ছবির এই ছেলেটার নাম এস আহমেদ শিমুল। ঢাকা মহানগরের সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের এমন কেউ নেই যে তাকে চিনে না। মুজিব আদর্শের এই ছেলেটা এক দশক আগে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি, মিরপুর বাংলা কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বৃহত্তর মিরপুর থানা ছাত্রলীগের দ্বায়িত্ব পালন করেছে। শিমুলের কথা বলার আগে কিছু প্রলাপ করি-
রাজনীতিতে যাঁরা নিবেদিতপ্রাণ বলে পরিচিত, দলের দুর্দিনে যাঁরা ত্যাগীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হন, আজ তাঁরাই নিপতিত হচ্ছে চরম দুর্দিনে। ক্ষমতাবান, সুবিধাভোগী আর স্বার্থবাজ নেতারা সৎ ও ত্যাগীদের দূরে ঠেলে রাখছে। দলীয় কর্মকাণ্ডেও অংশ নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না তাঁরা। এমপি-মন্ত্রীদের ঘিরে আছে নব্য সুযোগসন্ধানী চামচাদের দল। নিবেদিতপ্রাণ সাবেক ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দলে কোণঠাসা আর ভুঁইফোড় সুবিধাভোগীরা বিপুল দাপটে; অর্থ-বিত্ত ক্ষমতায় তাঁরা পরিপুষ্ট। আর ত্যাগীরা বঞ্চিত-নিপীড়িত। দলের বিভিন্ন কমিটিতে দুর্নীতি-অনিয়ম আকণ্ঠ নিমজ্জিত; তাই দেখে নিবেদিতপ্রাণ নেতারা প্রতিবাদ করতে গিয়ে হচ্ছেন নির্যাতিত। অনেকে ক্ষোভে-দুঃখে দলীয় কর্মকাণ্ড থেকে হাত গুটিয়ে নিচ্ছে। এই অবস্থায় আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন গুলোতে দলীয় রাজনীতি এখন নব্য আওয়ামী লীগারদের দখলে। তাদের দাপটে আন্দোলন-সংগ্রামের সময় রাজপথে থাকা ত্যাগী, নির্যাতিত ও কর্মীবান্ধব সাবেক ছাত্রনেতারা কোণঠাসা। ক্ষমতায় আসার পর দলের কাছে আর পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ নেই বলেই হয়তো এখন তারা উপেক্ষার পাত্র! যেসব সাবেক ছাত্রনেতারা জান প্রাণ দিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে তাদের মূল্যায়ন নেই। দল ক্ষমতায় আসার পর সবখানে বর্ণচোরা আর নব্য নেতাদের আবির্ভাব ঘটেছে। এমপি-মন্ত্রী থেকে শুরু করে অনেক নেতারা তাদের কাছে টেনে নিয়েছে। অথচ দলের দুঃসময়ে এইসব সুবিধাবাদীরা সবার আগে দেশ ছেড়ে বা এলাকা ছেড়ে পালাবে।
রাজনীতি এখন ব্যবসা হয়ে গেছে। টেন্ডারবাজির টাকা দিয়ে পদ কেনা যায়। এ জন্য দায়ী কেন্দ্র থেকে উপজেলা পর্যায়ের নেতৃত্ব। লক্ষ্য করে দেখুন, আওয়ামি লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনগুলোতে এমন কিছু নেতার আবির্ভাব হয়েছে যাদের দশ বছর আগেও চোখে পড়েনি! এরাই নাকি ত্যাগী নেতা! সাহেদ আর পাপিয়াদের মত প্রেতাত্মারা দলকে ঘিরে রেখেছে! আর এইসব প্রেতাত্মাদের একমাত্র সাবেক ছাত্রনেতারাই চিনবে। স্বার্থের আর অর্থের বিনিময়ে হুটহাট যে কাউকেই নেতা বানিয়ে দিলে তো পাপিয়া সাহেদের মত বাটপার’রা আওয়ামি লীগকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেই।
ভাবছেন এইসব প্রলাপ বকে কি লাভ? কোনো লাভ বা ক্ষতি নেই! ঘুনপোকায় শেষ করে দেবার আগে শিমুলদের মত কর্মীদের রাজপথে ফিরিয়ে আনুন। শিমুল এমনই একজন অভিমানী ছাত্রনেতা যে নের্তৃত্ব পেলে দলের জন্য, দেশের জন্য নিবেদিতপ্রাণ কর্মী হিসেবে নিজেকে উজার করে দিবে। দলের দুর্দিনে শিমুলদের মত কর্মীদের বড্ড প্রয়োজন পড়ে অথচ সুদিনে তাদের ভূলে যান? শিমুলদের মত সাবেক ছাত্রনেতাদের মূল্যায়ন করুন, না হলে মনে রাখবেন- শিমুল’রা হেরে গেলে; হেরে যাবে আওয়ামিলীগ আর আওয়ামিলীগ হেরে গেলে; হেরে যাবে বাংলাদেশ!
সরকার পল্লব
সাবেক ছাত্রনেতা
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকা কলেজ শাখা
Leave a Reply