা মুছে ফেলেছে। অপরাধীদের শাস্তির দাবীতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি। ইউপি সদস্য রকিত শেখ ও তার সহযোগিদের বিভিন্ন অন্যায় অপকর্মের কথা বর্ননা করেন এলাকাবাসী, এলাকার ভুক্তভোগি বৃদ্ধা অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলেকে বাড়িতে মারতে থাকে, আমি ঠেকাতে আসলে আমাকেও মারধোর করে, আমি থানায় গেলে থানা পুলিশ কোন পদক্ষেপ নেয়নি। সেই ঘটনার কোন বিচার আচার হয়নি, পরে আমার ছেলেকে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে সে এখন গোপালগঞ্জে বসবাস করছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় মসজিদের মোয়াজ্জিন বলেন, মসজিদটা নির্মান করেছেন হাজী শামসুর রহমান। কিন্তু নামের কারনে বাধা হয়। এই বাধার কারনে নামটা মোছা হয়। এই নামটা মুছলে যে লোকগুলো অভিযোগ দিয়ে ছিলো তারা পুনরায় নামাজ পড়তে আসে। এলাকাবাসী রকিত শেখ মেম্বারের ভাইয়ের সুদের কারবারের বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরে বলেন, ওই গেট দিয়ে বের হয়ে যেতে দেখেছি। সবাইকে চেনা যায়নি, চার/পাচ জনকে চিনেছি। রকিত শেখ, শাহানুর শেখ, কাবুল শেখ, বাবুল শেখ। এই যে কিস্তির ব্যাপারটা, কিস্তির জন্য অনেকে এলাকা ছেড়ে চলে গেছে বিল্লাল, তারিকুল, খোকনসহ অনেকেই। ১০ হাজার টাকার বিপরিতে প্রতিদিন ১২০ টাকা দিতে হয়।

এভাবে দিতে দিতে টাকা পরিশোধ হয়েছে কিন্তু খাতায় তোলা হয়নি। বইতে তোলে না শেষে ৭০/৮০ হাজার টাকা পাবে দাবী করে মানুষদের মিথ্যা হয়রানি করে। আমরা জানি তারা টাকা সুদে লাগায়। ৭ হাজার টাকা একজনকে সুদে দিয়ে তার কাছে দাবী করে ৯৫ হাজার টাকা। রকিত শেখের ভাই কাবুল শেখ ব্রাক এনজিও থেকে লোন এনে সেই টাকা দিয়ে এলাকায় শাপলা সমবায় সমিতি নামে সুদের কারবার করেন। সমবায় সমিতি থেকে রেজিট্রেশন করেছেন দাবী করলেও তিনি কোন কাগজ পত্র দেখাতে পারেননি। নেই কোন নিজস্ব কার্যালয়। নিজেই স্বীকার করেন ব্রাক অফিস থেকে কিছু লোন এনে এই জিনিসটা আমি শুরু করেছি। ব্রাক অফিসে মাসে একবার কিস্তি নেয় আর আমি প্রতিদিন নেই, আমার লাভটা ঐ জায়গায়। ব্রাক অফিসে মাসে ১০ টাকা লাভ দিতে হয় আনুমানিক, আমার দেখা যাচ্ছে ওই প্রতিদিন ঘুরোয় আমার ১৫ টাকা লাভ হয়। এই ৫টাকা লাভের আশায় ব্রাক থেকে লোন এনে এই ব্যাবসা করি। এ ব্যাপারে রকিত শেখের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি বিএনপি সেক্রেটারি ছিলাম অনেক আগে, এখন আমি আওয়ামীলীগের দল করি, সেই ভাবে চলি। এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমরা একসাথে চলাফেরা করি, এক সাথে সম্পুর্ন কিছু করি। মসজিদে দাতা শেখ সামসুর রহমানের নাম মুছে ফেলা প্রসঙ্গে বলেন, কিছু লোক নামাজ পড়তে আসতো না, তখন ফতোয়া আনা হয়। তখন সবাই বললো নাম মুছে দিতে হবে। আমরা নাম মুছে দিচ্ছি আপনারা নামাজ পড়তে আসেন। তখন ঐ নাম মুছে ফেলা হয়েছে। কে মুছে দিয়েছে, কবে মুছেছে এটা আমি জানিনা। এটা নিয়ে ওর (শেখ সামসুর রহমানের) অভিযোগ আমিসহ আমার তিনভাই মোট ৮ জন ডাকাতি করেছি, যাহা মিথ্যা ও ভীত্তিহীন।

এ ব্যাপারে নড়াইল জেলার পুলিশ সুপার মো: জসিম উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বিজ্ঞ আদালতে জনৈক অষ্ট্রিয়া প্রবাসী শেখ শামসুর রহমান বাদী হয়ে রকিত শেখ, শাহানুর শেখ, বাবুল শেখ গংসহ আরো কয়েকজনের নামে মামলা দিয়েছেন। এই বিষয়ে আমি নড়াগাতি থানার ওসি সাহেবের সাথে কথা বলেছি। আমরা আইনগত জায়গা গুলি দেখবো, তাদের সংশ্লিষ্টতা আমরা তদন্ত করে দেখবো এবং সেটা যথাযথ আইনগত ব্যাবস্থা আমরা গ্রহন করবো। এলাকার শান্তি শৃংখলা রক্ষা করতে ইউপি সদস্য রকিত শেখ ও তার দোসরদের আইনের আওতায় আনতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবী এলাকাবাসীর।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © Matrijagat TV
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
matv2425802581