প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণের ১৩ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও পিসিআর ল্যাব স্থাপন হয়নি দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জে। রাজশাহী বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে কম সংক্রমণের জেলা হলেও প্রতিনিয়ত বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। পিসিআর ল্যাব স্থাপন না করায় ভোগান্তিতে পড়েছেন জেলাবাসী। করোনা রোগী শনাক্ত করতে পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা এখন সময়ের দাবি। কারণ দিন দিন এ জেলায় করোনা রোগীর সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। তাই করোনার নমুনা পরীক্ষার ফলাফল দ্রুত পেতে ২৫০ শয্যার জেলা সদর হাসপাতালে একটি পিসি আর ল্যাব স্থাপনের দাবি জেলাবাসীর। জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ার সুবাদে এই জেলায় ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আগত মানুষের আগমন ঘটে। তবে সোনামসজিদ ইমিগ্রেশন দিয়ে ভারতীয় পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত বন্ধ রয়েছে গত বছরের মার্চ থেকেই। সম্প্রতি এ জেলায় করোনার নমুনা সংগ্রহের জন্য ৩টি বুথ খোলা হয়েছে। এসব নমুনা সংগ্রহ করে রাজশাহী ও ঢাকার সাভারের প্রাণিসম্পদ বিভাগের ল্যাবে পাঠানো হচ্ছে। আর এসব নমুনার ফলাফল আসতে ৭-১০ দিন সময় লেগেই যাচ্ছে। এতে করে জেলায় করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। আর খোদ স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধানও বলেছেন, করোনা পরীক্ষার আওতা বাড়ানো হলেই রোগীর সংখ্যাও বাড়বে। আর এতে পজিটিভ রোগীদের আলাদা করে চিকিৎসার সু-ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যাবে। জেলা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব মনিরুজ্জামান জানান, অনেক জেলা হাসপাতালে পিসিআর ল্যাব স্থাপন হলেও এখানে এখনো ল্যাব স্থাপন হয়নি। করোনা সংক্রমণ কমানোর জন্য পরীক্ষার কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু হাসপাতালে এসে নমুনা দিয়ে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হয় ফলাফলের জন্য এতে করে ভোগান্তির শেষ থাকেনা। তিনি আরও জানান, যার কারণে এই করোনাভাইরাস সংক্রমণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। তাই চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা পরীক্ষার ল্যাব ও আইসিইউ স্থাপন করা অতি জরুরি। মেডিকেল অফিসার ও টিম লিডার (নমুনা সংগ্রহ) ডা. আহনাফ শাহরিয়ার জানান, নমুনা সংগ্রহের বুথগুলোতে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট সঙ্কট থাকায় করোনার নমুনা সংগ্রহে সমস্যা হচ্ছে। বুথ বাড়ানোর পাশাপাশি জনবল সঙ্কট দূর করতে হবে। সিভিল সার্জেন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী মাতৃ জগত টিভি ও জাতীয় পত্রিকা মাতৃ জগত, এবং আজকের সংগ্রাম কে বলেন, পিসিআর ল্যাবের জন্য যে লোকবল প্রয়োজন, তা এ হাসপাতালে নেই। একমাত্র মেডিকেল কলেজ ছাড়া নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব নয়। জেলা সিভিল সার্জেন অফিস সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৯০০ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৮১৬ জন। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বর্তমানে জেলায় ৭০ জন করোনা আক্রান্ত রোগী রয়েছে। তাদের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে করোনা ইউনিটে চিকিৎসা নিচ্ছে ৮ জন, বাকিরা সবাই হোম কোয়ারান্টাইনে রয়েছেন। সোমবার পর্যন্ত জেলায় ১৪ জন ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের আরো ৪ টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, নাচোল গোমস্তাপুর ভোলাহাট শিবগঞ্জ প্রতি রবি ও সোমবার সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত নমুনা সংগ্রহ করবেন!
Leave a Reply