সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের গ্রামীন নারীদের কন্ঠে ভেঁসে ওঠা বিয়েরগীত হারিয়ে যেতে বসেছে আমাদের আগেকার সময়ের পুরাতন সংস্কৃতিক ধারা থেকে।আগেকার সময়ে আমাদের গ্রামবাংলার প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে ছিল আমোদ-প্রমোদের কতই না আয়োজন। যারমধ্যে অন্যতম হলো গ্রামীন বিয়েরগীত। বাড়িতে বিয়ে লাগলে দু চারদিন আগে থেকেই গ্রামীন মহিলাদের কন্ঠো বেয়ে শোনা যেত একপ্রকার সংগীত যা বিয়ের গীত নামে পরিচিত। যা দেখে আর শুনে সে সময়ের মানুষেরা আনন্দ, উল্লাসে মেতে উঠতো।মানুষে মানুষের মধ্যে ছিল নিবিড় আত্মার সম্পর্ক কিন্তু সে রকমটা এখন আর আমাদের দেশে সচরাচর দেখা যায় না।মানুষগুলো কেমন করে যেন একে অপর থেকে দূরে চলে যায়,নাই আর আগের মতো মানুষের মধ্যে ভালবাসার সেতুবন্ধন।আস্তে আস্তে মানুষ হয়ে উঠেছে হিংসাপারায়ণ।সমাজে এমনও মানুষ রয়েছে কেউ কারও চেহারাতো দেখা দূরে থাক তার ছায়াটা সহ্য করতে পারে না।এমনটা হওয়ার একটাই কারন আমরা আমাদের পূর্ব পুরুষদের রেখে যাওয়া সংস্কৃতিকে ধরে না রাখা। বর্তমান সময়ের আধুনিক ব্যবস্থাপনায় বিয়ের বাড়ি গুলোতে সাউন্ড বস্কের মিউজিকে গ্রামীন পরিবেশ জুড়ে কেমন একপ্রকার বীপরিত প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যাচ্ছে প্রতিনিয়োত।বিয়ে মানেই যেন সাউন্ড বস্ক আর আধুনিক যন্ত্রাংশ একালের মানুষদের প্রধান ইসু হয়ে দাঁড়িয়েছে এই সমাজ ব্যবস্থায়। নেই কোন রকম আমেজ আর উত্তেজনা।রংপুর অঞ্চলের নীলফামারি জেলাধীন কিশোরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুড়ে দেখা যায় এখনকার বিয়ে বাড়ি গুলোতে তেমন কোন সাঁজসজ্জা লক্ষ করা যাচ্ছেনা।নেই কোন গীতের ও সন্ধান।এবিষয়ে কিশোরগঞ্জের বড়ভিটা ইউনিয়নের বাসিন্দা মোছাঃ আমিনা বেগম(৭০) এর সাথে কথা হলে তিনি জানান,”এ্যালা না হয় করোনা হইছে করোনার আগোতও বিয়াগুলা হইল তাতো কোন গীতটিত নাই,এই যুগের বেইচ্চা(মহিলা)গুলা গীত কি জানেনা,আগোত হামরা বিয়ার বাড়িত গীত কইতে দিশা পাইছোনোনা আর এ্যালা কায়হো হামাক গীত কবার ডাকায়য়ে না”।এমন ব্যাক্ত করা কথা গুলো আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় কতটা পাশ কাটিয়ে চলছি আমরা আমাদের গ্রামীন সাংস্কৃতির বিচরন ভূমিকে। এপ্রজম্মনের অনেকেই জানে না বিয়েরগীত কি জিনিস। আধুনিকতায় হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীন এই বিয়েরগীত।
Leave a Reply