সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃঃ
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা সীমান্তের ২৮বিজিবি ব্যাটালিয়ানের অধিনস্থ লাউড়েরগড় বিওপি’র নায়েক তছলিম উদ্দিন প্রধান বিরোদ্ধে অন্যায় ভাবে নিরীহ শ্রমিকদের মারপিট,সংঘবদ্ধ মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে গোপন সখ্যতাসহ নানান অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
এই বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত ভাবে গত (৩০,০৭,২০২০)উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্যা মনোয়ারা বেগম একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ দায়েরের পর থেকে বিজিবির নায়েক তছলিম উদ্দিন মাদক মামলাসহ বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে ইউপি সদস্যা মনোয়ারা বেগম ও ছেলেদের হয়রানীর চেষ্টা ও নানান ভাবে হুমকি দেওয়ায় কারনে উৎবেগ আর উৎকণ্ঠায় থাকার পর গত(১১,০৮,২০২০)আবারও বিজিবি মহাপরিচালক ও সুনামগঞ্জ এসপি’র কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানান মনোয়ারা বেগম।
লিখিত অভিযোগ সুত্রে আরও জানা যায়,স্থানীয় শ্রমিকরা যুগযুগ ধরে জীবন জীবিকার তাগিদে বাংলাদেশ সীমান্তের অভ্যন্তরে যাদুকাটা নদীতে পাহাড়ী ঢলের সাথে আসা বালু মিশ্রিত কয়লা ঠ্যালাজাল দিয়ে গভীর পানি থেকে উত্তোলন করার সময় বাধা না দিয়ে কাজ শেষে বিকালে ফেরার পথে নদীতে নৌকা যোগে উপস্থিত হয়ে গভীর পানিতেই শ্রমিকদের বেধরক লাটিপেটা করে কষ্টার্জিত কয়লা রেখে দেয় নায়েক তসলিম উদ্দিন ও তার নিয়োজিত সহযোগীরা। কিন্তু তার নিয়োজিত র্সোসদের মাধ্যমে শ্রমিকদের সাথে কন্টাক্ট হলে তাদেরকে সকালে তার তত্বাবধানে নদীতে পাঠায় কিন্তু মারধর করেন না। এবং তাদের উত্তোলিত পাথর কয়লার সমান ভাগ নিয়ে তার নিদিষ্ট নৌকায় বহন করে সন্ধ্যায় বারেকটিলায় প্রতি বস্তা ৩-৪টাকায় বিক্রি করেন নায়েক তসলিম উদ্দিন। তার ব্যাধরক পিটুনিতে তাজুল ইসলাম নামে এক যুবকের সমস্থ শরীরে ফুলা জখম এবং বাম হাতের আঙ্গুল ভেঙ্গে যায়,অশালীন ভাষায় গালি-গালাজও করে। এক পর্যায়ে প্রানভিক্ষা চেয়ে গভীর পানি থেকে তীরে উঠে আত্নরক্ষা করে। তাজুল ইসলাম স্থানীয় ইউপি সদস্যার সন্তান হওয়ায় সুনামগঞ্জ ২৮বিজিবি ব্যাটালিয়ান অধিনায়কের কাছে বিচার প্রার্থী হলে তিনি স্থানীয় ক্যাম্প কমান্ডারকে জানাতে বললে তিনি ক্যাম্প কমান্ডারের কাছে বিচার না পেয়ে কমান্ডার ও নায়েক তসলিম উদ্দিন চরিত্রহীন নারী বলে গালি গালাজ করে এবং তার ছেলেদের যেকোন সময় মাদকসহ গ্রেফতারের হুমকি দিলে তিনি জেলা প্রসাশক সুনামগঞ্জ বরাবরে নিজেরও তার পরিবারের সুরক্ষা চেয়ে একটি আবেদন করেন। এরপর থেকে নায়েক তসলিম তার দুই সিভিল বাহিনী(লাইনম্যান খ্যাত)নিয়ে মনোয়ারা মেম্বারের বাড়ির সামনে দিয়ে মটর সাইকেল নিয়ে সারাক্ষন মহড়া দিয়ে ইউপি সদস্যার পরিবারকে আতংকিত করে রাখে। সদস্যাকে নিয়ে এলাকায় মানহানীকর অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে এখন নায়েক তসলিম উদ্দিন।
আরো জানাযায়,সীমান্তে দীর্ঘ দিন ধরে একেই ক্যাম্পে অবস্থান করায় চোরাচালানীদেরকে মোবাইল ও ফেসবুকে চোরাচালানীদের বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়ে নিরাপদে মাদক ব্যবসায় সহযোগীতা করছে।
তছলিমের অত্যাচারের শিকার ভুক্তভোগী তাজুল ইসলাম জানান,গত ২বছরের অধিক সময় ধরে এই কর্মস্থলে অবস্থান করায় নিজেকে কখনো গোয়েন্দা কর্মকর্তা,কখনো বিজিবির বড় অফিসার আবার কখনো বিজিবির পোশাক পরিহিত অবস্থায় এলাকার তার নিজস্ব বাহিনী আর মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে নিয়ে ধাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ফলে স্থানীয় এলাকাবাসীর মাঝে চরম আত্নংক বিরাজ করছে। এসব কর্মকান্ড চলতে থাকায় হতাশ হয়ে পড়েছেন এলাকার সচেতন মহল।
অভিযোগকারী ইউপি সদস্যা মনোয়ারা বেগম জানান,লাউড়ের গড় বিওপি’র ক্যাম্প কমান্ডার ও নায়েক তসলিম উদ্দিন উল্টো আমাকে হুমকি দিয়ে বলে”বিজিবি’র বিরুদ্বে মামলা করেও কিছু করতে পারবে না ”যেখানে ইচ্ছা সেখানে যেতে পারো। চোরাচালান সংক্রান্ত যে কোন মামলায় জড়িয়ে আমিও আমার ছেলেদেরকে হয়রানী করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে নায়েক তসলিম। এছাড়াও প্রতি রাতেই টহল পার্টিসহ রাতে আমার বাড়ির চার পাশে মহড়া দেয়। এলাকায় আমাকে নিয়ে মানহানীকর অপপ্রচারে লিপ্ত থাকায় আমি ও আমার পরিবার খুবই হতাশ। বিচার চেয়ে এখন সারাক্ষন আত্নংকে আছি।
নায়েক তসলিম উদ্দিন প্রধান তার বিরোদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,কেউ কোন অভিযোগ দিলেই ত হবে না প্রমান করতে হবে। আমার সিও স্যারের সাথে কথা বলেন এই বিষয়ে আমার কোন বক্তব্য নেই।
সুনামগঞ্জ ২৮বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মাকসুদুর আলম জানান,অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
Leave a Reply