শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:১২ অপরাহ্ন

ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা পরীক্ষায় হয়রানির শিকার ও অর্থ আদায়ের অভিযোগ।

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম বৃহস্পতিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২০

সবুজ মোল্লা বিশেষ প্রতিনিধি পাবনাঃ

করোনা ভাইরাসের সুযোগে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় দুর্নীতি সংঘটিত হলেও একেবারে মুক্ত না ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে অনুমোদনবিহীন রূপপুর মেডিকেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক আব্দুল ওহাব রানা ও ম্যানেজার রুহুল আমিন গ্রেফতার হয়েছে। কোন রকম নিয়মকানুন না মেনে কিভাবে করোনার মত গুরুত্বপূর্ণ রোগের টেস্ট করছিল তা রহস্যজনক। এর দায় থেকে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ মুক্ত থাকার সুযোগ নেই। অন্যদিকে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা টেস্ট রিপোর্ট নিতে জনপ্রতি ৭শ’ টাকা করে নেয়ার অভিযোগ আবার কারও কাছে ১ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প ও ইপিজেডে চাকুরি প্রার্থীদের বাধ্যতামূলক করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট দাখিলের নিয়ম থাকায় এখানে করোনা টেস্টের হার বেশি। অনেকে অন্য জেলা থেকেও এখানে আসেন শ্রমিক ও কর্মচারি পদে চাকুরির জন্য। এই সকল চাকুরি প্রার্থীদের করোনা টেস্ট বাধ্যতামূলক। পরীক্ষায় হাজির হওয়ার আগেই করোনা নেগেটিভ টেস্ট রিপোর্ট দাখিল করতে হয়। আবার কেউ চাকরি থেকে করোনার কারণে সাময়িক ছাটাই হয়ে ছিল তাদের আবার যোগদান করতে করোনা পজিটিভ সার্টিফিকেট নিয়ে যেতে বলা হয়। ফলে অসহায় বেকার যুবকরা ২শত’ টাকা ফি হওয়া সত্বেও কেউ ৭’শত কেউ ১হাজার টাকা দিয়ে রিপোর্ট নিতে বাধ্য হচ্ছেন। এবং অনেকের করোনা পরীক্ষা করাই হচ্ছে না। ভুক্তভোগীরা বলেন আমরা করোনা পরীক্ষার জন্য ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.আসমা খান বলেন, আরএমও ডাঃ শামীম এর কাছে যেতে সেখানে গেলে আমাদের কথাই শোনে না বলে কোন পরীক্ষায় হবে না।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসমা খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান,আমারা করোনা উপসর্গ ছাড়া বর্তমানে কারো পরীক্ষা করা সম্ভব নয়। পূর্বে আমরা পারমাণবিক এবং ইপিজেডের অনেকেই করোনা পরীক্ষা করেছি। কিন্তু কিট সংকট থাকায় আমরা কারো উপসর্গ ছাড়া অন্য কারো পরীক্ষা করতে এই মুহূর্তে পারছিনা। এবং তিনি বলেন করোনা উপসর্গ ছাড়া বগুড়া টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা করার জন্য অন্য সবাইকে যাওয়ার জন্য। আর বাড়তি অর্থ আদায়ের কথা জানতে চাইলে বলেন, তাদের কাছ থেকে ২শ’ টাকা করে ওরা নেয়। তবে ৭শ’ বা ১হাজার টাকা নয়’। এবং আমাদের অগোচরে হাসপাতালের কর্মচারী ও কর্মকর্তা যদি কেউ টাকা নিয়ে থাকে। আমার তো সব কিছু দেখা সম্ভব নয়। তবে প্রমাণ পেলে অবশ্যই যথাযথ ব্যবস্থা নিব।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সুত্রে জানা গেছে, অধিক টাকা না দিলে রিপোর্ট মেলেনা। অথচ রিপোর্ট নিতে কোন রকম অর্থ নেয়া একেবারেই বেআইনি। শুধুমাত্র টেস্টের জন্য সরকার নির্ধারিত ফি সংশ্লিষ্ট ল্যাবে গ্রহন করা হয়।
এই ব্যাপারে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডাক্তার শামীম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,
রিপোর্ট দেয়ার সময় কোন রকম টাকা নেয়া হয়না। চাকরির জন্য করোনা পরীক্ষার করার জন্য অধিক মানুষ আসার কারণে। আমরা সবাইকে পরীক্ষা করা সম্ভব হয়না। কারণ যারা এখন করোনার উপসর্গ নিয়ে আসে তাদেরকে আমরা পর্যাপ্তভাবে পরীক্ষা করতে পারছিনা কিট সংকটে। পাবনা জেলায় প্রতিদিন ৪০’টা কিট বরাদ্দ আর ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন ৪’টি কিট বরাদ্দ যা যথেষ্ট নয়। পাবনাতে তিনটি পিসি আর ল্যাব বসানোর কথা থাকলেও তা এখনও হয়নি এজন্য করোনা পরীক্ষার ব্যাঘাত ঘটছে। অন্যদিকে ভুক্তভোগীদের দাবি দালাল ধরতে পারলে, বা হাসপাতালে কারো সাথে চুক্তি করতে পারলে অর্থ দিয়ে রিপোর্ট নেয়া যায়। না হলে পুরো হাসপাতাল ঘুরেও কোন সেবা পায় না।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © Matrijagat TV
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
matv2425802581