মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৫৬ পূর্বাহ্ন

আত্মীয়-স্বজনদের সাথে গড়ে উঠুক জান্নাতি সম্পর্ক! ? Matrijagat TV

এম এ করিম ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
  • আপডেট টাইম বৃহস্পতিবার, ১৪ মে, ২০২০

হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,যে ব্যক্তি নিজের রিযিক প্রশস্ত হওয়া এবং নিজের আয়ু বৃদ্ধি পাওয়া পছন্দ করে সেজন্য আত্মীয় সম্পর্ক রক্ষা করে।

অার তাই পৃথিবীজুড়ে সকল মানবজাতির আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সুসম্পর্কের সমন্বয়ে গড়ে উঠুক জান্নাতি সম্পর্ক।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলোচ্য হাদীসে আত্মীয়তা-সম্পর্ক রক্ষার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন, কেননা মানুষের মাঝে ভালবাসা স্নেহ-মমতা দয়া ও সহযোগিতামূলক সম্পর্কই হল আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সুসম্পর্ক।

এদিকে, সম্পর্ক নষ্ট হলে সমাজ উচ্ছন্নে যাবে।শুধু তাই নয়, বর্তমান সময়ে পত্রিকার পাতায় অনলাইন ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়া সহ সমাজের দিকে তাকালে দেখা যায়, সমাজের অনেক মুসলমানের পিতা মাতার প্রতি কর্তব্যের দিক থেকে আত্মীয়-স্বজনদের অধিকার সম্পর্কে অসচেতন।

শুধু তাই নয়, আত্মীয়-স্বজনদের সাথে মিলনের সেতুবন্ধন ছিন্ন করে চলেছেন প্রায় অনেকেই।এছাড়াও আপন পিতা-মাতাকে পাঠাচ্ছেন বৃদ্ধাশ্রমে। আবার অনেক পিতামাতা ছেলেমেয়ে বেঁচে থাকার উপর ও জীবিকা নির্বাহের জন্য ভিক্ষা করে বেড়াচ্ছেন,এমন তির্যক ঘটনাগুলো ভাবনায় ফেলে দেয় সবার।

ইসলামে আত্মীয়তা-সম্পর্ক বলতে বুঝায় মা-বাবার দিক থেকে রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয় স্বজনদেরকে,সুতরাং পিতা-মাতা ভাই-বোন,চাচা,ফুফু বা খালা এবং তাদের উর্ধ্বতন নিম্নতম ব্যাক্তিবর্গ সন্তানগণ এমন সম্পর্কীয় আত্মীয় সম্পর্ক অন্তর্ভুক্ত।

এদের সাথে সুসম্পর্ক রক্ষা করা জান্নাতে প্রবেশের অন্যতম কারণ বলে হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে,এ সম্পর্কে মহান রাব্বুল আলামিন বলেন,সব রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয় আল্লাহর বিধান মতে তারা পরস্পর বেশি হকদার। সূরা আযহাবে বলা হয়েছে।

অাবার কারো মতে আত্মার সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিকে আত্মীয় বলা হয়,সাধারণত সম্পর্ক কিংবা বৈবাহিক সূত্র থেকে আত্মীয়তার সম্পর্ক সৃষ্টি হয় তা এ অনুযায়ী আলাদা আলাদা অধিকার রয়েছে একে অপরের সাথে।

এছাড়াও,পবিত্র মহাগ্রন্থ অাল কোরঅানে উল্লেখ্য অাছে যা অাত্মীয়-স্বজনদের সাথে সুসম্পর্ক রক্ষা করা ওয়াজিব,শুধু তাই নয়,অাত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা সম্পূর্ণ হারাম তা মহান রব্বুল অালামিন নিজেই বলেছেন।

মহান আল্লাহ তা’অালা বাণী তোমরা আল্লাহকে ভয় করো যার নামে একে অন্যের নিকট হতে অধিকার চেয়ে থাকো,অার আত্মীয়তার-সম্পর্ক কখনো বিনষ্ট করো না,নিশ্চিতভাবে জেনে রাখুক আল্লাহ তোমাদের উপর কড়া নজর রেখেছেন এবং আত্মীয়তা-সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।

