জাকির হোসেন, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
জলবায়ু ঝুঁকি বীমা প্রকল্পের আওতায় গণ উন্নয়ন কেন্দ্র (GUK) কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কুড়িগ্রাম সদর, রাজারহাট ও চিলমারী উপজেলার ১,২০০ কৃষককে মোট ১৫,৭০,২৩৪ টাকা বীমাদাবি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তরের জন্য একটি বীমাদাবি হস্তান্তর বিষয়ক অনুষ্ঠান আয়োজন করে। বীমা চলাকালীন সময়কালে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে বোরো ধানের অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে বোরো ধানের উৎপাদন খরচের ক্ষতি হওয়ায় ক্ষতিপূরণ হিসেবে এই অর্থ প্রদান করা হয়।
কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (কোইকা) এর অর্থায়নে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি), অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশ এবং গণ উন্নয়ন কেন্দ্র এই কার্যক্রমটি জলবায়ু ঝুঁকি বীমা (সিআরআই) প্রকল্প, KOICA দ্বারা অর্থায়নে বিল্ডিং রেজিলিয়েন্স টু অ্যাচিভ জিরো হাঙ্গার (BRAZH) প্রোগ্রামের আওতায় আয়োজন করা হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, মোঃ সাইদুল আরীফ তাঁর বক্তব্যে বলেছেন, “এই বীমাদারী আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করার ঘটনাটি এই এলাকার কৃষক যারা প্রতিনিয়ত জলবায়ু ঝুঁকির সম্মুখীন তাদের ক্ষমতায়নের উজ্জ্বল চিত্রস্বরূপ ও একটি উল্ল্যেখযোগ্য মাইক ফলক।” তিনি আরো বলেন, “গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার সাধারণ জনগণের আর্থিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য বীমাকে একটি কার্যকর ঝুঁকি প্রশমনের হাতিয়ার হিসেবে বিবেচনা করছে। ফলস্বরূপ, সরকার সম্প্রতি সার্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করেছে। তেমন করে যদি সারা দেশের প্রান্তিক কৃষি নির্ভর জনগোষ্ঠীকে জলবায়ু ঝুঁকি বীমার আওতায় নিয়ে আসা যায় তাহলে এই বীমা আরো বেশি কার্যকরী হবে।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচীর ক্লাইমেট রিস্ক ইন্স্যুরেন্স এবং লাইভলিহুড অ্যানালিস্ট জনাব মোঃ কামরুল হাসান বলেছেন, “এই অনুষ্ঠানটি আমাদের কার্যক্রম ও সাফল্য সম্পর্কে প্রকল্প সংশিষ্ট অংশীজনদের অবগত করা, যারা আমাদের সাফল্যে অবদান রেখেছেন তাদের কাছে আমাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও প্রাসঙ্গিক সলক অংশীজনদের মধ্যে সংযোগ গড়ে তোলার একটি সুবর্ণ সুযোগ।
অনুষ্ঠানে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ, সংশ্লিষ্ট অন্যান্য অংশীজন এবং কুড়িগ্রাম সদর, চিলমারী, রৌমারী ও রাজারহাটের কৃষক প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
২০২০ সাল থেকে ২০১৩ পর্যন্ত জলবায়ু ঝুঁকি বীমা প্রকল্পটি কুড়িগ্রাম জেলার মোট ৪,৭০০ প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষক এবং কৃষি দিনমজুরকে আবহাওয়া সূচক ভিত্তিক শস্য বীমা এবং বন্যা বীমার আওতায় মোট ৭৮,২৩,৪৬০ টাকা বীমাদাবি হিসেবে প্রদান করে।
যাত্রাপুর থেকে আসা সরবালা বলেন, আমরা চরের মানুষ নদীর কাছত থাকি আমাদের প্রায় সময় ফসল খায়া যায় আমরা একটা সমিতি করছি ওখান থাকি কিছু টাকা পাই। এই টাকা পায়া আমাদের অনেক উপকার হয়।
রাজারহাট থেকে আসা আতিকুর রহমান জানান,
আমি উঠান বৈঠকের মাধ্যমে জানতে পারি এই কৃষি বীমার কথা। গত ২ বছর থেকে আমি এই বীমার সুবিধা পেয়ে থাকি। আগে ফসলের ক্ষতি হলে হতাশা ছাড়া আর কিছুই পেতাম না তবে এখন বীমার কারনে কিছুটা হলেও ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারি।
জলবায়ু ঝুঁকি বীমা প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হল জলবায়ু পরিবর্তন হতে উদ্ভূত আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি হতে প্রান্তিক কৃষি নির্ভর জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা প্রদানের মাধ্যমে তাদের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও দুর্যোগ সহনশীলতা বৃদ্ধি ও জীবিকার মান নিশ্চিত করা।
Leave a Reply