টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের কান্জরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী ব্যাপকভাবে পালন করা হবে। এ অনুষ্ঠানের জন্য প্রায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় চলছে। এ চাঁদা নেয়ার স্কুল শিক্ষার্থীরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
৬ষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্র জানান, বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী পালনের নামে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির কাছ থেকে ৫০ টাকা, অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৭০ টাকা করে নেয়া হয়।
নবম শ্রেণির ছাত্র মো. সাইমুন আক্ষেপ করে বলে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্ম শতবার্ষিকী পালন করা হবে, তা ভালো কথা। কিন্তু ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কেন, এমন প্রশ্ন এ কিশোর ছাত্রের।
তিনি আরও বলেন, বড় করে আয়োজন করার কথা বলে এসব টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। হঠাৎ করে দুপুরের দিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করলেই স্কুলটিও বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্য মো. সিরাজ ও আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ হোসেন শিকদার বলেন, প্রধান শিক্ষক শ্রেণি ভেদে ৫০, ৭০ ও ৮০ টাকা করে হাতিয়ে নেয়। তা সত্যি দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেন তিনি।
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় প্রসঙ্গে স্কুল পরিচালনা কমিটির অভিভাবক সদস্য ও সাত নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিনের ফেসবুক টাইমলাইনে ওই স্কুলের বিরুদ্ধে একটি স্ট্যাটাস দিলেই এতে সমালোচনার ঝড় উঠে।
হোয়াইক্যং উচ্চ বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সালমান খান বলেন, জাতির পিতার জন্ম বার্ষিকীর নামে ব্যবসা করা সমীচীন হয়নি। এ ব্যাপারে সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।
হোয়াইক্যং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুনর রশিদ শিকদার ও সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ পুরুষে জন্ম শতবার্ষিকীকে বিতর্কিত করার জন্য এমন গর্হিত কাজ মেনে নেয়া যায় না।
জানতে চাইলে কানজরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জানান, বঙ্গবন্ধু জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে কোনও টাকা পয়সা নেয়া হয়নি। বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য নেয়া হয়েছিল। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় করোনার কারণে এ অনুষ্ঠান স্থগিত হয়।
এ ব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি যদি সত্যি হয়, খুবই দুঃখজনক। খতিয়ে দেখে প্রমাণ পেলেই কঠোর হস্তে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
Leave a Reply