পবিত্র মহাগ্রন্থ আল কুরআনুল কারীমে বলা হয়েছে,আত্মীয়তা সম্পর্ক অটুট রাখার ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে আল্লাহ তাআলা বলেছেন,তোমরা আল্লাহ তা’আলার এবাদত করো এবং পিতা-মাতার সাথে ভালো ব্যবহার করো যারা তোমাদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়র অাত্মীয়তা প্রতিবেশীর কাছে প্রতিবেশীর পাশে লোক পথচারী অন্তর্ভুক্ত অধিভুক্ত তাদের সাথে ভালো অবশ্যই ব্যবহার করো।

আল্লাহ তাআলা এমন মানুষকে কখনো পছন্দ করেনা যে অহংকার ও দাম্ভিকতা হয়ে চলে। হাদিসের আলোকে এসেছে জানাজায় আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করলে আল্লাহ তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেন।

আব্দুর রহমান ইবনে আওয়াপ (রাঃ)হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি,অাল্লাহ বলেন আমি রহমান আমি রাহিমকে আত্মীয়তার বন্ধনে সৃষ্টি করেছি রাহিম নামটি আমি নিজের নাম থেকে নির্গত করেছি সুতরাং যে ব্যক্তি আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে আমি তার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখব আর যে ব্যক্তি আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করে আমিও তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করব।

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,আত্মীয়তা-সম্পর্ক ছিন্নকারী কখনো জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। জুবায়ের ইবনে ইনশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেছেন,আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না বুখারী ও মুসলিম শরীফে বলা হয়েছে।

আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারীর আমল আল্লাহ তাআলা মহান রব্বুল আলামিন তার আমল নামা কবুল করেন না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন,আদম সন্তানের আমল সমূহ প্রতি বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে আল্লাহর নিকট উপস্থাপন করা হয় তখন আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারীর আমল গ্রহণ করা হয় না এ কারণে রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান দেখে সে যেন আত্মীয়তা-সম্পর্ক রক্ষা করে চলে। (বুখারী শরীফে বলা হয়েছে)

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,আত্মীয়তার-সম্পর্ক রক্ষা করা মূর্তপ্রতিক,এবং হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আনাস রাদিয়াল্লাহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন,রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনা আগমন করেন তখন আমি তার নিকটবর্তী হলাম, যখন আমি তার চেহারার ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলাম বুঝতে পারলাম যে নিঃসন্দেহে এটি কোন মিথ্যাবাদীর চেহারা হতে পারে না,তিনি প্রথমে সে কথা বলেছিলেন তাহলে ইসলামের প্রচার করো আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করো, রাতের বেলায় নামাজ আদায় করো, তাহলেই তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।

আমর ইবনে আস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন,আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি বংশধর আমার বন্ধু বা পৃষ্ঠপোষক নয় আমার বন্ধু আল্লাহ এবং নেককার মুমিনগণ তবে তাদের সাথে আমার আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে আমি তার সজীব রাখার চেষ্টা করব।(বুখারী ও মুসলিম শরীফে বলা হয়েছে)

রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম অারও বলেন,খালাতো ভাইকে অর্থনৈতিক সাহায্য করতে এবং ঘটনায় সবচেয়ে বেশি আলোচনা করেছিলেন এতে তিনি অনেক কষ্ট পেয়েছিলেন,আলোচনায় তিনি বলেন আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হকদার পিতা-মাতা কুরআন ও হাদিসের আলোকে পিতা-মাতার আনুগত্য ও সেবা অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইবাদত।

হাদিসে এসেছে, যে তোমরা তাকে ছাড়া আর কারও ইবাদত করবে না অার পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © Matrijagat TV
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
matv2425802581