ঠাকুরগাঁও জেলায় শিক্ষাথীর অবিভাবক কর্তৃক আবু তালহা নামের এক শিক্ষককে মারপিট ও লাঞ্ছনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে সদর উপজেলার মাদারগঞ্জ এম বি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দেয়। ১৮ জানুয়ারি শনিবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার মাদারগঞ্জ এম বি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনাটি ঘটলে অদ্য রোববার বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। এসময় বিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয় এবং ঠাকুরগাঁও-পীরগঞ্জ সড়কে অবস্থান নেয় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। ঘটনাটি জানতে পেরে ঠাকুরগাঁও সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শিক্ষককে লাঞ্ছনার বিষয়ে প্রতিষ্ঠনটির সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে ঐ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। লাঞ্ছিত ঐ শিক্ষক ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অপর দিকে মুন্না নামের একছাত্র ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। অভিযোগে জানাযায়, ১৮ জানুয়ারি শনিবার বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে ৩য় ঘন্টায় ৮ম শ্রেণীতে ইসলাম শিক্ষা ক্লাস চলাকালীন সময়ে- শিক্ষক আবু তালহা বারবার ডাকাডাকির পরও কিছু ছাত্র ক্লাসে না আসার কারনে শিক্ষক আবু তালহা তাদের থাপ্পড় মারেন। তৎক্ষনাৎ মুন্না নামের(হাসপাতালে চিকিৎসাধী) শিক্ষার্থী বাড়িতে গিয়ে বলে যে শিক্ষক আবু তালহা তার কানে থাপ্পড় মারায় কান দিয়ে রক্ত পড়েছে।
সন্তানের কাছে এ কথা শুনে মা রশিদা , বোন জিমি , চাচা নাজমুল ইসলাম সহ কিছু লোকজন টিফিন পিরিয়ডে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে শিক্ষক আবু তালহাকে চড়-থাপ্পড় ও কিল ঘুষি মারতে থাকে। বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকরা রক্ষা করতে এগিয়ে আসে এবং তাকে উদ্ধার করে। বর্তমানে শিক্ষক আবু তালহা নিজ এলাকা বালিয়াডাঙ্গীর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। লাঞ্ছনার শিকার শিক্ষক আবু তালহা মুঠো ফোনে জানান, আমি তাদের কে অনেকবার ডেকেছি ক্লাসে আসার জন্য। তারা লাফালাফি ও চিৎকার চেচামেচি করছিলো। তারা না আসায় আমি তাদের হালকা চড় দিয়েছিলাম, কিন্তু কান ফাটার মতো নয়। তিনি অনুতপ্ত হয়ে বলেন, আমার চড় মারাটা যেমন উচিৎ হয়নি,তেমনি তারাও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সামনে আমাকে এ ভাবে লাঞ্ছিত ও আহত করে ঠিক করেনি। ঠাকুরগাঁও জেলার সদর থানার পুলিশের উপ- পরিদর্শক এরশাদ জানান, আমরা ঘটনাটি জানার পরে বিদ্যালয়ে এসে শুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিয়ে শিক্ষার্থীদের শান্ত করে ক্লাসমুখী করি এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান,ঐ শিক্ষার্থীর অবিভাবকেরা আমাদের কাছে অভিযোগ করেছে , তবে শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার পরে। তারা এটা না করেই অভিযোগটি করতে পারতো। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য প্রতিষ্ঠানের সভাপতি সাদেক কুরাইশীর নির্দেশে ইতোমধ্যেই ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছি।
Leave a Reply