ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের টাঙ্গাইল সদরের কান্দিলা বাজার এলাকায় মহাসড়ক উন্নয়নে চলমান সামান্য ঢালু একটি ব্রীজ। এই মহাসড়কের অন্যগুলি ঠিকঠাক থাকলেও নির্মাণ জনিত কারণে ব্রীজটির দুই পাশেই রয়েছে ঢালু! ঢালু থাকলেও ব্রীজে উঠার আগে নেই কোন গতি নিয়ন্ত্রক বা সতর্কীকরণ চিহ্ন।এরপরেও অধিকাংশই যানবাহনই গতি কমিয়ে পার হচ্ছেন ব্রীজটি। কেবল ভোর রাতের দিকে বগুড়া ট ১১- ১১৭১ নাম্বারের সিমেন্ট বুঝাই ট্রাক চালক গতি না কমিয়ে দ্রুতগতিতে পার হচ্ছিলেন ওই স্থান। ছিলেন প্রায় ঘুমন্ত।
যার ফলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকটি উঠিয়ে দেন আইল্যান্ডে। পরে ট্রাক উল্টে ও সিমেন্টের নীচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থেই এক নারীসহ চারজন ও হাসপাতালে নেয়ার পর একজন ও চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু হয়। এতে আহত হয় ১০ জন। ট্রাকটিতে ছিলেন প্রায় আরও ৩০ জনের মতো নিম্ন আয়ের মানুষ।
উদ্ধার হওয়া যাত্রীদের বরাত দিয়ে কথাগুলি বলছিলেন স্থানীয় উদ্ধারকারী শহিদুল ইসলাম।তিনি আরও বলেন, ফজরের নামাজের কারণে তারা অনেকেই ছিলেন বাহিরে। বিকট শব্দ ও মানুষের বাঁচাও বাঁচাও চিৎকারে ছুটে গিয়ে দ্রুত তাদের উদ্ধার করেন ও পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন তাদের সাথে উদ্ধারকাজে যোগ দেন। পরে আহত নিহতদের উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসাপাতালে পাঠান।এ বিষয়ে জেলা পুলিশের সার্জেন্ট রাজীব বর্মণ বলেন, নিহতরা হলেন টাঙ্গাইলের গোপালপুরের চরভাদাই গ্রামের জুলহাস, বগুড়ার দুপচাচিয়ার আলিফ ও কাদের এবং রংপুরের পীরগাছার আব্দুল্লাহ। অপর নিহত নারী ও এক ব্যক্তির এখনো পরিচয় সনাক্ত করা যায়নি।তিনি আরও বলেন, আজ ভোরে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা উত্তরবঙ্গগামী সিমেন্ট বোঝাই একটি ট্রাক টাঙ্গাইল সদরের কান্দিলা এলাকায় পৌঁছালে চালক ট্রাকটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন।
এতে ট্রাকটি আইল্যান্ডের সাথে ধাক্কা খেয়ে রাস্তায় মাঝে উল্টে যায়। পরে ট্রাকের নীচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই ওই ট্রাকটির ছাদে যাত্রী হয়ে যাওয়া এক নারী ও চার পুরুষসহ মোট ৫ জন নিহত হয়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি আরও জানান, হতাহতরা সবাই নিম্ন আয়ের মানুষ। করোনা আতঙ্কে গণপরিবহন না থাকায় তারা ট্রাকের ছাদে করে বাড়ি ফিরছিলেন।টাঙ্গাইল ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন মাষ্টার শফিকুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার পর পরই খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উদ্ধার তৎপরতা চালায়।
এ সময় সিমেন্টের বস্তার নিচে চাপা পড়া ৫ জনকে মৃত ও ১১ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।এদিকে, হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে হৃদয় বিদারক দৃশ্য। আহতরা অভিযোগ করছিলেন হাসপাতালে জরুরী চিকিৎসা সেবা পেলেও ঔষধ ও অন্যান্যে চিকিৎসা সামগ্রী বাহির থেকে কিনতে হয়েছে চড়া দামে।এ বিষয়ে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসাপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা: সজিব জানান, চিকিৎসাধীন দশ জনের মধ্যে ৯ জনের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। হাসপাতালে সকল ধরণের ঔষধের সাপ্লাই নেই। তাই অতি প্রয়োজনীয় কিছু ঔষধ বাহির থেকে সংগ্রহের কথা বলা হয়েছিলো। অতিরিক্ত দাম নেবার অভিযোগ জানার সাথে সাথে বাড়তি নেয়া টাকা ফেরৎ এনে বুঝিয়ে দেয়া ও অসাধু ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়েছে।
Leave a Reply