২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ঢালিউডে আবারও শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ১৭ এপ্রিল রাত ১২টা ২০ মিনিটে মারা গেছেন অভিনেত্রী কবরী। সেই শোকে এখনো হতবিহ্বল ঢালিউডসহ গোটা দেশ। এর মধ্যে শনিবার রাত ১২টা ৪০ মিনিটে আবারও এসেছে দুঃসংবাদ। সোনালি যুগের চিত্রনায়ক ওয়াসিম রাজধানীর একটি হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তারকাদের এই বিদায়ে শোকে স্তব্ধ শাকিব খান।
শাকিব খান অভিনেতা ওয়াসিমকে ‘আঙ্কেল’ বলে সম্বোধন করতেন। তাঁর অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘আবারও চলচ্চিত্রাঙ্গনে শোকের মাতম। একের পর এক নক্ষত্রের পতনে শূন্য হয়ে যাচ্ছে চলচ্চিত্রমাধ্যমটি। কবরী আপা চলে যাওয়ার বিষাদের মধ্যে সোনালি দিনের জনপ্রিয় নায়ক ওয়াসিম আঙ্কেল মারা গেলেন।’চলচ্চিত্রজগতে ওয়াসিমের অভিষেক ঘটে ১৯৭২ সালে। শুরুতে তিনি ছিলেন সহকারী পরিচালক। একই সঙ্গে ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করেন। একক নায়ক হিসেবে ‘রাতের পর দিন’ চলচ্চিত্র দিয়ে তাঁর ক্যারিয়ার শুরু হয়। তারপরে তাঁকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। অ্যাকশন ও লোককাহিনিভিত্তিক ছবির তিনি ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী নায়ক।
অভিনেতা ওয়াসিম বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। হাঁটতে পারতেন না। বিছানায় শুয়েবসে দিন কাটত তাঁর। ‘দ্য রেইন’, ‘ডাকু মনসুর’, ‘জিঘাংসা’, ‘কে আসল কে নকল’, ‘বাহাদুর’, ‘দোস্ত দুশমন’, ‘মানসী’, ‘দুই রাজকুমার’, ‘সওদাগর’, ‘নরম গরম’, ‘ঈমান’, ‘রাতের পর দিন’, ‘আসামি হাজির’, ‘মিস ললিতা’, ‘রাজ দুলারী’সহ ১৫২টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন ওয়াসিম।
প্রয়াত এই নায়ককে স্মরণ করে শাকিব খান লিখেছেন, ‘ফোক ফ্যান্টাসি ধারার চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে ওয়াসিম আঙ্কেল সত্তর-আশির দশকে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। ওই সব চলচ্চিত্রে অভিনয় করে নায়ক হিসেবে আলাদা গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করেছিলেন তিনি। তাই আজও চলচ্চিত্রের সোনালি অতীত ও তৎকালীন অভিনয়শিল্পীদের প্রসঙ্গ এলে প্রথম সারির নায়কদের কাতারে আসে ওয়াসিম আঙ্কেলের নাম।’
ঢালিউডে সুদর্শন নায়ক হিসেবে পরিচিতি ছিল ওয়াসিমের। শাকিব খানের ভাষায়, ওয়াসিম ছিলেন সুঠাম, সুদর্শন ও পরিপূর্ণ এক নায়ক। চলচ্চিত্র থেকে বেশ কয় বছর আগে বিদায় নিয়েছিলেন তিনি। এর মধ্যে ২০০০ সালে তিনি স্ত্রী ও ২০০৬ সালে কন্যাকে হারিয়ে কিছুটা ভেঙে পড়েন। সম্প্রতি তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে স্মরণ করে শাকিব খান লিখেছেন, ‘বেশ কিছুদিন আগে জেনেছিলাম, ওয়াসিম আঙ্কেল দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। অবশেষে চলে গেলেন। তাঁর চলে যাওয়ায় আরও এক অভিভাবক হারাল বাংলা চলচ্চিত্র। ওয়াসিম আঙ্কেলের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি। তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’
Leave a Reply