১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, শুক্রবার। যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার হরিদ্রাপোতা আব্দুল গফুর আদর্শ বিদ্যালয়ের, দশম শ্রেনীর ছাত্র নাইম হোসেন(১৬)কে অমানবিক ভাবে বেত্রাঘাতের অভিযোগ জানিয়েছে শিশুটির মা অঞ্জনা খাতুন। নির্মম ব্রেতাঘাতের কারনে অসুস্থ হয়ে বাগআঁচড়া নার্সিং হোম নামের ক্লিনিকে চিকিৎসা শেষে সন্ধ্যায় নিজ বাড়ি ফিরে, অসহ্য বেথা-বেদনায় কাতরাচ্ছেন ভুক্তভোগী ছাত্র। নাইম উপজেলার রাজবাড়ীয়া গ্রামের মালেশীয়া প্রবাসী সফি উদ্দিন বিশ্বাসের পুত্র।ঘটনার বর্ননায় ভুক্তভোগী ছাত্র নাইম জানান, আমি গত বুধবার সহপাঠীদের সাথে ঘুরতে যাওয়ার কারনে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকি। পরদিন বৃহষ্পতিবার স্কুলের নিয়ম অনুয়ায়ী ১০ টাকা নিয়ে অন্যান্য সহপাঠীদের সাথে, বিদ্যালয়ে উপস্থিত হলে প্রধান শিক্ষক জামাল অনুপস্থিত থাকার কারন জানতে চান। আমরা ঘুরতে যাওয়ার কথা বলার সময় হঠাৎ স্কুলের আইসিটি শিক্ষক নজরুল ইসলাম রুমে প্রবেশ করেই বেত্রাঘাত শুরু করেন। আমি রুম হতে বের হয়ে যাওয়ার সময় আমার স্কুল ড্রেসের কলার চেপে ধরে একই স্থানে কমপক্ষে ৪০টির মতো বেত্রাঘাত করাই আমার ঘাড়ের হাড় চঠে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। বেত্রাঘাতে আমি অঙ্গান হয়ে পড়লে সহপাঠীরা উদ্ধার করে, বাগঁআচড়ার ক্লিনিকে ভর্তি করেন। সেখানে আমার মা সহ আত্নীয় স্বজন পৌছে সন্ধ্যায় আমাকে বাড়ি নেন। শিক্ষার্থীর মা সাংবাদিক কর্মীদের কাছে অভিযোগ জানিয়ে বলেন, স্যাররা আমার কাছে অভিযোগ জানাতে পারতো বা আমাকে ডাকতে পারতো, তা না করেই আমার পুত্রকে বেধড়ক মারপিট করেছে।শুনেছি ওই শিক্ষক ইতি পূর্বে অন্যায় ভাবে অনেক ছাত্র কে মারধর করেছে,আমি ওই শিক্ষকের উপযুক্ত শাস্তি চাই। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটিকে জানানোর প্রশ্নে তিনি বলেন, শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় কোথাও অভিযোগ জানানোর সুযোগ পাইনী। স্থানীয় একাধিক অভিভাবকের অভিযোগের সুত্র ধরে, বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষক নজরুল আইসিটি শিক্ষক হওয়া সত্তেও বিদ্যালয়টির সকল বিষয় তদারকি করে থাকেন। শিক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকলে ১০ টাকা ফাইন গ্রহনের মত মনগড়া নিয়ম চালু করেছেন বিদ্যালয়টিকে ব্যাপক অনিয়মের আখড়ায় পরিনত করেছেন। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক নজরুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে, তিনি সাংবাদিক পরিচয়ে ফোন কেটে দেন।বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষকের মুঠো ফোন বন্ধ রাখায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নী। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জিল্লুর রশীদ এর নিকট ছাত্র পেটানোর ঘটনা জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি এ বিষয়টি অবগত নই আর শিক্ষকের নির্মম ভাবে পেটানোর এখতিয়ার নেই, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করবো। ছাত্র পেটানোর ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভ সহ আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবার সহ এলাকাটির অভিভাবক মহল বর্তমান শিক্ষা ব্যাবস্থায় মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্মম ভাবে ছাত্র পেটানোর ঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবী করেছেন সংশ্লিষ্ট মহলের কাছে।
Leave a Reply