বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:১১ অপরাহ্ন

ঠাকুরগাঁওয়ে এক জীবন সংগ্রামী নারী, বিজলী রানী সেন

মাসুদ রানা লেমন, স্টাফ রিপোর্টারঃ
  • আপডেট টাইম রবিবার, ২৩ মে, ২০২১

ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়া থানার ২০ নং রুহিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের (বেড়াবাড়ী) মন্ডলাদাম গ্রামের মৃত লাল বাবু সেনের স্ত্রী বিজলী রানী সেন ভাগ্যের সাথে সংগ্রাম করে চলছে তিন সন্তান সহ জীবন যাপন। জানা যায়, মৃত লাল বাবু সেন এক সময় ব্যবসা করে দিব্বি চলত তার সংসার। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে লাল বাবুর প্রথম স্ত্রী সুমিত্রা রানী সেন এর এক ঘাতক ক্যান্সারের চিকিৎসা করাতে জীবনের সব রোজগার বিলীন হয়ে গেল এবং দুই সন্তান রেখে পৃথিবী থেকে চলে গেল সুমিত্রা রানী সেন। আবার নতুন করে সংসার গঠনের চিন্তা করে দ্বিতীয় বিয়ে করে বিজলী রানী সেনকে। বিয়ের ১০ বছরের সংসারে তিন টি সন্তান জন্ম হয়। রামনাথ এর এম”পি মোড়ে একটি কাঁচামালের দোকান দিয়ে ভালোই চলছিল তাদের সংসার কিন্তু প্রায় ৮ মাস আগে যেন নেমে গেল কালবৈশাখী ঝর আগের স্ত্রীর মতো লাল বাবুও ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেল। এতিম হয়ে গেল তিন টা ছোট্ট ছোট্ট সন্তান, যথাক্রমে, সন্তানের নাম মনী সেন (১০), মলী সেন(৫), পাপ্পু সেন (২)। কেমন কাটছে এই ছোটো সবজির দোকান করে জানতে চাইলে, কান্না জরিত কন্ঠে বিজলী রানী সেন বলেন, আমি এক অসহায় মহিলা, আমার দুঃক্ষের সীমা নেই, তার স্বামী কখন মারা গেছে এবং কিভাবে জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, আমার স্বামীর আমি হলাম দ্বিতীয় স্ত্রী, প্রথম স্ত্রী সুমিত্রা রানী ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিল তখন স্বামীর যেটুকু সঞ্চয় ছিল সব কিছু চিকিৎসার জন্য খরচ করেছেন, তারপরও সুমিত্রা রানী মারা যান এবং আগের সংসারের দুই জন ছেলে আছে তারা কাজ কর্ম করে আলাদা ভাবে ভালোই চলছে। তিনি আরও বলেন, আমার সয় সঞ্চয় বলতে কিছুই নেই এই ছোট ছোট তিন টা বাচ্চাকে নিয়ে আমি অসহায় ভাবে এবং জীবন যুদ্বে চলছে সংসার। এবং আমার স্বামীর রেখে যাওয়া এই দোকান টি শুধু সম্বল স্বামী মারা যাওয়ার পরে আমি এনজিও থেকে লোন নিয়ে আবার এই দোকান টি চালু করি। এই দোকান দিয়ে সংসার কেমন চলে তিনি বলেন, দোকানে তো বেশি মালামাল তুলতে পারি না টাকার অভাবে তাই ৫-৬ শত টাকা বিক্রি হয় সেখান থেকে ৮০/ ১০০ শত টাকা লাভ হয় এর মাঝে সপ্তাহে কিস্তি আর বাচ্চাদের ভোরন পোষন চালা অসম্ভব হচ্ছে। তিনি প্রতিবেদকের মাধ্যমে সরকারের কাছে সাহায্যের আবেদন করছেন। পাশের দোকানদার প্রদীপ চন্দ্র বলেন, এই দোকান টি লাল বাবু করতেছিলেন কিন্তু কয়েক মাস আগে সে মারা যায়, ছোটো ছোটো তিন টা বাচ্চা নিয়ে বিজলী রানী সেন আবার চালু করে এই সবজির দোকান টি। তিনি আরও বলেন, যখন লাল বাবু মারা যায় তখন অনেক টাকা ঋণ ছিল পরে বিজলী রানী মোটামুটি পরিশোধ করেন,পরিশেষে আবার ঋণ নিয়ে আবার সবজির দোকান টি চালু করেন। তিনিও সরকারের কাছে অনুরোধ করেন যাতে বিজলী রানী সেন কিছু সরকারি আর্থিক সহায়তা পান। স্থানীয় ইউপি সদস্য গনেশ চন্দ্র বলেন, লাল বাবু মারা যাওয়ার পরে আমি তো ভাবতেই পারি নি বিজলী রানী এই ছোট্ট বাচ্চাগুলোকে নিয়ে এখানে থাকতে পারবেন, তিনি আরও বলেন, আমি শুরু একজন সদস্য হিসেবে যেটুকু পারছি তাকে একটা ভিজিএফ কার্ড করে দিয়েছি তবে তিনি সমাজের বিত্তবান মানুষ কে অসহায় বিজলী রানী সেন এর পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © Matrijagat TV
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
matv2425802581